সবে জনপ্রিয় হতে শুরু করেছিল ‘কু’ অ্যাপ। তার মধ্যেই ভারতীয় এই মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্ম নিয়ে শুরু হল বিতর্ক। গুরুতর অভিযোগ উঠেছে ‘কু’ অ্যাপের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ইউজারদার ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করে দিচ্ছে এই অ্যাপ। এমন অভিযোগ তুলেছেন, ফরাসি সিকিউরিটি রিসার্চার রবার্ট ব্যাপ্টিস্ট।
‘কু’ অ্যাপকে বলা হচ্ছে টুইটারের ভারতীয় ভার্সান। যাঁরা টুইটার ব্যবহার করেন, তাঁর এই অ্যাপে একই ধরনের পরিষেবা পাবেন। তার পাশাপাশি সমস্ত ভারতীয় ভাষায় অডিয়ো, ভিডিয়ো, নিজের মতামত পোস্ট করতে পারবেন। তবে এক সময়ে একটিই ভাষা ব্যবহার করা সম্ভব।
বছর খানেক আগে এক ফরাসি সংস্থা তাদের তদন্তে দেখিয়েছিল, আধার কার্ডের তথ্য কী ভাবে ফাঁস হয়ে যেতে পারে। তারাই ‘কু’ অ্যাপের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে, এর মাধ্যমে ফাঁস হয়ে যেতে পারে ব্যবহারকারীর জন্ম তারিখ, ই মেল আইডি, ফোন নম্বরের মতো গোপন তথ্য। রবার্ট জানিয়েছেন, টুইটারে অনেক ইউজার তাঁকে ‘কু’ অ্যাপে জয়েন করার রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলেন। সেই সূত্রেই তিনি আধঘণ্টা মতো ‘কু’ অ্যাপে যুক্ত ছিলেন। আর তখনই নাকি এই গন্ডগোল আবিষ্কার করেন তিনি।
আরও পড়ুন: কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে টুইটারের সঙ্গে সংঘাত, বিকল্প ‘চাইনিজ’ অ্যাপ Koo-এর প্রচার বিজেপি নেতা- মন্ত্রীদের!
You asked so I did it. I spent 30 min on this new Koo app. The app is leaking of the personal data of his users: email, dob, name, marital status, gender, … https://t.co/87Et18MrOg pic.twitter.com/qzrXeFBW0L
— Baptiste Robert (@fs0c131y) February 10, 2021
রবার্টের অভিযোগ, ইউজারদের একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন- ইমেল অ্যাড্রেস, নাম, লিঙ্গ, জন্ম তারিখ, ম্যারিটাল স্ট্যাটাস অর্থাৎ ইউজার বিবাহিত নাকি অবিবাহিত— এইসব ফাঁস করছে ‘কু’ অ্যাপ। রবার্ট এও জানিয়েছেন যে, ‘কু’ অ্যাপের ইউজারদের তথ্য জেনে ফেলা তার কাছে বিশেষ সমস্যার বলেও মনে হয়নি। নিজের অভিযোগের স্বপক্ষে বেশ কিছু স্ক্রিনশট টুইটারে শেয়ার করেছেন রবার্ট।
উঠে এসেছে ‘কু’-এর সঙ্গে চিনের যোগাযোগের অভিযোগও। কারণ অ্যাপের মালিকানায় অংশীদারিত্ব রয়েছে চিনের এক সংস্থার। ফলে অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, এই অ্যাপের মাধ্যমে ভারতীয়দের তথ্য চলে যাচ্ছে চিনের কাছে। যদিও ‘কু’-এর অন্যতম নির্মাতা অপ্রমেয়া রাধাকৃষ্ণের দাবি, চিনের সংস্থাটি নিজেদের অংশীদারিত্ব বিক্রি করে দিচ্ছে। ফলে এই অ্যাপের মালিকানা পুরোপুরি ভারতীয়দের হাতে চলে আসবে।
শুধু এটাই নয়, ‘কু’-এর বিরুদ্ধে নেটমাধ্যমে আরও বেশ কয়েকটি অভিযোগ উঠেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণটি হল, এর সঙ্গে তুলনা হচ্ছে ‘ম্যাস্টোডন’ বা ‘পার্লার’ জাতীয় অ্যাপের সঙ্গে। আমেরিকার দক্ষিণপন্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় এই নেটমাধ্যমগুলো আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হায়ার বলসোনারো-র পক্ষে প্রচারে বড় দায়িত্ব নিত। ঠিক একই রকম ভাবে ভারতে কেন্দ্রীয় সরকারের নানা কাজকর্মের পক্ষে সওয়াল করার কথাও নাকি বলছে ‘কু’। অনেকেই এমনটাই দাবি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী-সহ বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের বহু মন্ত্রী থেকে বিজেপি-র অনেক নেতা-নেত্রীর বক্তব্য ইতিমধ্যেই অ্যাপটির ‘ট্রেন্ডিং’ বিভাগে স্থান পেয়েছে। স্থান পেয়েছে ‘ভারতে টুইটার নিষিদ্ধকরণ’-এর দাবিও।
আরও পড়ুন: প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে সরছে ভারত, চিনের ট্যাঙ্ক