‘আমি গাধা তাই ওঁদের অন্ধ ভাবে বিশ্বাস করেছি’, মমতার নিশানায় দলবদলু অধিকারী পরিবার

মমতা বলেন, 'এখন তো শুনছি সম্পত্তি নাকি ৫০০০ কোটি টাকার। এত টাকা কোথা থেকে এল?'
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

বিশ্বাস করে ঠকেছেন। ‘বিশ্বাসঘাতক’দের উদ্দেশে তাই ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এ বার আর সরাসরি আক্রমণ নয়। কিছুটা গান্ধীবাদী হয়ে নিজেকেই দুষলেন মমতা। বললেন, চূড়ান্ত বোকামি করেছেন। কাঁথিতে, অধিকারীদের খাসতালুকে দাঁড়িয়ে তাঁদের বিশ্বাস করার জন্য নিজেকেই ‘গাধা’ বললেন মমতা।

রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরে ম্যারাথন জনসভা করেন মমতা। প্রথমে দক্ষিণ কাঁথি। তারপর উত্তর কাঁথি হয়ে নন্দকুমারে ছিল শেষ সভা। দক্ষিণ কাঁথিতে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই বিজেপি এবং সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শিশির ও শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করছিলেন মমতা। তবে দ্বিতীয় সভায় একটু বেশিই অসন্তুষ্ট মনে হল তাঁকে। নাম না করে অধিকারীদের ইঙ্গিত করে মমতা বললেন, ‘‘মেদিনীপুরে আমি কাজ করেছি আর ওরা নাম কিনেছে। আমিই গাধা। যে সহজ সরল মনে অন্ধ ভাবে ওদের বিশ্বাস করেছি।’’

কয়েক ঘণ্টা আগেই বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন কাঁথির অধিকারী পরিবারের বড়কর্তা, এক সময়ের মমতা-ঘনিষ্ঠ শিশির অধিকারী। অমিত শাহের সভায় যাওয়ার আগে তিনি বলেছেন, ‘‘আর মান-অভিমানের ব্যাপার নেই। উনি আমাদের নিত্যদিন যা নয় তাই বলছেন। গদ্দার, মীরজাফর আরও অনেক বাজে কথা। এখন তাই লড়াই হবে।’’ কিছুক্ষণের মধ্যেই উত্তর কাঁথির মঞ্চে দাঁড়িয়ে শিশিরকে জবাব দিলেন মমতা।

মমতার সংযোজন, ‘এবারের ভোট গদ্দারদের বিরুদ্ধে ভোট, মীরজাফরদের ছেড়ে কথা বলবেন না। মনে রাখবেন, বিজেপি একটা ডাকাত পার্টি, সিপিএমের হার্মাদ আর আমাদের কিছু গদ্দাররা জুটেছে।’ এবারের ভোট প্রচারে বাংলার মানুষকে বারবার সতর্ক করছেন মমতা। এদিনও তার অন্যথা হয়নি। বলেন, ‘বহিরাগত গুণ্ডাদের কিন্তু এলাকায় ঢুকতে দেবেন না। ভোটের মেশিন খারাপ হলে ধৈর্য্য ধরে বসে থাকবেন। কিন্তু ছেড়ে চলে যাবেন না। ভোট হয়ে যাওয়ার পরও পাহারা দিতে হবে সহকর্মীদের। ২০-৩০ জন করে ছেলে-মেয়ে নিয়মিত এলাকা পাহারা দেবে। যাতে কোনওভাবে ভোট মেশিন দখল করতে না পারে।’

আরও পড়ুন: ১০ লাখি সুট অতীত! বাংলাদেশ সফরে ‘মুজিব জ্যাকেটে’ সাজবেন নমো

বিজেপি সোনার বাংলা গড়ার যে দাবি করছেন, তা নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মমতা। দক্ষিণ কাঁথির সভামঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘বিজেপিকে জিজ্ঞাসা করুন, কেন গ্যাসের দাম বাড়ছে। কেন পেট্রোলের দাম বাড়ছে। কয়েকজন কোটিপতি আপনাদের সব লুঠ করে নিয়ে চলে যাবে। বিজেপি ভোট চাইলে জিজ্ঞাসা করুন, রেল, কোল, এয়ার ইন্ডিয়া, কেন বিক্রি হচ্ছে?’ এদিন পিএম কেয়ার্স ফান্ড নিয়েও তোপ দেগেছেন মমতা। বলেন, ‘পিএম কেয়ার্স, নোট বন্দির টাকা কোথায় গেল? বিজেপিকে জবাব দিতে বলুন। ভোট এলেই লোককে ৫০০-১০০০ টাকা করে দিচ্ছে। বিজেপি এখন হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। সেই টাকা থেকে গুণ্ডা পোষে। টাকা দিয়ে ভোট দেবেন না।’

প্রথম দফা ভোটের আগে শেষ রবিবাসরীয় ভোটপ্রচারে উত্তপ্ত বঙ্গ। প্রথম দফা ভোটের সপ্তাহখানেক আগে বক্সিং গ্রাউন্ড মেদিনীপুর। একুশের ভোটযুদ্ধে মেদিনীপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে আরও কড়া হচ্ছে প্রতিপক্ষের প্রতি আক্রমণ। নাম না করে একদা বিশ্বস্ত সহকর্মী থেকে এখন ভোটকেন্দ্রের প্রতিদ্বন্দ্বীতে পরিণত হওয়া শুভেন্দু অধিকারী সহ গোটা অধিকারী পরিবারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি আরও বলেন, ‘গদ্দাররা হাত ধরে বিজেপিকে এনেছে। ২০১৪ থেকে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। ঘরে ঢুকে সিঁধ কেটেছে। এদের জমিদারি থেকে মেদিনীপুরকে মুক্ত করতে হবে। বিশ্বাসঘাতকরা জয়ী হবে না। জয়ী হতে পারে না। ওরা আগে ইঁদুর ছিল এখন বাঘ হয়েছে। আর যার ক্ষমতায় বাঘ হয়েছে, এখন তাকেই খেতে আসছে। নির্বাচনের পর ওরা আবার ইঁদুরে পরিণত হবে।’

আরও পড়ুন: WB election 2021: শিবির বদল করলেন শিশির অধিকারী, সাংসদ-সংখ্যায় সমান তৃণমূল-বিজেপি!

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest