সিপিএম নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের একটি ফেসবুক পোস্টকে ঘিরে রাজনৈতিক মতবিরোধ তুঙ্গে উঠল জোট শরিক কংগ্রেস-সিপিএমের। শনিবার সকালে তাঁর একটি পোস্টকে ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত। এই দীর্ঘ পোস্টে একাধিকবার সাঁইবাড়ির কথা উল্লেখ করে ‘কংগ্রেসি গুণ্ডা’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। সঙ্গে কংগ্রেসি গুন্ডাদের হাতে সিপিএম নেতা-কর্মীদের হত্যার কথা ফলাও করে লিখেছেন। পোস্টের শেষে সেই হত্যাকাণ্ডের স্মরণে আগামী ১২ জুন বর্ধমানের আহ্লাদিপুরের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দলীয় কর্মীদের আসতে বলেছেন।
আরও পড়ুন : মাতৃহারা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে রাজীব, বললেন ‘আজ কোনও কথা নয়’
কংগ্রেস সূত্রে খবর, অধীর চৌধুরি এখানে কংগ্রেসের তরফে কোনও প্রার্থী দিতে চান না। আবার আলিমুদ্দিন সূত্রে জানা গেছে, রাজ্যের শাসক দলকে একেবারে ফাঁকা মাঠ ছেড়ে দিতে নারাজ তাঁরা। বাম শরিকদেরও লাগাতার আপত্তি চলছে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বজায় রাখা নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে আজ সকাল থেকে উত্তাল নেট দুনিয়া। সৌজন্যে সিপিএমের দুই নেতার ফেসবুক পোস্ট। সিপিএম নেতা ও রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এদিন সকালে তাঁর ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করেন। বর্ধমানের ‘সাঁইবাড়ি’ অধ্যায় নিয়ে এই পোস্টে একাধিক জায়গায় ‘কংগ্রেস গুন্ডা’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। আর এক তরুণ সিপিএম নেতা মীনাক্ষী মুখার্জিও এই একই বিষয় তাঁর নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেন গতকাল। যেখানে সাঁই পরিবারের সদস্য নব সাঁইকে ‘ঘাতক’ ও ‘গুন্ডা’ বলা হয়েছে।
কর্মীদের কাছেই বিকাশের এই পোস্টের কথা জানতে পারেন বর্ষীয়ান রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস কর্মী মহলের ক্ষোভের আঁচ প্রত্যক্ষ করে ফোন করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রকে। ওই পোস্টকে কেন্দ্র করে সূর্যকান্তর কাছে বিকাশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন প্রদীপ।
বিকাশের এমন পোস্টের ফলে রাজ্য সিপিএম নেতৃত্বও চাপে পড়ে গিয়েছেন বলে খবর। সেই অস্বস্তি ঝেড়ে ফেলতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বলেছেন, ‘‘সোশাল মিডিয়ায় কে কী পোস্ট করেছেন জানি না। আমরা এখন এই মুহূর্তে বিতর্কে ঢুকতে চাই না। এখন বিতর্কের সময় নয়।’’
ক্ষোভের সুরে কংগ্রেস নেতা প্রদীপ বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি না পঞ্চাশ বছর আগেকার ঘটনা এই মুহূর্তে আলোচনা করার কোনও অবকাশ রয়েছে। গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে। পুরনো কাসুন্দি ঘাঁটার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। আর যদি এটাই মাথায় থাকে তাহলে আমরা জোট করতে গেলাম কেন? অতীতের অনেক বিষাক্ত স্মৃতি তো সকলেরই আছে। সেসব ভুলেই তো নতুন বাংলা গড়ব বলে জোট করেছিলাম।’’
সাফাইয়ের সুরে বিকাশ বলেছেন, ‘‘অতীতকে অস্বীকার করে কোনও লাভ নেই, অতীতটা সত্যই। এতে মতবিরোধের কোনও জায়গা নেই। কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে রাজ্যসভায় গিয়েছি এটা সত্যি। তেমনি সাঁইবাড়ি নিয়ে বামপন্থীদের যে মত তা উল্লেখ করেছি, যদি কংগ্রেসের কেউ আমার পোস্ট নিয়ে দুঃখ পেয়ে থাকেন, তা হলে আমি দুঃখিত। তবে আমার মনে হয়, এমন একটি ঘটনার জন্য বাম-কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষ লড়াইয়ের ক্ষেত্রে কোনও প্রভাব পড়বে না।’’
আরও পড়ুন : Srabanti : চতুর্থ বিয়ে সেরে ফেললেন অভিনেত্রী শ্রাবন্তী! ভাইরাল হল ছবি