করোনা কালে মনের ডানা দু’টোর ছটফটানি যেন একটু বেশিই বেড়ে গিয়েছে। সমস্ত বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে উড়ে যেতে চাইছে মুক্ত আকাশে। নির্দ্বিধায় শুয়ে পড়তে চাইছে সবুজ ঘাসের নরম বিছানায়। দূরের পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে প্রাণ খুলে চিৎকার করতে চাইছে। নিউ নর্মালে নিজের গাড়ি থাকলে কিংবা গাড়ি ভাড়া করে বেরিয়ে পড়তেই পারেন। আবার চক্ষুযুগলকে আরাম দিয়ে সপ্তাহান্তে ভার্চুয়াল ভ্রমণও করতে পারেন। মনের জানলা পেরিয়ে যে পথেই যান আপনার ডেস্টিনেশনের তালিকায় বাগোরা (Bagora) থাকতেই পারে।
কার্শিয়াং(Kurseong) সাব-ডিভিশনের ছোট্ট গ্রাম বাগোরা। উত্তরবঙ্গের (North Bengal) ট্রেকারদের যাওয়ার পথেই পড়ে। সর্বোচ্চ উচ্চতা ৭,১৫০ ফুট।
আরও পড়ুন: হাতছানি দিচ্ছে ঘাটশিলা! করোনা কাটলেই আবার বেরিয়ে পড়তে হবে সবুজ প্রান্তরে…
কী কী দেখবেন–
- ছিমছাম গ্রামের চারপাশ যেন সবুজে মোড়া।
- দূরে তাকালেই দেখা যাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা। সূর্যোদয়ের সময় রক্তিম আভায় ভরিয়ে দেবে মনপ্রাণ।
- কান পাতলে শোনা যাবে পাখিদের কলতান।
- চাইলে গ্রামের আঁকাবাঁকা রাস্তায় বেরিয়ে পড়তে পারেন।
- কাছাকাছিই রয়েছে আরও কিছু দর্শনীয় স্থান। ৪ কিলোমিটার দূরত্বে চিমনি (Chimeni), মংপু (Mongpu) ১২ কিলোমিটার আর চটকপুরের (Chatakpur) দূরত্ব ৮ কিলোমিটার। ঘুরে আসতেই পারেন।
- তারপর দিনের শেষে চা কিংবা কফির কাপে নিশ্চিন্তের চুমুক দিতে দিতে অনুভব করতে পারেন পাহাড়ের নিস্তব্ধতা।
কীভাবে যাবেন —
শিলিগুড়ি (Siliguri) হয়ে কার্শিয়াং যেতে হবে। সেখান থেকে ডানদিকে কিছুটা সময় গেলে পাওয়া যাবে বাগোরা গ্রাম। কলকাতা (Kolkata) থেকে দূরত্ব ৬০০ কিলোমিটার। বছরের যেকোনও সময় যাওয়া যেতে পারে।
বন দপ্তরের একটি বাংলো রয়েছে বাগোরায়। রয়েছে একটি প্রাইভেট হোম স্টে। করোনা পরিস্থিতিতে আগে থাকতে থাকার জায়গা ঠিক করে যাওয়াই ভাল। রয়েছে কয়েকটি ট্রেকিং পথও
১) চিমনি থেকে বাগোরা: পাঁচ কিলোমিটারের এই ট্রেক পথে বহিরাগতদের পা পড়ে কালেভদ্রে। পাখিদের বিচিত্র ডাক হেমলকের নেশার মতো ঝিম ধরিয়ে দেয়। হাঁটতে হাঁটতে হাঁফিয়ে গেলে স্থানীয় মনাস্ট্রিতে জিরিয়ে নেওয়ার সুযোগও আছে। নিঃশব্দ উপত্যকায় ঘণ্টাখানেক হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন গন্তব্য বাগোরায়। স্থানীয় হোম স্টেতে রাত কাটিয়ে পরের দিন সকালে নতুন পথের মানচিত্রে চোখ বুলানো যেতে পারে। তবে মাথায় রাখতে হবে চিমনি থেকে বাগোরা যাওয়ার পথে মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া গেলেও এটিএম কিন্তু নেই।
২) বাগোরা থেকে যোগীঘাট: যাঁরা অল্প চেনা ট্রেকিং রুটের সন্ধানে থাকেন, তাঁদের মনে ধরবে এই পথ। মনোরম পাহাড়চূড়ায় বাগোরা গ্রাম। এই গ্রাম থেকে হাঁটা পথে ১২ কিলোমিটার দূরে যোগীঘাট। তিন থেকে চার ঘণ্টার পথ। যোগাঘীটের জঙ্গলে পাখি দেখা আর রিয়াং নদীর উপর যোগীঘাট সেতু পর্যটকদের মূল আকর্ষণ।
আরও পড়ুন: লকডাউনের জেরে নেই জন সমাগম, ইতিহাসের নীরব ফিসফিসানি হুগলি ইমামবাড়া জুড়ে…