গোয়ায় ঘুরতে গিয়ে মদের গ্লাসে চুমুক দেননি এমন পর্যটকের সংখ্যা হাতে গোনা। আর বেশিরভাগ মানুষই গোয়ার বিখ্যাত ‘ফেনি’-র গ্লাসে চুমুক দিয়ে মায়াবী দুপুর উপভোগ করেছেন। বেশিরভাগেরই ধারণা এই ফেনি এক জাতীয় দেশী মদ। কিন্তু অনেকেই জানেন না ফেনির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে গোয়ার দীর্ঘদিনের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, আভিজাত্য, ইতিহাস। এবার ফেনি-সহ সমস্ত মদেরই ইতিকথা তুলে ধরবে দেশের প্রথম মদ মিউজিয়াম। যা গোয়ায় গড়ে উঠেছে, নাম ‘All About Alcohol’। উত্তর গোয়ার ক্যান্ডোলিন এলাকায় এই মিউজিয়াম গড়ে তুলেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী নন্দন কুড়চাড়কর।
মদ কেবল যে পানীয় হিসেবেই জনপ্রিয় তা নয়, সেই সঙ্গে একে ঘিরেও তৈরি হয়েছে নানা শিল্পকর্ম। সেই সব প্রাচীন শিল্পকর্মের অসংখ্য নিদর্শন রয়েছে উত্তর গোয়ার ক্যান্ডোলিম নামের গ্রামে অবস্থিত জাদুঘরটিতে। যার মধ্যে অন্যতম গোয়ার ঐতিহ্যবাহী বড় আকারের সুরাপাত্র। বহু শতাব্দী আগে মদ সংরক্ষণের সময় ওই পাত্রগুলিতেই রাখা হত।
নন্দন একজন প্রত্ন সংগ্রাহক। কিন্তু কেন হঠাৎ এমন জাদুঘর তৈরির পরিকল্পনা করলেন তিনি? এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে এবিষয়ে জানাতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ”আপনি যদি স্কটল্যান্ডে যান দেখবেন সেখানকার নাগরিকরা তাঁদের জল কিংবা পানীয় সব কিছু নিয়েই দারুণ খুশি। আবার রাশিয়ায় গেলেও তাঁরা আপনাকে দেখাবে কী ধরনের পানীয় তাঁরা পান করেন। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে অ্যালকোহলকে একেবারেই আলাদা চোখে দেখা হয়। আর সেকথা মাথায় আসতেই আমি সিদ্ধান্ত নিই দেশের প্রথম অ্যালকোহল জাদুঘর নির্মাণের।”
এই জাদুঘরে এলে দেখা মিলবে কাজু-ফেনির। এই পানীয় প্রাকৃতিক ভাবেই তৈরি হয়। বিখ্যাত এই পানীয় থাকবে টুরিস্টদের দর্শনের জন্য। জাদুঘরের সিইও আর্মান্দো দুয়ের্তের কথায়, ”গোয়ার বাসিন্দাদের কাছে অ্যালকোহল হল আতিথেয়তার প্রতীক। ‘২০১৬ সালে সরকার ফেনিকে হেরিটেজ ড্রিঙ্ক হিসেবে ঘোষণা করে। তখনই মনে হয়েছিল, শ্যাম্পেন, ভদকা যদি কোনও দেশের ঐতিহ্যের গর্বিত স্মারক হতে পারে, তা হলে গোয়ার ফেনি নয় কেন?”
গোয়ার রাজধানী পানাজি থেকে মাত্র ১০ কিমি দূরে এই মিউজিয়াম খোলা থাকবে দুপুর ৩টে থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। ঘুরে দেখার পাশাপাশি চেখেও দেখতে পারবেন মদ। ফলে সুরা-প্রেমিকদের জন্য এর চেয়ে ভালো পীঠস্থান আর কিছুই হতে পারে না।