একটিবারের জন্যেও নাম করেননি। তবে বুঝতে অসুবিধাও হয়নি।রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের ভূমিকা নিয়ে কড়া কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার মমতার তির্যক উক্তি, ‘কারও চোখে ন্যাবা হলে কী করব? বাচ্চা ছেলে হলে তা-ও বকে চুপ করানো যায়!’
বৃহস্পতিবার যখন মমতা নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে ওই কথা বলছেন, রাজ্যপাল ধনখড় তখন দিল্লিতে। বৃহস্পতিবারই সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। তার আগে সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়েছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে প্রায় ৪০ মিনিট বৈঠকও করেন ধনখড়।
আরও পড়ুন: কেন্দ্র নিরাপত্তা তুলল মুকুলের, দিল রাজ্য, ছিল ‘জেড’, হল ‘ওয়াই’ নিরাপত্তা
একথা তামাম বঙ্গবাসী জানেন যে রাজ্যপাল বিজেপির জন্য প্রচণ্ড খেটেছেন। শাসক দলকে বিব্রত করার চেষ্টায় তিনি দিলীপ ঘোষকেও পিছনে ফেলছেন। যে কারণে বাংলায় অনেকেই তাঁকে রাজ্যপাল না বলে ‘পদ্মপাল’ বলে থাকেন। রাজ্যপাল পদের যে অবনমন তিনি ঘটিয়েছেন তেমনটা আগে হয়নি। তিনি সর্বদা শাহ ও মোদিকে তুষ্ট করতেই ব্যস্ত থেকেছেন। বাংলার অতি সাধারণ লোককে প্রশ্ন করলেও রাজ্যপাল সম্পর্কে এমন ধারণাই সামনে আসছে।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠকের পরেই রাজ্যপালের এই দিল্লি সফর নিয়ে নানা জল্পনা ছড়িয়েছে। সম্প্রতি ‘ভোট-পরবর্তী হিংসা’ নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে একের পর এক টুইট করেছেন রাজ্যপাল। রাজ্যকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় চিঠিও লিখেছেন তিনি। পরোক্ষে বলেছেন, রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। এর পরেই রাজ্যপালের দিল্লি সফর নিয়ে তাই স্বভাবতই কৌতূহল রাজনৈতিক মহলে।
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের একের এক টুইট প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা সরাসরিই বলেন, ‘বাচ্চা ছেলে হলে তা-ও বকে চুপ করানো যায়! কেউ কেউ রাজ্যে হিংসা পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু আদৌ কি কোনও হিংসার পরিবেশ তৈরি হয়েছে? যাঁরা হিংসা দেখছেন, তাঁদের চোখে ন্যাবা হয়েছে।’
Governor WB Shri Jagdeep Dhankhar along with Smt Sudesh Dhankhar made a courtesy call to President of India Hon’ble Shri Ram Nath Kovind and First Lady Smt. Savita Kovind at Rashtrapati Bhawan @rashtrapatibhvn today at 11.30 am. pic.twitter.com/7MK7wzlKms
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) June 17, 2021
রাজনৈতিক লড়াইয়ে বিজেপি পর্যদুস্ত হয়েছে। এখন তাদের মূল লক্ষ গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতায় আসা বাংলার সরকারকে বিব্রত করা। বাংলায় বিজেপির যা অবস্থা তাতে নিজেদের সংগঠন টিকিয়ে রাখায় তাদের পক্ষে চাপের। ফলে দিল্লি থেকে বসে কলকাঠি নাড়তে চাইছে বিজেপি। অনেকের দাবি পশ্চিমবঙ্গে হিংসা হচ্ছে এই অজুহাতে কেন্দ্র মমতার সরকারকে চাপে ফেলার কৌশল নিচ্ছে। সেই কৌশল বাস্তব করার লক্ষেই দিল্লি গিয়েছেন রাজ্যপাল। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখাও করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: নতুন পাসপোর্টে জেরুজালেমকে ‘অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চল’ লিখল যুক্তরাজ্য