ঘরের ছেলে ঘরে ফিরেছে, মুকুলকে পাশে বসিয়ে সদর্প ঘোষণা মমতার

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

সব জল্পনা অবসান। তৃণমূল ভবনে ফিরল সেই পুরনো ছবি। পাশাপাশি আসনে বসলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুকুল রায়। শুরুতেই মমতা বললেন, ‘মুকুল আমাদের ঘরেরই ছেলে। ঘরে ফিরল।’ সভাঘরে মুকুল রায় ও শুভ্রাংশুকে উত্তরীয় পরে দলে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সভাঘরে উপস্থিত ছিলেন সুব্রত মুখার্জি, জাভেদ খান, সুব্রত বক্সি, ফিরহাদ হাকিম, পার্থ চট্টপাধ্যায়-সহ দলের প্রথম সারির সব নেতারা।

চার বছর পর বিজেপি সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় (Mukul Roy) ফিরলেন তৃণমূলে (TMC)। শুক্রবার তৃণমূল ভবনে দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করলেন। সঙ্গে পুত্র শুভ্রাংশুও। পিতাপুত্রের প্রত্যাবর্তনে আরও চাঙ্গা ঘাসফুল শিবিরও। তাঁকে  ‘ঘরের ছেলে’ বলে স্বাগত জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। ৬৭ বছর বয়সে ফের রাজনৈতিক কেরিয়ারে নতুন ধাপে পা রাখলেন মুকুল। এবার নতুন দায়িত্ব নেওয়ার পালা। তৃণমূলে যোগদানের পর তিনি বললেন,  ”বিজেপি থেকে বেরিয়ে খুব ভাল লাগছে। নতুন আঙিনায় এসেছি, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে, কথা হচ্ছে। আর এটা ভেবে ভাল লাগছে, বাংলা আবার তার নিজের জায়গায় ফিরবে। সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন মমতা।”

নভেম্বর, ২০১৭। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক দল তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন তৃণমূলের তৎকালীন সর্বভারতীয় সম্পাদক মুকুল রায়। পাশে ছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। কেন, কী ভেবে তিনি বিজেপিতে (BJP) যোগ দিচ্ছেন, তা নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্যও রেখেছিলেন। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে নারদ (Narada case) স্টিং অপারেশনের ভিডিওতে তৃণমূলের অন্যান্য নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে মুকুল রায়কেও দেখা গিয়েছিল। তা নিয়ে তোলপাড় হলেও, নির্বাচনে কার্যত তা ছাপ ফেলতে পারেনি। তৃণমূল হাসতে হাসতেই ফের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছিল। তবে মুকুল রায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়দের উপর চাপ বাড়ে। রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশের বিশ্বাস, সেই চাপেই বছর খানেক বাদে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে পা রেখেছিলেন মুকুল। তারও কয়েক বছর পর তাঁর ছেলে শুভ্রাংশুও (Subhrangsu Roy) ‘ফুল’বদল করেন। তবে একুশের নির্বাচনে চেনা জমিতেও হারের পর ইঙ্গিতপূর্ণ ফেসবুক পোস্টে বুঝিয়েছিলেন, বিজেপিতে বীতশ্রদ্ধ  শুভ্রাংশু।

আরও পড়ুন: আজ মোদির কাছে শুভেন্দু, ৩৫৬ এর ছক কষতে দিল্লি গেলেন সৌমিত্র-অর্জুন-নিশীথরা!

এরপর ২০২০ সালে দলের হয়ে ভাল কাজ করার পুরস্কার হিসেবে বিজেপিতে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির দায়িত্ব পান। একুশের বিধানসভা ভোটে প্রায় প্রচার ছাড়াই কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে বড় ব্যবধানে জিতেছেন তিনি। তা সত্ত্বেও অবশ্য বিধানসভায় বিরোধী দলনেতার দৌড়ে তাঁকে পিছনে ফেলে পদ পেয়ে গিয়েছেন নন্দীগ্রামের ‘জায়ান্ট কিলার’ (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানো) শুভেন্দু অধিকারী, তুলনায় যিনি বিজেপিতে অনেক নবীন। ফলে একটা অভিমান ছিলই বঙ্গ রাজনীতির ‘চাণক্য’র। সম্প্রতি স্ত্রীর অসুস্থতার সময়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে জল্পনা উসকে ওঠে, এ কি নিছকই সৌজন্যের নজির নাকি রয়েছে কোনও গূঢ় রাজনীতির রসায়ন?

শুক্রবার দেখা গেল, রসায়নই সত্য। কেরিয়ারের তরী পুরনো শিবিরেই ভিড়িয়ে দিলেন মুকুল রায়। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কালীঘাটের বাড়িতে দেখা করে তৃণমূল ভবনে আসেন।

এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘মুকুলের সঙ্গে যাঁরা দল ছেড়েছিলেন, তাঁরা ফিরতে চাইলে দল সিদ্ধান্ত নেবে। তবে নির্বাচনের আগে যাঁরা গদ্দারি করেছে, সেই চরমপন্থীদের দলে ফেরানো হবে না। মমতা বলেন, ‘মুকুল দল বদল করলেও ভোটের সময় আমাদের দলের নামে একটাও খারাপ কথা বলেনি।’ কিন্তু ভোটের সময় যারা তৃণমূল সম্পর্কে কটূ কথা বলেছে তাদের ফেরানো হবে না। এ ক্ষেত্রে ‘নরমপন্থী’ ‘চরমপন্থী’ তত্ত্বের কথা ফের বললেন মমতা। মুকুলকে ফেরানো হলেও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সোনালী গুহ সম্পর্কে মুখ খুলতে রাজি নন তিনি।

মমতা বললেন, ‘ওল্ড ইজ গোল্ড।দল আগে থেকেই শক্তিশালী ছিল। আমরা বিপুল জয়ও পেয়েছি। কিন্তু মুকুল পুরনো ছেলে। বিজেপিতে মুকুল ভাল ছিল না। ওর শরীরও খারাপ হয়ে যাচ্ছিল।এখানে এসে মুকুল শান্তি পাবে।’ বিজেপিতে মুকুলকে এজেন্সির ভয় দেখানো হচ্ছিল বলেও মন্তব্য করেছেন মমতা। তাঁর দাবি, বিজেপি নির্দয় দল। তাই বিজেপি করা যায় না।

মুকুলের দলবদলে স্বাভাবিকভাবেই ঘুরে ফিরে সামনে আসছে সারদা-নারদা প্রসঙ্গ। আর সেই প্রশ্নের জবাবে ক্ষুব্ধ মমতা বলেন, ‘মুকুল রায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছে, এটাই ফাইনাল। বিজেপি যা করে আমরা তা করি না। ভয়ে নয়, নিজের ইচ্ছেয় ফিরে এসেছে মুকুল। বিজেপি সাধারণ মানুষের দল নয়, জমিদারদের দল, এজেন্সির দল। এজেন্সিগুলো বিজেপির মুখপাত্র।

আরও পড়ুন: শোনো কমরেড শোনো…এই সিপিমের ইতিকথা !

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest