বিধানসভার ইতিহাসে কার্যত নজিরবিহীন ঘটনা! অধিবেশন শুরু হতেই বিজেপি বিধায়কদের ভারতমাতার নামে স্লোগান! বাজেট অধিবেশন শুরু হতেই চরম বিশৃঙ্খলা শুরু হয়ে যায়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তেজিত হয়ে পড়ে হে মাঝ পথেই ভাষণ বন্ধ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। কার্যত চার মিনিট ভাষণ পড়েই উঠে পড়েন।
আরও পড়ুন : বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ডে ফের বদলাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী ? কুরসি খোয়াতে পারেন তিরথ সিং রাওয়াতও
সরকারের লিখে দেওয়া অর্ধেকেরও কম খসড়া পড়েন রাজ্যপাল। চিৎকার চেঁচামেচিতে ওই খসড়া অনুমোদন করিয়ে দেওয়ার কথা রাজ্যপাল নির্দেশ দেন ধনখড়!আজ শুক্রবার থেকে শুরু হল বাজেট অধিবেশন। নিয়ম অনুযায়ী রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে শুরু হয় বাজেট অধিবেশন। মূলত সরকারের লিখে দেওয়া খসড়াই পড়তে হয় রাজ্যপাল। কিন্তু প্রথম থেকেই সরকারের লিখে দেওয়া খসড়া নিয়ে কার্যত বেঁকে বসেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বাস্তবের সঙ্গে সেই খসড়ার কোনও মিল নেই বলেও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। ফলে শুক্রবার সকাল থেকেই একটা চিন্তার কারণ ছিল যে রাজ্যপাল সরকারর লিখে দেওয়া ভাষণ পড়বেন কিনা! এমনকি নিজের বক্তব্য জুড়তে পারে বলেও একটা আশঙ্কা ছিল।
এই অবস্থায় নির্ধারিত সময়েই রাজ্যপাল অধিবেশন কক্ষে পৌঁছে যান। নিয়ম অনুযায়ী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপাললে অধিবেশন কক্ষে নিয়ে যান। যদিও এর আগে থেকেই বিজেপি বিধায়করা ব্যাপক চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দেয় কক্ষের মধ্যে। রাজ্যপালের ভাষণ শুরু হতেই বিধায়করা ওয়ালে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অধিবেশন কক্ষের মধ্যেই ভারতমাতার নামে স্লোগান দিতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা।
বিজেপির দাবি, ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত, ভোট পরবর্তী হিংসা সহ একাধিক দাবিতে চলে এই বিক্ষোভ। প্রবল হট্টগোলের মধ্যেও রাজ্যের লিখে দেওয়া ভাষণ পড়তে শুরু করেন। কিন্তু এতটাই চিৎকার বিজেপি বিধায়করা শুরু করেন যে রাজ্যপাল কি পড়ছেন তা প্রথমে শোনা যায়নি। এরপর পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে যে মাত্র চার মিনিট পড়েই ভাষণ বন্ধ করে দেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। উঠে পড়েন অধ্যক্ষের চেয়ার থেকে। পাঁচ থেকে ১০ মিনিটের বিধানসভা ছেড়ে বেরিয়ে যান রাজ্যপাল।
বেরিয়ে যাওয়ার সময় রাজ্যপাল দীর্ঘক্ষণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন। তবে কি নিয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে মনে করা হচ্ছে, অধিবেশন কক্ষের মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে তা কার্যত নজিরবিহীন। সে বিষয়ে হয়তো কথা হয়ে থাকতে পারে দুজনের মধ্যে।
রাজনৈতিকমহলের মতে, কৌশলে বিজেপি বিধায়করা এই ঘটনা ঘটাতে পারেন। কারণ রাজ্যপাল সরকারের লিখে দেওয়া খসড়া পড়লে তা রেকর্ড হয়ে যেত। ফলে আগামিদিনে ভোট পরবর্তী হিংসা সহ একাধিক ইস্যুতে রাজ্যপাল বললে প্রশ্ন উঠতে পারত। সেজন্যে এই কাজ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : পাত্তা দেন না আধিকারিকরা, জেডিইউ-বিজেপি জোট সরকারের দুর্নীতি তুলে ধরলেন নীতীশ ঘনিষ্ঠ মন্ত্রীই!