Site icon The News Nest

রাজ্য সংগঠনে রদবদল! বিধানসভার রোডম্যাপ মমতার, ব্যালেন্স প্রবীণ-নবীনে

লক্ষ্য বিধানসভা ভোট। আর সেই লক্ষ্যেই তৃণমূলের সংগঠনে ব্যাপক রদবদল ঘটালেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির বাড়বাড়ন্ত, লোকসভায় ব্যাপক সাফল্যের পর তৃণমূলের সংগঠনে রদবদল প্রত্যাশিতই ছিল, কিন্তু তা যে এমন ব্যাপক হারে হবে, তা আন্দাজ করতে পারেননি অনেকেই। বাস্তবে হল তেমনই। তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে জায়গা দেওয়া হল মাওবাদী সন্দেহে দীর্ঘদিন জেলে থাকা ছত্রধর মাহাতকে।

বৃহস্পতিবার দলের সাংগঠনিক বৈঠকে জঙ্গলমহলের সমস্ত জেলার সভাপতি বদল করেছেন মমতা। লোকসভা নির্বাচনে গোটা এলাকায় ফুটেছিল পদ্ম। তার পর থেকে জঙ্গলমহলে শুকাচ্ছে ঘাসফুল। মাঝে নিজে হাতে জঙ্গলমহলের সংগঠনে প্রাণসঞ্চারের চেষ্টা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু লাভ হয়নি। তাই গোটা জঙ্গলমহলের সংগঠন বদলে ফেললেন তৃণমূলনেত্রী।

শুধু তাই নয়, গ্রামীণ সংগঠনের কথা ভেবেই রাজ্য কমিটির নতুন সদস্য করা হল অমিত মিত্র, সৌগত রায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সুকুমার হাঁসদার মতো নেতাকে।  সম্প্রতি তৃণমূলের অন্দরে দুর্নীতি নিয়ে ঝড় তুলেছিলেন রাজীব। তাঁকে রাজ্য কমিটিতে আনা তৃণমূল নেত্রীর মাস্টারস্ট্রোক বলে মনে করছেন অনেকেই। বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে ২১ জনের একটি কমিটি। সেই কমিটিতেই এলেন এই নতুনরা।

আরও পড়ুন : গণতন্ত্রে বিরুদ্ধ স্বরকে দমানো যায় না, শীর্ষকোর্টে প্রাথমিক জয় পেল পাইলট শিবির

পুরুলিয়ায় শান্তিরাম মাহাতোর বদলে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গুরুপদ টুডুকে।বাঁকুড়ায় আগে থেকেই কার্যকরী সভাপতির পদে ছিলেন শ্যামল সাঁতরা। শুভাশিস বটব্যালকে সরিয়ে তাঁর হাতেই জেলার দায়িত্ব তুলে দিলেন মমতা। এই জেলাতেও লোকসভা নির্বাচনের ২টি আসনের ২টিই জিতে নিয়েছিল বিজেপি।

বার হাওড়া জেলা (সদর) সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল মন্ত্রী অরূপ রায়কে, তার বদলে এলেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। কো-অর্ডিনেটর করা হয়েছে বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে।কোচবিহারে দলে একচ্ছত্র রাজ ছিল মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের। তিনি ছিলেন সভাপতিও। কিন্তু লোকসভায় সেখানে কার্যত ধুয়েমুছে গিয়েছে তৃণমূল। তাই রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে সরিয়ে সেখানে সভাপতি করা হয়েছে তরুণ পার্থপ্রতিম রায়কে।

নদীয়ার সাংসদ হিসেবে যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছেন মহুয়া মৈত্র। তরুণ রক্তের এই নেত্রীর কাজ করার ক্ষমতা দলেও প্রশংসিত। এবার গোটা নদীয়া জেলার সভাপতি করা হল মহুয়াকেই।

কুড়ার জেলা সভাপতি হলেন শ্যামল সাঁতরা। ঝাড়গ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দের বীরবাহা সোরেনকেও সরিয়ে দেওয়া হল ভোটের কথা মাথায় রেখেই। তাঁর জায়গায় এলেন দুলাল মুর্মু। পশ্চিম মেদিনীপুরে দল পরিচালনার জন্য একটি কমিটি গড়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে রয়েচেন শিউলি সাহা, মানস ভুঁইয়ার মতো নেতারা।

২১ জুলাইয়ের ভার্চুয়াল সভা থেকে তৃতীয় বার সরকার গড়ার সংকল্প ঘোষণার পরেই দলীয় সংগঠনে ফাঁকফোকর মেরামতের কাজটাও শুরু করতে চলেছিলেন তৃণমূলনেত্রী।

রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভা নির্বাচনে ফল আশানুরূপ না-হওয়ায় জেলায় জেলায় হাল ছেড়ে দিয়েছেন বহু নেতা। এর জেরে আরও দ্রুত বাড়ছে বিজেপি। তাই প্রবীণ নেতাদের সরিয়ে নবীনদের জেলা সভাপতির পদে বসালেন মমতা। দলের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরির কথা মাথায় রেখেও তরুণদের প্রাধান্য দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে প্রবীণদের বার্তা দিলেন, পদ আঁকড়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকা চলবে না।

আরও পড়ুন : মাস্ক না পরলে জরিমানা ১ লাখ, লকডাউন বিধি ভাঙলে জেল ২ বছরের !

 

Exit mobile version