উত্তররাখণ্ড বিপর্যয়ে এখনো পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের ৩ জনের নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের ৩ যুবক তপোবন বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজে কর্মরত বলে জানা গিয়েছে। রবিবার সকাল থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি পরিবার। ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে এলাকায়।
উত্তরাখণ্ডের নির্মীয়মাণ ওই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে ‘ওম মেটাল’ নামে একটি সংস্থার ঠিকাদার হিসাবে কাজ করেন মহিষাদলের লক্ষ্যা গ্রামের বাসিন্দা লালু জানা। ভাই বুলুকেও সেই কাজে নিয়েছিলেন তিনি। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন মহিষাদলেরই চক দ্বারিবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সুদীপ গুড়িয়া। নিখোঁজ সুদীপের দাদা বৈদ্যনাথ গুড়িয়া বললেন, ‘‘সুদীপ প্রায় ২ বছর ধরে ওই বিদ্যুৎপ্রকল্পে কাজ করছে। শেষ বার ও বাড়ি এসেছিল গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। লকডাউন শুরু হওয়ার ২ দিন আগে তারা কাজে যোগ দিয়েছিল। এক বছর বাদে, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি তার বাড়ি ফেরার কথা ছিল। শনিবার রাতেও ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। সেই শেষ বারের মতো কথা হয়েছিল দু’জনের। তার পর, রবিবার আচমকা এমন বিপত্তি।’’
আরও পড়ুন: বন সহায়ক নিয়ে কারসাজি, চুরি করে বিজেপিতে গিয়েছে: নাম না করে রাজীবকে বিঁধলেন মমতা
বিপর্যয়ের খবর জানতে পারার পর থেকেই চরম উদ্বেগে নিখোঁজ ওই ৩ যুবকের পরিবারের সদস্যরা। আতঙ্কের প্রহর যেন কিছুতেই কাটছে না। মুখে একরাশ উদ্বেগের ছাপ নিয়েই বৈদ্যনাথ বললেন, ‘‘টিভিতে ভয়াবহ বিপর্যয়ের খবর পেয়েই ভাইয়ের মোবাইলে ফোন করেছিলাম। কিন্তু ফোন বন্ধ ছিল। তার পর আমিও পাগলের মতো একে একে ঠিকাদার এবং অন্যান্যদের মোবাইলে ফোন করতে থাকি। যদি কাউকে পাই। এক জন ফোন ধরেন। কিন্তু আমার আশঙ্কাই শেষ পর্যন্ত সত্যি হল। যিনি ফোন ধরেছিলেন তিনি বললেন, দুর্ঘটনার সময় ৩ জনই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে কাজ করছিল।’’
এলাকার নিখোঁজ যুবকদের সন্ধানে তদারকি চালাচ্ছেন চক দ্বারিবেড়িয়া গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন দাস। তিনি বললেন, ‘‘ওঁরা নিখোঁজ থাকায় তিনটি পরিবারই চরম উদ্বেগে রয়েছে। প্রশাসনের মাধ্যমে ওঁদের দ্রুত খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছি।’’
ওদিকে সোমবার পর্যন্ত ঋষিগঙ্গা নদী থেকে ১৯টি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো ২ জন মানুষ নিখোঁজ বলে দাবি স্থানীয়দের। বরফের সঙ্গে ভেসে আসা কাদামাটির নীচে দেহগুলি চাপা পড়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন উদ্ধারকারীরা।
আরও পড়ুন: আমিই ফিরবো, শেষ দিনে বিধানসভা ছাড়ার আগে আত্মপ্রত্যয়ী মমতা