জুট কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান পদ থেকে আচমকা ইস্তফা দিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। গত ৪ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রক অস্থায়ী ভাবে ওই পদে বসিয়েছিল শুভেন্দুকে। খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) ইচ্ছাতেই শুভেন্দু ওই পদ পেয়েছিলেন। জুট কর্পোরেশনের (Jute Corporation of India) চেয়ারম্যান পদে থাকার দরুন এতদিন ক্যাবিনেট মন্ত্রীর মর্যাদা পাচ্ছিলেন শুভেন্দু। মেয়াদ ছিল ৩ বছর। কিন্তু ২ মাস পেরতে না পেরতেই সেই পদ ছাড়লেন বিজেপি নেতা।
শুভেন্দুর আচমকা এই ইস্তফার কারণ কী? বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলছেন, “নির্বাচনের কাজের জন্য চাপ বাড়ছে, তাই পদত্যাগ করেছেন শুভেন্দু।” যদিও শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, তিনি এবারের নির্বাচনে নন্দীগ্রাম থেকে বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হচ্ছেন। বিজেপি (BJP) সরকারিভাবে তাঁর প্রার্থী হওয়ার কথা ঘোষণা না করলেও, তিনি যে নিজের পুরনো কেন্দ্র থেকেই ভোটের ময়দানে অবতীর্ণ হতে চলেছেন, তা মোটামুটি নিশ্চিত। সেইমতো নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছেন বিজেপি নেতা। শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, নির্বাচনে লড়তে হলে সমস্ত সরকারি পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়। সেজন্যই তিনি জুট কর্পোরেশনের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই তিনি নিজের নির্বাচনী হলফনামা প্রস্তুত করে ফেলেছেন বলেও সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: Election 2021: তুললেন চা পাতা, শুনলেন মনের কথা, অসমে ভোট প্রচারে Priyanka Gandhi
এই প্রেক্ষিতে অধুনা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) কে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চেয়ে ব্যানার দিল ‘দাদার অনুগামী’রা। মঙ্গলবার পুরুলিয়ার আদ্রা এলাকায় বেশ কিছু জায়গায় দেখতে পাওয়া যায় এমনই কিছু পোস্টার।
পুরুলিয়ার আদ্রা বাস স্ট্যান্ড-এর একটি দোকান এবং বিজেপির অস্থায়ী কার্যালয়ের পার্শ্বস্থ একাধিক জায়গায় ‘দাদার অনুগামী’দের এই ব্যানারগুলো দেখা যায়। সেই ব্যানারে লেখা রয়েছে, “হরে কৃষ্ণ হরে হরে, দাদা বাংলার ঘরে ঘরে। বাংলার ছেলেকে বাঙালিরা বাংলার সিংহাসনে দেখতে চাই।” সেই সঙ্গে লেখা, “জঙ্গলমহলের ৬১ আসনে দাদার অনুগামীদের প্রার্থী চায়, বাংলার ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারী আমরা দাদার অনুগামী।” এই পোস্টারের একদিকে শুভেন্দু অধিকারী ছবি, অন্যদিকে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী ও প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর ছবি রয়েছে। মাঝখানে রয়েছে একটি পদ্ম ফুলের ছবি।
স্বাভাবিক ভাবেই এই পোস্টার নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “এটা বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ। ওদের দলে কোন শৃঙ্খলা নেই। কেউ শুভেন্দু অধিকারী তো কেউ আবার দিলীপ ঘোষকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চায়। অন্যদিকে বিজেপির জেলা সম্পাদক রাজেশ চীন্নার দাবি, এগুলো তৃণমূলের ষড়যন্ত্র। বিজেপিতে কোনো গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। কর্মীদের বিভ্রান্ত করার জন্য তৃণমূলই এই ধরনের কাজ করছে। দল যাকে প্রার্থী ঘোষণা করবে তাঁর হয়েই সকলেই কাজ করবেন।
আরও পড়ুন: ৮ মার্চ প্রথম দু’দফার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা, আগেই দেখে নিন বামেদের কে কোথায় প্রার্থী হতে চলেছেন