স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলে কাউকে চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না, এদিন রাণাঘাটে দাঁড়িয়ে তা পরিষ্কার করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে।
সম্প্রতি রাজ্যের সকল নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কিন্তু কয়েকটি নার্সিংহোম তা মানতে নারাজ। সে খবর পৌঁছেছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও। সোমবার নদিয়ার রানাঘাটের সভা থেকে তা নিয়েই হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘অনেক বড় বড় হাসপাতাল কখনও কখনও বলে, আমরা স্বাস্থ্যসাথী করব না। আমরা তাঁদের সঙ্গে মিটিং করে বলব, এই প্রকল্প করতেই হবে।’’ আরও এক ধাপ এগিয়ে এ দিন মমতা হুঁশিয়ারি দেওয়ার সুরেই বলেন, ‘‘আমরা জেলার ছোট ছোট নার্সিংহোমগুলোকে বলছি, স্বাস্থ্যসাথী নিতে হবে। যদি কেউ চিকিৎসা না দেয়, সরকারের হাতে কিন্তু লাইসেন্স বাতিল করার ক্ষমতা আছে।’’
বিজেপি-র নেতারা কেন্দ্রের ‘আয়ুষ্মান’ প্রকল্প নিয়ে সর্বদা সওয়াল করেন। ওই প্রকল্প চালু না-করায় রাজ্য সরকারকে নিরন্তর আক্রমণ জারি রেখেছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। কেন্দ্রকে বিঁধে তা নিয়ে মমতার জবাব, ‘‘কিসের আয়ুষ্মান? ওরা (কেন্দ্র) ৬০ টাকা দেবে ৪০ টাকা আপনাকে দিতে হবে। আর স্বাস্থ্যসাথীতে ১০০ টাকাই সরকার দেবে। স্বাস্থ্যসাথী আমার সাথী, আমি নিজেও সদস্য হয়েছি। ওই কার্ডটার দাম ৫ লক্ষ টাকা।’’
আরও পড়ুন: ত্বহা তো আছেনই,আব্বাসকে মোকাবিলা করতে সিদ্দিকুল্লাহকে কাজে লাগাতে পারে তৃণমূল !
আপাতত মমতা সরকারের পাখির চোখ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। দুয়ারে দুয়ারে সরকার শিবিরের মাধ্যমে রাজ্যবাসীর কাছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পৌঁছে দিতে মরিয়া নবান্ন। তবে, এই কার্ডকে ভোটের আগে নির্বাচনী চমক বলে দাবি করছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। সেই প্রেক্ষাপটে এদিন বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি বেশ তাৎপর্যবাহী।
উল্লেখ্য, শনিবার নবান্নের সভাঘরে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড নিয়ে বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম–সহ অন্যান্য শীর্ষ আধিকারিকরা। সেখানেই ঠিক হয়েছে এবার বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের জন্য তৈরি হবে পৃথক ডেস্ক। কোনও রোগী কার্ড নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এলে প্রথমে যোগাযোগ করবেন সেই ডেস্কেই। এখানেই শেষ নয়, দ্রুত বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে বিমার টাকাও মিটিয়ে দেবে সরকার। তবে যতক্ষণ না তা মেটানো হচ্ছে, ততক্ষণ যেন কার্ড থাকা রোগীদের না ফেরানো হয়। বৈঠকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে এমন আরজিও জানিয়েছে রাজ্য।
পরে ভার্চুয়াল বৈঠকে বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক, স্বাস্থ্য আধিকারিকদের মুখ্যসচিব নির্দেশ দেন, আরও বেশি সংখ্যায় নার্সিংহোমকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আনতে উদ্যোগ নিতে হবে। স্বাস্থ্যসাথী সংক্রান্ত হেল্প ডেস্ক বাড়ানোর জন্যও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে।
আরও পড়ুন: ‘স্বাস্থ্যসাথী’ করলেন বিজেপি সভাপতির পরিবার, মুখে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসাও! অস্বস্তিতে বিজেপি