শুভেন্দু কি চাইছেন স্পষ্ট হচ্ছে না এখনও। ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সোমবার পূর্ব কলকাতার উপকণ্ঠে তাঁর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন দলের এক বর্ষীয়ান সাংসদ। তারও কয়েক সপ্তাহ আগে দলের এক মন্ত্রী এবং এক প্রাক্তন সাংসদের সঙ্গেও তাঁর বৈঠক হয়েছিল বলে খবর। যদিও কোনও বৈঠক নিয়েই আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও পক্ষ মুখ খোলেনি।
রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন,’উনি পরিষ্কার করে বলুন, কী করবেন। তা হলেই মিটে যায়। সবাই উদ্বেগে রাখা, এটাই রাজনীতি।’দলের এক শীর্ষ নেতা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে, শুভেন্দু এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। ফলে আলোচনার রাস্তা এখনও খোলা আছে।’’ তবে পাশাপাশিই ওই নেতার মন্তব্য, ‘‘শুভেন্দু তো আবার সকলের সঙ্গে কথা বলতে চায় না। ফলে আমাদেরও অনেক ভাবনাচিন্তা করে এগোতে হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন : ‘সন্ত্রাসবাদ সমর্থক রাষ্ট্রগুলিকে সমঝে দেওয়া প্রয়োজন’, ব্রিকসের মঞ্চে বার্তা মোদির
গত কয়েক মাসে শুভেন্দুর সঙ্গে দলের দূরত্ব অনেকটাই বেড়েছে। পুজোর আগে-পরে বিভিন্ন ‘অরাজনৈতিক’ সম্মেলনে শুভেন্দুর নানা মন্তব্য সেই দূরত্ব আরও বাড়িয়েছে। যা আরও ঘোরালো হয়েছে গত ১০ নভেম্বর। ওই দিন ‘নন্দীগ্রাম দিবস’-এ শুভেন্দু ‘ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি’র ব্যানারে যখন আলাদা সভা করেন, তখন একই দিনে নন্দীগ্রামেই আলাদা সভা করে তৃণমূল।
সেই সভা থেকে শুভেন্দুর নাম করেই তাঁকে আক্রমণ করেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। আর নাম না করে শুভেন্দুর সমালোচনা করেছিলেন রাজ্যের অপর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তার পাল্টা আবার মুখ খুলেছিলেন দলের সাংসদ তথা শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ক্রমশই আরও ঘোরালো হচ্ছিল।
কাঁথির অধিকারী বাড়িতে গিয়েছিলেন ভোট-কৌশলী প্রশান্ত কিশোর। তাঁর একপ্রস্ত আলোচনা হয় শুভেন্দুর বাবা তথা দলের বর্ষীয়ান নেতা-সাংসদ শিশির অধিকারীর সঙ্গে। সূত্রের খবর, প্রশান্ত কথা বলতে চেয়েছিলেন শুভেন্দুর সঙ্গে। কিন্তু তিনি তখন বাড়িতে ছিলেন না। কথা না-হলেও প্রশান্তের ওই সফর মারফত শুভেন্দুর কাছে ‘ইতিবাচক সঙ্কেত’ পাঠানো হয়েছিল বলেই তৃণমূল সূত্রের দাবি।
ওই ঘটনার পর আবার প্রকাশ্যে শুভেন্দুকে রাজনৈতিক আক্রমণ করেন দলের প্রথম সারির সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। পর পর দু’টি সভায় তিনি শুভেন্দুর ‘বডি ল্যাঙ্গোয়েজ’ নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন। তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয় বলেই শুভেন্দু-অনুগামীদের বক্তব্য।
তবে শুভেন্দু নিজে তাঁর অবস্থান এখনও স্পষ্ট করেননি। যদিও তিনি ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছিলেন, কালীপুজোর পর তিনি তাঁর ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঘোষণা করতে পারেন। ফলে রাজ্য রাজনীতিতে তা নিয়ে বিস্তর জল্পনা তৈরি হয়েছে। বস্তুত, আপাতত রাজ্যের রাজনীতিতে একটিই কৌতূহল— শুভেন্দু কি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন:লকডাউনে ৪২ লিটার বুকের দুধ দান করেছেন এই মহিলা, কিন্তু কেন এমনটা করলেন ?