ওয়েব ডেস্ক: রেশনে দুর্নীতির অভিযোগে শনিবার ফের রণক্ষেত্র হয়ে উঠল মুর্শিদাবাদ। এবার সালার। রেশন ডিলারের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ, ইটবৃষ্টি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তুমুল উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
খারাপ চাল দিচ্ছেন রেশন ডিলার এই অভিযোগে মুর্শিদাবাদের লালগোলায় বিক্ষোভ দেখান গ্রাহকরা।অভিযোগ, ওই ডিলার এবং তাঁর লোকেদের নিয়ে গ্রাহকদের মারধর করেছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছে চারজন। গ্রাহকদের অভিযোগ, ভাল চালের সঙ্গে খারাপ-পোকা ধরা চাল মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। ফলে এদিন রেশন দোকান ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এলাকার বাসিন্দারা।
শনিবার সকালে রেশন দুর্নীতির অভিযোগে শিমুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পুনাসি গ্রামের রেশন ডিলার হালিম শেখের দোকানের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, যে পরিমাণ জিনিস তাঁদের পাওয়ার কথা তার থেকে অনেক কম পরিমাণ জিনিস দিচ্ছেন রেশন ডিলার হালিম শেখ। এই নিয়ে ক্ষোভ ছিলই। শনিবার সকালে প্রতিবাদ জানাতে একজোট হন এলাকার মানুষ। রেশন দোকানের সামনে শুরু হয় বিক্ষোভ। এতেই উত্তেজনা ছড়ায়। ওই রেশন ডিলারের দোকান লাগোয়া তাঁর বাড়ি। দোকান ও বাড়িতে ভাঙচুর করে। জিনিসপত্র বার করে এনে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কান্দি থানার পুলিশ। এরপরেই পুলিশকর্মীদের ঘিরে ধরে জনতা। অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে কান্দির এসডিপিওর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবস্থা সামাল দেয়। হালিম শেখ দাবি করেন,‘‘সরকার নির্ধারিত খাদ্যসামগ্রীই বিলি করা হচ্ছিল। বিভিন্ন কার্ডের গ্রেড অনুযায়ী রেশন থেকে জিনিস পান গ্রাহকেরা। সবাই তো সমান পরিমাণ পান না। তাই নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির জেরেই এই ঘটনা।’’
আরও পড়ুন: করোনায় গৃহবন্দী মানুষ, সেরে গিয়েছে ওজোন স্তরের বিরাট ক্ষত, সুখবর দিল রাষ্ট্রসঙ্ঘ
রেশনে নিয়ে নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠছিল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। বরাদ্দ রেশন মিলছে না বলেও গ্রাহকরা একাধিরকবার অভিযোগ করেছে। শনিবার সাধারণের বিক্ষোভ গণরোষে পরিণত হল।মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক জগদীশ প্রসাদ মিনা জানান, ওই রেশন ডিলারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
রেশন নিয়ে বিক্ষোভে উত্তাল হল বর্ধমান শহরও। রেশনে চাল কম দেওয়ার অভিযোগ তুলে বর্ধমানের মেহেদিবাগানে এ দিন বিক্ষোভ শুরু করেন উপভোক্তারা। তাঁদের অভিযোগ, গতকাল থেকেই ওজনে কম চাল দিচ্ছেন রেখা সামন্ত নামে ওই ডিলার। বিক্ষোভের মুখে পড়ে রেশন দোকানের ম্যানেজার মানিক চক্রবর্তী ওজনে কম চাল দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। বর্ধমান থানার পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গ্রাহকদের দাবি মতো ঘাটতি থাকা চাল দেওয়ার ব্যবস্থা করে। তবে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
রেশন ডিলার রেখা সামন্তও কম চাল দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘ওজন করতে গিয়ে কম হতে পারে। তবে সবাইকে তাঁদের প্রাপ্য চাল আবার দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’
বর্ধমান শহরের পাশাপাশি রেশনে চাল কম দেওয়ার অভিযোগে উত্তেজনা ছড়ায় পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরেও। উপভোক্তারা প্রথমে প্রতিবাদ করলে রেশন ডিলার সুবীর নন্দী এড়িয়ে যান বলে অভিযোগ। এরপর সবাই একজোট হয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে তখন টনক নড়ে রেশন ডিলারের। সাংবাদিকরা রেশন দোকানে গেলে তাঁদের কাজে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।পরিচয় পত্র ও ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ডিলার। খবর পেয়ে যায় জামালপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। রেশন ডিলার সুবীর নন্দী জামালপুর ব্লক রেশন ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক।
জেলা সভাধিপতি শম্পা ধাড়া বলেন, ‘‘ঘটনার কথা আমি শুনেছি।প্রশাসন গোটা বিষয়টি দেখছে।’’
আরও পড়ুন: দেশে এই প্রথম! মুম্বইয়ে চালু হল করোনা পরীক্ষার বাস