দলত্যাগী শিশির অধিকারী (Sisir Adhikari) ও সুনীল মণ্ডলের (Sunil Mandal) সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে এবার লোকসভার স্পিকারকে ফোন করলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (Sudip Banerjee)। অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেন তিনি। বিষয়টি দেখা হবে বলে জানিয়েছে ওম বিড়লা।
বৃহস্পতিবার সকালে সুদীপ ফোন করেন স্পিকারকে। পরে সুদীপ বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে স্পিকারের কথা হয়েছে। আমি ওঁকে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেয়েছি। উনি জানিয়েছেন, অনেক দিন তিনি সংসদে যেতে পারেননি। বৃহস্পতিবার উনি সংসদ ভবনে যাবেন। সেখানে গিয়ে নথিপত্র খতিয়ে দেখবেন।’’
আরও পড়ুন : দেশদ্রোহিতা মামলা: ‘প্রত্যেক সাংবাদিকই সুরক্ষা পেতে পারেন’, মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের
সুদীপ আরও বলেন, ‘‘আমার ধারনা, স্পিকার অন্তত ওই দুই সাংসদকে ডেকে জানতে চাইবেন, তাঁরা কোন দলে রয়েছেন। তৃণমূল না বিজেপি? এটুকু তো উনি করতেই পারেন। করা উচিত।’’ সুদীপের বক্তব্য, দু-চার দিন পরে তিনি স্পিকারের কাছে আবার বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইবেন। তৃণমূলের লোকসভার দলনেতার কথায়, ‘‘আমি দু-চার দিন পরে আবার ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ করব।’’
গত নভেম্বরে দলবদলের হিড়িক পড়েছিল তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন একাধিক সাংসদ, বিধায়ক। শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়ক ও মন্ত্রীপদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপি শিবিরে যোগ দিলেও অনেকেই তেমনটা করেননি। দল ছাড়লেও পদ ছাড়েননি অনেকেই। তাঁদের মধ্যে একজন সাংসদ সুনীল মণ্ডল। শুভেন্দু অধিকারীকে অনুসরণ করে গেরুয়া শিবিরের অংশ হলেও সাংসদ পদ ছাড়েননি তিনি।
অন্যদিকে, শিশির অধিকারীকে বিজেপির মঞ্চে এবং বিজেপির (BJP) হয়ে ভোট প্রচার করতে দেখা গেলেও তিনিও এখনও সাংসদপদ ছাড়েননি। সেই কারণে আগেই এই দুই সাংসদের সাংসদ পদ খারিজের দাবি জানিয়েছিল তৃণমূল। আগে ওম বিড়লার সঙ্গে এবিষয়ে কথাও বলেছিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় (Saugata Roy)।
তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত ওই দুই সাংসদের লোকসভার সদস্যপদ খারিজের দাবি জানিয়ে স্পিকারের কাছে আগেই দরবার করেছেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ। গত ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল। তার পরে বিধানসভা ভোটের প্রচারে ২১ মার্চ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরায় এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই সভায় হাজির হয়ে তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করেছিলেন কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির।
দলত্যাগ বিরোধী আইনে সুনীলের সাসংদ পদ খারিজের দাবিতে গত ৪ জানুয়ারি স্পিকারকে প্রথম চিঠি দিয়েছিলেন সুদীপ। তার পর ২ মে ভোটপর্ব মিটে যেতে গত ১২ মে আবার সুনীলের সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দেন সুদীপ। একই ভাবে দলত্যাগ-বিরোধী আইনেই শিশিরেরও সাংসদপদ খারিজের দাবিতে স্পিকারকে চিঠি দেন সুদীপ। কিন্তু ওই দুই বিষয়েই লোকসভার সচিবালয়ের তরফে কোনও উচ্চবাচ্য এখনও না হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে স্পিকারকে ফোন করে শিশির-সুনীলকে অপসারণের দাবি জানান সুদীপ।
আরও পড়ুন : ফের রক্তাক্ত কাশ্মীর, এবার গুলিতে নিহত বিজেপি নেতা