Site icon The News Nest

অভিষেকের ফোনে মমতা-শুভেন্দু কথা, ২ ঘণ্টা বৈঠকের পর কি তাহলে বরফ গলছে?

suvendu 2

দলের সঙ্গে ‘দূরত্ব’ তৈরি হলেও কেউ প্রকাশ্যে কারোর বিরুদ্ধে বিষোদগার করেননি। একসময় শুভেন্দু অধিকারী তাঁর ‘বিশ্বস্ত’ সৈনিকও ছিলেন। এবার তাঁর ‘মানভঞ্জন’-এ আসরে নামলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফোনে সরাসরি কথা বললেন শুভেন্দুর সঙ্গে। তাহলে তাতেই কি শুভেন্দুর ‘অভিমান’ গলে জল হয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলল?

তা নিয়েই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা চলছে। আশাবাদী গোটা তৃণমূল শিবিরও। কারণ, যুযুধান দু’পক্ষ অভিষেক-শুভেন্দুর অবশেষে মুখোমুখি আলোচনায় বসা। এবং পাশাপাশিই অবশেষে ফোনে হলেও বেশ কয়েকমাস পর মমতা-শুভেন্দু কথা।

মঙ্গলবার রাতে উত্তর কলকাতার শ্যামবাজারের কাছে একটি বাড়িতে ওই বৈঠকে অভিষেক, শুভেন্দু ছাড়াও ছিলেন তৃণমূলের দুই সাংসদ সৌগত এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ছিলেন তৃণমূলের ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরও। অর্থাৎ, একদিকে মুখোমুখি বিবদমান দু’পক্ষ। অন্যদিকে, দুই ‘নিরপেক্ষ’ প্রবীণ নেতা। বৈঠকের পর সৌগত দবি করেন, ‘‘সমস্ত সমস্যা মিটে গিয়েছে। শুভেন্দু জানিয়েছে, ও দল ছাড়ছে না। বিধায়ক পদও ছাড়ছে না। বাকি শুভেন্দুই পরে জানাবে।’’ যদিও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত এ ব্যাপারে শুভেন্দুর কোনও বক্তব্য জানা যায়নি।

মঙ্গলবার গভীর রাত শুভেন্দুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাঁর সাড়া মেলেনি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, ‘রফাসূত্র’ মিলেছে যে পথে, সেটি হল— শুভেন্দু যে পাঁচটি জেলার পর্যবেক্ষক ছিলেন, সেগুলির প্রার্থী বাছাই নিয়ে অভিষেক বা প্রশান্ত তেমন ভাবে কোনও হস্তক্ষেপ করবেন না। প্রসঙ্গত, ওই বিষয়টি নিয়েই শুভেন্দুর সবচেয়ে আপত্তি ছিল। বৈঠকে শুভেন্দু জানিয়েছেন, তিনি বা তাঁরা একজনকে দেখেই (মমতা) দল করেন। বাকি কারও নির্দেশ বা হস্তক্ষপ তাঁর পক্ষে মানা কঠিন। সূত্রের খবর, বৈঠকের শুরুতেই অভিষেক শুভেন্দুর হাত জড়িয়ে বলেন, সকলে মিলে একসঙ্গে দল চালানো হোক। দলের ভালর জন্য নির্বাচনের আগে এখন সেটাই করা উচিত। তাঁরা সকলেই দলকে ভালবাসেন। দলের জয়টাই এখন মুখ্য।

আরও পড়ুন: গোলের একাধিক সুযোগ নষ্ট করে,মুম্বইয়ের কাছে মুখ থুবড়ে পড়ল ইস্টবেঙ্গল

তার পরেই অভিষেক তাঁর নিজের ফোন থেকে মমতার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন শুভেন্দুকে। সূত্রের খবর, মমতা শুভেন্দুকে বলেন, সামনে কঠিন নির্বাচন। এখন সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। মমতা শুভেন্দুকে আরও বলেন, আগামী ৭ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে তাঁর সভা আছে। সেই সভায় পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের সমস্ত তৃণমূল বিধায়ককে আসতে বলা হয়েছে। শুভেন্দুও যেন ওই সভায় আসেন। শুভেন্দু তার জবাবে কী বলেছেন, তা রাত পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে তিনি পরের কয়েকদিনে কী করেন এবং মেদিনীপুরে যান কি না, তার দিকে গোটা রাজ্য আগ্রহভরে তাকিয়ে থাকবে।

বৈঠকের পর গোটা ঘটনায় মধ্যস্থতাকারী সৌগত বলেছেন, ‘‘আমরা সকলেই দলকে ভালবাসি। একসঙ্গে সকলে দল করতে চাই। দু’জনকেই (অভিষেক-শুভেন্দু) আমি খবর দিয়েছিলাম। দু’জনের একসঙ্গে বসার প্রয়োজন ছিল। সেটা হওয়ায় সব মিটে গিয়েছে। বৈঠক ভাল হয়েছে।’’ শুভেন্দুর বাবা তথা তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীও বলেছেন, ‘‘সমস্যা ছিল। তবে সমস্যা মিটে গেলে ভাল। তাতে দলের ভাল হবে।’’ তৃণমূলেরই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় লাগাতার শুভেন্দুকে আক্রমণ করছিলেন। মঙ্গলবারের বৈঠকের পর কল্যাণও বলেছেন, ‘‘এর চেয়ে ভাল খবর আর কিছু হতে পারে না। আমি এই বৈঠককে স্বাগত জানাচ্ছি।’’ কল্যাণ আরও জানিয়েছেন, তিনি আর অতীতের পুনরাবৃত্তি চন না। তাঁর অতীতের মন্তব্যের ময়নাতদন্তও করতে চান না।

আরও পড়ুন: কাটলো ‘মোহ মায়া’, স্বস্তিকা জানালেন তাঁর শেষ ইচ্ছার কথা…

Exit mobile version