সামনে এল বিজেপি নেতা মণীশ হত্যাকাণ্ডের ফুটেজ, গ্রেফতার ২

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

বিজেপি নেতা মণীশ শুক্ল খুনের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হল। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম মহম্মদ খুররম এবং গুলাব শেখ। পুলিশের দাবি, পুরনো শত্রুতার জেরে খুররমই খুনের ছক কষে। পেশায় ব্যবসায়ী খুররম যোগাযোগ করে পেশাদার শুটার গুলাব শেখের সঙ্গে ।

তদন্তে জানা গিয়েছে, মণীশ-খুররমের পুরনো ব্যক্তিগত শত্রুতা ব্যারাকপুর এলাকায় অনেক দিন ধরেই চর্চিত। খুররমের বাবা সিপিএম করতেন। তিনিও খুন হন। সেই হত্যাকাণ্ডে উঠে এসেছিল মণীশের নাম। গোয়েন্দাদের দাবি, আক্রোশ মেটাতেই খুন করা হয়েছে মণীশকে। সোমবার দুপুরেই রাজ্য পুলিশ জানিয়েছিল, এই ঘটনায় একজন আততায়ীকে শনাক্ত করা গিয়েছে। আটক করা হয়েছে দু’জনকে। পাশাপাশি, তাদের টুইটে ইঙ্গিত ছিল, মণীশ-হত্যায় রাজনীতি নয়, দায়ী পুরনো শত্রুতা। তবে পুলিশের এই তত্ত্ব মানতে নারাজ বিজেপি নেতারা।

তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ এবং পারিপার্শ্বিক তথ্য বিশ্লেষণ করে দু’টি বাইককে চিহ্নিত এবং একজন আততায়ীকে শনাক্ত করা গিয়েছিল। পরে ফুটেজের সূত্র ধরেই খোঁজ পাওয়া যায় খুররমের।

রবিবার রাতে টিটাগড়ে মণীশকে কার্যত ঝাঁঝরা করে দেয় এক ডজনের বেশি বুলেট। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে ইঙ্গিত ১৪টি বুলেটের ক্ষত পাওয়া গিয়েছে তাঁর শরীরে। দেহে আটকে থাকা ‘বুলেট হেড’ দেখে তদন্তকারীদের সন্দেহ ৭এমএম পিস্তল থেকে গুলি করা হয়েছে। খুনের তদন্ত ভার সোমবার দুপুরেই দেওয়া হয় রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডিকে। সোমবার সিআইডি-র ডিআইজি প্রণব কুমার ঘটনাস্থলে যান। সিআইডি আধিকারিকরা ঘটনাস্থলের ভিডিয়োগ্রাফি করার পাশাপাশি ওই এলাকার বিভিন্ন সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখেন।

আরও পড়ুন: “পুরোপুরি শাস্তি পাবে হাথরসের ধর্ষিতার পরিবার”, দিলীপের পর বেফাঁস লকেট

একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। ওই ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ঘটনাস্থলে চায়ের দোকানের সামনে সঙ্গীদের নিয়ে দাঁড়িয়ে মণীশ। পাশেই তাঁর স্করপিও গাড়ি বিটি রোডের ওপর দাঁড় করানো । গাড়ির বাঁ দিকের সামনের দরজা খোলা। বাঁ দিকের ইন্ডিকেটর জ্বলছে। গাড়ির দিকে পেছন করে দাড়িয়ে মণীশ। ঠিক সেই সময়ে মণীশ এর গাড়ি পেরিয়ে তাঁর মুখোমুখি চলে আসে একটা মোটর বাইক। বাইকে দুজন। বাইকের পিছনে বসা যুবক মণীশ এবং তাঁর সঙ্গীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তাতে হতচকিত হয়ে যান মনীশের সঙ্গীরা। ততক্ষণে গাড়ির দরজার আড়ালে মাটিতে পড়ে গিয়েছেন মণীশ। আতঙ্কে চারদিকে ছোটাছুটি করছেন সবাই।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ঠিক সেই সময় চায়ের দোকানের পাশ থেকে প্রায় মাটি ফুঁড়ে হাজির হয় এক যুবক। মাটিতে পড়ে থাকা মণীশকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি চালাতে থাকে সে। তারপরই ওই আততায়ী গাড়ির অন্যপ্রান্তে অর্থাৎ বিটি রোডের দিকে চলে যায়। পেছন থেকে একটি বাইক আসে এবং সেই বাইকে চড়ে বসে আততায়ী। তারপর প্রথমে আসা বাইকটি এবং এই দ্বিতীয় বাইকে মোট চারজন শূন্যে গুলি চালাতে চালাতে পালিয়ে যায় ডানলপের দিকে।
সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে সিআইডির তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন আততায়ী মঞ্চের পাশেই চায়ের দোকানের সামনে ছিল। প্রথম দলটি এসে গুলি চালিয়ে মণীশ এবং তার সঙ্গীদের হতভম্ব করে দেওয়া মাত্রই মূল কাজটা সারে ওই আততায়ী।তদন্তকারীদের সূত্রেই প্রকাশ্যে এসেছে বেশ কয়েকটি তথ্য, যা কাকতালীয় ভাবেই জুড়ে যাচ্ছে মণীশ-খুনের তদন্তের সঙ্গে। মণীশের দেহরক্ষী কেন ঘটনার দিন ছুটিতে গেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মণীশ ঘনিষ্ঠেরা জানিয়েছেন, দেহরক্ষী না থাকলে আগে মণীশ নিজের লাইসেন্সড পিস্তল সঙ্গে রাখতেন। রবিবার সেটাও ছিল না। মণীশের সঙ্গীদের দাবি, ছ’মাস আগে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পক্ষ থেকে পিস্তলের লাইসেন্স যাচাই করতে নেওয়া হয়। ওই লাইসেন্সটি ভিন্‌ রাজ্য থেকে ইস্যু করা। পুলিশ লাইসেন্সের বৈধতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে এবং যত দিন যাচাই না হচ্ছে তত দিন তাঁর পিস্তল পুলিশের কাছে জমা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

তদন্তকারীদের দাবি, এ সমস্ত তথ্যই ছিল আততায়ীদের কাছে। এটাও তারা আগে থেকে জানত যে, মণীশ রবিবার টিটাগড়ে যাবেন। তাই তাঁদের সন্দেহ গোটা পরিকল্পনায় এমন কেউ যুক্ত আছে যে মণীশের গতিবিধি জানত।

এর আগে চার বার হামলা হয়েছে তাঁর উপর। প্রতিবারই কোনও না কোনওভাবে বেঁচে যান পোড়খাওয়া মণীশ। কিন্তু এ বার আর শেষরক্ষা হল না। বিজেপিতে যোগদানের আগে অতীতে সিপিএম এবং তৃণমূল, দুই দলের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন মণীশ। পরিচিত ছিলেন ব্যারাকপুরের ‘ত্রাস’ হিসেবে।

আরও পড়ুন: তিন লক্ষ দেশলাই কাঠি দিয়ে তাজমহল বানিয়ে চমক বাংলার মেয়ের, গিনেস বুকে উঠতে পারে নাম

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest