‘বাড়াবাড়ি করলে জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে’, প্রকাশ্যে হুমকি দিলীপ ঘোষের

অমিত শাহের নির্দেশেই এই ‘গণহত্যা’ বলে দাবি করেছেন মমতা। এই পরিস্থিতিতেই বিস্ফোরক দিলীপ।  
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে। ভোট–চতুর্থীর এই ঘটনা নিয়ে উত্তাল গোটা রাজ্য। তোলপাড় হয়ে গিয়েছে রাজ্য–রাজনীতি। এমনকী এই ঘটনাকে গণহত্যা বলে বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ রাজ্যজুড়ে কালা দিবস পালিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে বেনজির হুমকি দিয়ে বসলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রবিবার বরাহনগরে দলীয় প্রার্থী পার্নো মিত্রের সমর্থনে জনসভা থেকে দিলীপ ঘোষ হুমকির সুরে বলেন, ‘‌বাড়াবাড়ি করলে জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে।’‌ আর তাতেই পরিষ্কার হয়ে গেল এই হত্যার পেছনে বিজেপির হাত রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

শনিবার ভোট দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী এলোপাথারি গুলিতে রক্তাক্ত হন বহু তৃণমূল কর্মী। আহতদের তড়িঘড়ি উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা চার যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করে। মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। বিকেলেই শিলিগুড়ি পৌঁছে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পরিস্থিতি বিবেচনা করে কোচবিহার জেলায় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে নির্বাচন কমিশন (Electioon Commission)। ফলে বাধ্য হয়ে রবিবার ভিডিও কলে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূল নেত্রী। এই ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছে সব মহল। বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। অমিত শাহের নির্দেশেই এই ‘গণহত্যা’ বলে দাবি করেছেন মমতা। এই পরিস্থিতিতেই বিস্ফোরক দিলীপ।

রবিবার বরাহনগরের সভা থেকে হুমকির সুরে দিলীপ ঘোষ বললেন, “সকলে ভোট দিতে যাবেন। কেউ যদি বাধা দেয়, কোনও কথা শুনবেন না। আমরা সব দেখে নেব। মাথায় রাখবেন কেউ বাড়াবাড়ি করলে জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে।”

আরও পড়ুন: ‘বিজেপি হারছে বলে গুলি করে মানুষ মারাচ্ছে’, মাথাভাঙ্গা কাণ্ডে রুদ্রমূর্তি মমতা

রবিবার দলীয় প্রার্থী পার্নো মিত্রর সমর্থনে বরাহনগরের জনসভায় দিলীপ আরও বলেন, ‘‘তৃণমূলের আমলে মা-বোনেরা বাড়ি থেকে বেরোতে পারেন না। মেয়েরা টিউশন গেলে চিন্তায় থাকে পরিবার। বাজারে গেলে মা-বোনেদের আঁচল ধরে, হাত ধরে টানা হয়। অভিযোগ করলে দিদি বলেন দুষ্টু ছেলে। এত দুষ্টু ছেলে এল কোথা থেকে? ওই দুষ্টু ছেলেরাই কাল কোচবিহারের শীতলকুচিতে গুলি খেয়েছে। এই দুষ্টু ছেলেরা বাংলায় থাকবে না। সবে শুরু হয়েছে। যারা ভেবেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী বন্দুকটা দেখোনার জন্য নিয়ে এসেছে, তারা বুঝে গিয়েছে ওই গুলির গরম কেমন। সারা বাংলায় এটা হবে।’’

শীতলকুচির ঘটনার পরই মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল তৃণমূল নেত্রীর। কিন্তু ৭২ ঘণ্টার জন্য সেখানে রাজনীতিকদের প্রবেশ নিষেধ করেছে কমিশন। যে কারণে রবিবার শিলিগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন ভিডিয়ো কলে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন মমতা। তা নিয়েও মমতাকে আক্রমণ করেন দিলীপ। তাঁর কথায়, ‘‘সারাজীবন লাশের রাজনীতি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কোচবিহারে লাশ তুলতে যেতে চেয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, রাস্তায় লাশ ফেলে বসবেন। বলবেন, ‘দেখুন, আমার লোকেদের মেরেছে। ভোট দিন।’ কিন্তু কমিশন ঠিক করেছে, ওই উপদ্রুত এলাকায় কোনও নেতা-নেত্রীকে ঢুকতে দেওয়া হবে না, যাতে কেউ আগুন জ্বালাতে না পারেন। তাই খুব কষ্ট হচ্ছে। শিলিগুড়িতে গিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করছেন। উনি বুঝতে পেরেছেন, মানুষ ভোট দেবেন না।’’

দিলীপের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘‘শীতলকুচি একটা কলঙ্কজনক ঘটনা। বিজেপি-র চিত্রনাট্য মেনেই গোটাটা ঘটেছে। পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন চোখ কান বুজে আছে। আমার মনে করি দিলীপ ঘোষেই মন্তব্য আসলে গণহত্যার প্ররোচনা। অবলম্বে পদক্ষেপ করা উচিত কমিশনের।’’ এই প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষের কথার প্রতিক্রিয়া দেওয়া যায় না। ওঁরা বিভাজনের কৌশল নিয়েছে। তাই এ ধরনের কথা বলছেন। মানুষের নজর ঘোরাতে চাইছেন।’’

আরও পড়ুন: ‘‌মডেল কোড অব কনডাক্ট নয়, আসলে মোদী কোড অফ কন্ডাক্ট ’‌, বিস্ফোরক টুইট মমতার

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest