Site icon The News Nest

অমিতের ইস্তফা দাবি বিরোধীদের, দিল্লি হিংসা নিয়ে অশান্ত সংসদ, হাতাহাতি লোকসভায়

20200302136L 1583147004434 1583147021274

গান্ধী মুর্তির পাদদেশে তৃণমূলের প্রতিবাদ

নয়াদিল্লি: বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় ভাগে সোমবার শুরু হল সংসদ। কিন্তু এদিন সংসদের উভয় কক্ষে কার্যত কোনও কাজ হয়নি। দিল্লি হিংসা নিয়ে উত্তাল হয় অধিবেশন। বারবার ব্যাহত হওয়ার পরে সারাদিনের জন্য মুলতুবি হয়ে যায় সংসদ। এতটাই উত্তপ্ত হয়ে গিয়েছিল পরিস্থিতি যে লোকসভায় কার্যত হাতাহাতি হয় দুই সাংসদের মধ্যে।

এদিন দিল্লির গোষ্ঠী সংঘর্ষ ঘিরে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় সংসদের ভিতরে ও বাইরে। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইস্তফার দাবিতে দুই কক্ষেই সোচ্চার ছিল কংগ্রেস, তৃণমূল, আপ, বিএসপি-সহ অধিকাংশ বিরোধী দল। তুমুল প্রতিবাদের মুখে পড়ে আপাতত ‘পরে আলোচনা’র কৌশল নিয়েছে শাসক দল। বিরোধীদের হই হট্টগোলের জেরে দিনের মতো মুলতুবি রাজ্যসভা। লোকসভার অধিবেশনও মুলতুবি হয়েছে দফায় দফায়। লোকসভার বাইরে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে চোখে কালো কাপড় বেঁধে ‘গাঁধীজির তিন বাঁদর’-এর অনুকরণে প্রতিবাদে শামিল হন তৃণমূল সাংসদরা। সেই বিক্ষোভে আবার কংগ্রেস সাংসদদেরও যোগ দিতে দেখা গিয়েছে।

এর মধ্যে কংগ্রেস সাংসদ রামিয়া হরিদাস অভিযোগ করেন তাঁকে মেরেছেন বিজেপি সাংসদ জসলীন কৌর। স্পিকারের কাছে অভিযোগও দায়ের করেন তিনি। তবে এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন জসলীন।

তিন সপ্তাহের ব্যবধানে আজ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনে বাজেট প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল সংসদে। কিন্তু তার মধ্যেই ঘটে গিয়েছে দিল্লিতে রক্তক্ষয়ী গোষ্ঠী সংঘর্ষ। প্রাণ গিয়েছে অন্তত ৪৬ জনের। অভিযোগ উঠেছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আগেভাগে ব্যবস্থা নিলে এত বড় সংঘর্ষ এড়ানো যেত।এই প্রেক্ষিতে অধিবেশন শুরুর দিনই দিল্লির সংঘর্ষ নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়ে এ দিন সংসদের উভয় কক্ষেই আলোচনার প্রস্তাব দেয় বিরোধীরা। কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা গোলাম নবি আজাদ প্রশ্ন তোলেন, দিল্লিতে যখন সংঘর্ষ ছড়াচ্ছে, সরকার কি তখন ‘ঘুমোচ্ছিল’। দিল্লির এই সংঘর্ষ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ইস্তফার দাবি তোলে কংগ্রেস।

আরও পড়ুন: ‘গোলি মারো’ স্লোগান দেওয়ায় ধৃত ৩, ‘এটা বাংলা, দিল্লি নয়’-বিজেপিকে হুঁশিয়ারি মমতার

দিল্লির সংঘর্ষ নিয়ে আলোচনার দাবি স্পিকারও অবশ্য উড়িয়ে দেননি। তবে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি অবশ্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আলোচনার যোগ্য। আপাতত আমাদের প্রাধান্যে দেওয়া উচিত আগে স্বাভাবিক অবস্থা ফেরানো। যদি সেটা হয়, তখন আলোচনা করা যাবে।’’ তিনি আশ্বস্ত করেন, পরে এ নিয়ে আলোচনার জন্য সময় বরাদ্দ করা হবে। কিন্তু বিরোধীরা তা মানতে নারাজ। হই-হট্টগোলের পাশাপাশি ওয়েলে নেমে স্লোগান-বিক্ষোভ শুরু করেন সাংসদরা। তার জেরে দিনের মতো অধিবেশন মুলতুবি করে দেন চেয়ারম্যান।

আরও পড়ুন: ‘পরিকল্পিত গণহত্যা হয়েছে দিল্লিতে’, নেতাজি ইন্ডোর থেকে পাল্টা আক্রমণ মমতার

এ দিন রাজ্যসভার চেয়েও বেশি বিশৃঙ্খলা হয়েছে লোকসভায়। অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করে তুমুল হই হট্টগোল শুরু করেন বিরোধীরা। কিন্তু রাজ্যসভার মতোই লোকসভাতেও স্পিকার ওম বিড়লা জানিয়ে দেন, এটা আলোচনার উপযুক্ত সময় নয়। তিনি বলেন, ‘‘অবস্থার উন্নতির জন্য আমরা অপেক্ষা করব। তার পর আলোচনার অনুমোদন দেব। কংগ্রেস-সহ তৃণমূল, আপ, এসপি, বিএসপি, ডিএমকে-সহ প্রায় সব বিরোধী দলের সাংসদদের হই হট্টগোলে দফায় দফায় মুলতুবি হয়ে যায় অধিবেশন।

Exit mobile version