দিল্লি সফরে যাওয়ার আগে দলের রাজ্যসভা প্রার্থী ঠিক করে ফেললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসার ভারতীর প্রাক্তন অধিকর্তা জহর সরকারকে তৃণমূলের প্রার্থী মনোনীত করলেন তিনি। শনিবার দলের টুইটার হ্যান্ডলে সে কথা ঘোষণা করা হয়। জন পরিষেবায় ৪২ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন জহরকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করা হচ্ছে বলে জানায় তারা।
১৯৫২ সালে তাঁর জন্ম। সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল, প্রেসিডেন্সি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী জহর সরকার। বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। পরে তিনি আইএএস হন। সেই সময়কালে তিনি বর্ধমান ও উত্তর ২৪ পরগনায় একাধিক সমস্য়া ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তিনি অত্যন্ত শক্ত হাতে মোকাবিলা করেন। অর্থ দফতরেরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তিনি সামলেছেন। সেলস ট্যাক্স কমিশনার হিসাবেও তিনি কর্মরত ছিলেন এই রাজ্যেই। পরবর্তী সময়ে ২০০৬ সালে তাঁকে ভারত সরকারের তরফে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়। সেই সময় মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগের অতিরিক্ত সচিবের দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়। শিল্পায়নের এক নতুন পথের সূচণা তিনি করেছিলেন বলেও অভিজ্ঞ মহলের মত। রাজ্যসভার শূণ্য পদে সেই জহর সরকারকেই মনোনীত করল তৃণমূল।
আরও পড়ুন: বাজার অগ্নিমূল্য অথচ ১ টাকায় বিকোচ্ছে চপ-সিঙারা, লাভও হচ্ছে দোকানির! জানেন আসল রহস্য?
২০২০ সালের ৩ এপ্রিল রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ নির্বাচিত হন দীনেশ ত্রিবেদী। ২০২৬ সালের ২ এপ্রিল পর্যন্ত মেয়াদ ছিল তাঁর। কিন্তু গত ১২ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল থেকেও বেরিয়ে আসেন দীনেশ। যোগ দেন বিজেপি-তে। সেই জায়গাতেই এ বার জহরকে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করে দিল তৃণমূল। আগামী ৯ অগস্ট ওই আসনে উপনির্বাচন এবং ফল ঘোষণা।
We are delighted to nominate Mr. @jawharsircar in the Upper House of the Parliament.
Mr. Sircar spent nearly 42 years in public service & was also the former CEO of Prasar Bharati. His invaluable contribution to public service shall help us serve our country even better!
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) July 24, 2021
শনিবার তৃণমূলের ঘোষণার পরই আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে জহরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘অনেক দিন পর শনিবার সকালে উনি (মমতা) ফোন করেন আমাকে। জানান, রাজ্যসভার জন্য দলের তরফে আমাকে ভাবা হচ্ছে। জানতে চান, আমি এই প্রস্তাবে রাজি কি না। একটু ভেবে বলি, কোনও আপত্তি নেই। তার পরই দলের তরফে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়।’’ মাঝে অনেক দিন মমতার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না তাঁর। তাই এত দিন পর ফোন করে সরাসরি রাজ্যসভায় প্রার্থী করার প্রস্তাব দেওয়ায়, এখনও ঘোর কাটছে না বলে জানিয়েছেন জহর।
অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার জহরের সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের সম্পর্ক আগাগোড়াই ভাল। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে মমতা সরকারের টানাপড়েনের সময়, আলাপনেরই পক্ষ নিয়েছিলেন তিনি। আলাপনকে দিল্লিতে তলব করায় মোদী-শাহ পাগল হয়ে গিয়েছেন বলে টুইটারে মুখ খুলেছিলেন। সেই সময় তিনি লিখেছিলেন, ‘মোদী-শাহ কি পাগল হয়ে গিয়েছেন? পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবসর নিতে আর একদিন বাকি৷ এখন তাঁকে দিল্লিতে বদলি করা হচ্ছে? মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় আরও তিন মাস পদে থাকুন। ঘূর্ণিঝড়ের ত্রাণ বণ্টন এবং করোনার পরিস্থিতি সামাল দেওয়ায় ব্যাঘাত ঘটাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অন্তর্ঘাত এটা৷ বাংলার মানুষ বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার বদলা।’
আরও পড়ুন: সরষের মধ্যেই ভূত! কন্যাশ্রীর প্রায় ৮ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ধৃত পিতা-পুত্র