কৃষি আইনের বিরুদ্ধে রাজ্যের রেজোলিউশন, ভিক্টোরিয়ায় ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনির নিন্দা প্রস্তাব, তুলকালাম বিধানসভায়

ইতিমধ্যে দেশের ৫ রাজ্য কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরোধিতায় প্রস্তাব এনেছে সংশ্লিষ্ঠ বিধানসভায়। রাজ্যগুলি হল পঞ্জাব, ছত্তিশগড়, রাজস্থান, কেরল ও দিল্লি।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

রাজ্য সরকারের কৃষি আইন বিরোধী প্রস্তাব ঘিরে বৃহস্পতিবার উত্তাল হয়ে উঠল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি–তে যাওয়া বিধায়করাও বিক্ষোভ দেখান। এই প্রস্তাবের প্রতিবাদে এদিন বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করে বেরিয়ে যান বিজেপি বিধায়করা। বেরনোর সময় তাঁরা প্রতিবাদে ‘‌জয় শ্রী রাম’‌ স্লোগানও দেন।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন বিধানসভায় বলেন, কৃষকদের পাশে আমরা আছি। আমরা মনে করি, কেন্দ্র যে বিল এনেছে তাতে কৃষকদের স্বার্থহানি হবে। কৃষি বিলের বিরোধিতা করতে হবে। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, কৃষকরা যে আন্দোলন করছে তা অন্যায়ভাবে দমন করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন সমস্ত বিরোধীদলের কাছে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানান। তাঁর কথায়, নীতিগতভাবে বিরোধ থাকতে পারে কিন্তু এই মুহূর্তে সকলে মিলে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।

একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এদিন অভিযোগ করে বলেন, ‘‌এই আইন জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি বলছে, এই কৃষকরা দেশদ্রোহী। জোর করে এদের গায়ে দেশদ্রোহী তকমা লাগানো হচ্ছে। কৃষি আইন কৃষকদের বিরোধী। এই আইন অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।’‌ এদিকে, ভাষণ রাখার সময় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অশালীন কথা বলার অভিযোগ এনেছেন বিক্ষোভকারী বিজেপি বিধায়করা। তাঁদের অভিযোগ, ‘‌এখনও পর্যন্ত তুই–তাকারি করে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকারের আইনের এমনভাবে বিরোধিতা করা যায় না। এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার পরিপন্থী। আমরা এর ধিক্কার জানাচ্ছি।’‌

উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে দেশের ৫ রাজ্য কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরোধিতায় প্রস্তাব এনেছে সংশ্লিষ্ঠ বিধানসভায়। রাজ্যগুলি হল পঞ্জাব, ছত্তিশগড়, রাজস্থান, কেরল ও দিল্লি। কিছুদিন আগেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয় তারাও বিধানসভায় এই ‘‌বিতর্কিত’‌ আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনবে।

আরও পড়ুন: মমতা কী সরকারি অনুষ্ঠানে ইসলামী প্রার্থনা করেছিলেন? জেনে নিন আসল সত্য

অন্যদিকে, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজি জয়ন্তী পালনের অনুষ্ঠানে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান-কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্য সরকারের নিন্দাপ্রস্তাব ঘিরেও হয় অশান্তি। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ‘অবস্থান’ সম্পর্কে বিরোধী বাম-কংগ্রেস জোটের নীতিগত আপত্তি না থাকলেও, তাল কাটে পরিষদীয় মন্ত্রী তাপস রায়ের একটি মন্তব্যে।

ভিক্টোরিয়ার ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সরকার পক্ষ বিধানসভায়‘পয়েন্ট অব ইনফরমেশন’ আনে।পরিষদীয় মন্ত্রী সেই প্রস্তাব উত্থাপন করার সময় বিরোধী বেঞ্চ থেকে রাজ্য সরকারের ‘অবস্থান’নিয়ে মন্তব্য উড়ে আসে। বিরোধী বিধায়কেরা অভিযোগ করেন, ‘বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানকে দলীয় অনুষ্ঠানে পরিণত করে। তা নিন্দনীয়। কিন্তু রাজ্য সরকারও প্রায়ই এমন কাজ করে থাকে’।

বিরোধীদের এই মন্তব্যের জবাবে তাপস বলেন, ‘‘আপনারা নির্লজ্জ বেহায়ার মত আচরণ করছেন।’’ তাঁর এই মন্তব্যের পরেই অশান্তি ছড়ায় সভায়। ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিরোধীরা। বাম বিধায়ক দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসনেরসামনে গিয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। অসিত মিত্রের নেতৃত্বে কংগ্রেস বিধায়কেরা ওয়েলে নেমে স্লোগান শুরু করেন। পরিস্থিতি থেকে ‘সক্রিয়’ হন মার্শাল।

এরপর বিরোধীদের শান্ত হওয়ার আবেদন জানিয়ে স্পিকার বলেন, ‘‘সভার কার্যবিবরণী থেকে শব্দ দু’টি (নির্লজ্জ এবং বেহায়া) বাদ দিতে বলছি। আপনারা চুপ করুন।’’পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভিক্টোরিয়ার ঘটনা নিন্দনীয়। স্পিকারের কাছে আমরাও শব্দ দু’টি বাদ দিতে অনুরোধ জানাচ্ছি।’’

অধিবেশন কক্ষের বাইরে বিধায়ক অসিত বলেন, ‘‘২৩ তারিখে ভিক্টোরিয়ার ঘটনা নিয়ে আচমকা প্রস্তাব কেন আনা হল? বিজনেস অ্যাডভাইসরি কমিটির বৈঠকে তৈরি হওয়া আলোচ্যসূচিতে এ প্রস্তাবের উল্লেখ ছিল না। প্রতিটি বিষয় উত্থাপনের নির্দিষ্ট বিধি রয়েছে। কিন্তুএক্ষেত্রে পরিষদীয় বিধি মানেনি শাসকদল।’’ রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়াই বিধানসভার অধিবেশন শুরুর ঘটনায় পরিষদীয় প্রথা লঙ্ঘন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আরও পড়ুন: করোনাকালেও ধারাবাহিক পরিষেবা, মমতা সরকারের প্রশংসায় UNICEF ও বিশ্বব্যাঙ্ক

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest