প্রথম দফার ভোটপর্বের শুরুতেই সামনে এসেছিল ‘বিতর্কিত’ প্রথম অডিয়ো টেপ। ৩০ আসনে ভোটগ্রহণ শেষের কিছুক্ষণ আগে সামনে এল দ্বিতীয়টি। ঘটনাচক্রে দু’টি টেপই ফোনে বাক্যালাপের। প্রথমটি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা প্রলয় পালের। দ্বিতীয়টি দুই বিজেপি নেতার, মুকুল রায় এবং শিশির বাজোরিয়ার। কোনও অডিয়ো টেপের সত্যতাই The News Nest যাচাই করেনি।
ওই অডিও টেপে বিজেপি নেতা শিশির বাজোরিয়ার উদ্দেশে মুকুলকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘নির্বাচন কমিশন কবে আসছে?’ উত্তরে শিশির জানান, ‘২১ তারিখ’। এরপরই মুকুল বলেন, ‘বুথের পোলিং এজেন্ট হওয়ার জন্য কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম রাখলে চলবে না। পশ্চিমবঙ্গের যে কোনও ভোটার এজেন্ট হতে পারবেন। আমাদের এটা বলতে হবে।” ওই অডিওতে মুকুল বলেন, নাহলে পশ্চিমবঙ্গের যত বুথ আছে সেখানে এজেন্ট দেওয়া যাবে না। মুকুলকে আরও বলতে শোনা গিয়েছে, “যে স্লিপগুলো বিলি হচ্ছে না, সেগুলো অবজার্ভারের কাছে ফেরত দিতে হবে। এই দুটো পয়েন্ট করে রাখো।’ আবেদনের ভিত্তিতেই যে তা নিশ্চিত করা যাবে সে বিষয়টি শিশিরকে ব্যাখ্যা করে মুকুল বলেছেন, ‘‘এটা তো অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ (প্রশাসনিক) অর্ডারে হয়। এর জন্য কোনও লিখিত আইন নেই। এটা বলতে হবে এবং মুখে ‘এক্সপ্লেন’ (ব্যাখ্যা) করতে হবে, কেন এটা চাইছি।’’
এই অডিও প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্যনেতা শিশির বাজোরিয়া বলেন, “আমরা কমিশনকে এ বিষয়ে ৩৬ পয়েন্টে একটা চিঠি দিয়েছিলাম। তাতে বুথ এজেন্ট প্রসঙ্গও ছিল। গণমাধ্যমেও বিষয়টি জানিয়েছিলাম।” এর পরই তাঁর প্রশ্ন, “এই অডিওটি তৃণমূলের হাতে কীভাবে গেল? তাহলে কী রাজ্যের গোয়েন্দারা আমাদের ফোন ট্যাপ করছে, আর সেই তথ্য তৃণমূলের হাতে তুলে দিচ্ছে?
উল্লেখ্য, এতদিন নিয়ম ছিল, যে কোনও রাজনৈতিক দলের পোলিং এজেন্ট (Polling agent) হতে গেলে ওই বুথ এলাকা কিংবা পাশের বুথের বাসিন্দা হতে হয়। তবে এবার সেই নিয়মে কিছুটা রদবদল এনেছে নির্বাচন কমিশন। নয়া নিয়ম অনুযায়ী, এবার থেকে পোলিং এজেন্ট হতে গেলে কোনও নির্দিষ্ট বুথের নয়, ওই বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দা হলেই হবে। কোনও বুথে কোনও রাজনৈতিক দলের সংগঠন দুর্বল হলেও যাতে সবাই সব বুথে পোলিং এজেন্ট দিতে পারে, তা নিশ্চিত করা। শনিবার, বঙ্গের ভোট শুরুর দিন থেকে তাই সেই নিয়ম অনুযায়ী, বিভিন্ন বুথে দূরবর্তী কোনও বুথের পোলিং এজেন্ট বসছেন। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে তিনি ‘বহিরাগত’ বলে প্রতিপন্ন হচ্ছেন। তৃণমূলের অভিযোগে, বিজেপি কমিশনকে নিয়ম বদলাতে প্রভাববিত করেছে।
আরও পড়ুন: WB election 2021: আগামীকাল রাজ্যে প্রথম দফার নির্বাচন, এই ৮ আসনে জমজমাট লড়াই
আবার ফোন কাণ্ড! সামনে এল বিস্ফোরক কথোপকথনের অংশ। নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ। কাঠগড়ায় Mukul Roy ও Shishir Bajoria
Facebook:https://t.co/724J2Wsmgt
Twitter:https://t.co/dKNunJx4LA
— Trinamool Congress (Abar TMC) (@abarTMC) March 27, 2021
সাংবাদিক সম্মেলনে কুণাল মনে করিয়ে দিয়েছেন, যে নির্বাচন কমিশন কার্যত সর্বদল বৈঠকে কোনও কিছু না জানিয়ে এখন হুট করে বিধি বদলের কথা জানিয়েছে। কমিশন জানায়, এলাকার বাসিন্দা না হলেও যে কেউ নিজের বিধানসবা কেন্দ্রের যেকোনও বুথে যে কোনও রাজনৈতিক দলের এজেন্ট হতে পারবে।
অর্থাৎ কমিশন বিজেপির কথামতো তাদের সুবিধা পাইয়ে দিতে বুথের এজেন্ট হওয়ার নিয়মে রাতারাতি পরিবর্তন ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছেন কুণাল ঘোষ। যা কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললো।
কমিশন-বিজেপি আঁতাঁত নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেত্রী। এদিন মুকুল রায়ের গোপন অডিও ফাঁস করে নেত্রীর সেই অভিযোগই পোক্ত করার চেষ্টা হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।