বিধি-নিষেধের দ্বিতীয় পর্ব শেষ হচ্ছে ১৫ জুন। এবার এই চলতি মাসেই লোকাল ট্রেন চালাতে চেয়ে রাজ্যকে চিঠি দিল রেল। সূত্রের খবর, পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেল উভয়েই রাজ্যকে চিঠি দিয়েছে অনুমতি চেয়ে। রাজ্যকে জানানো হয়েছে বহু লোক রুজির তাগিদে রাস্তায় বের হচ্ছে। এই অবস্থায় এ ভাবে কম ট্রেন চললে হিতে বিপরীত হতে পারে, বাড়তে পারে কোভিড। তাই রেল চাইছে পরিষেবা অবিলম্বে বাড়ানো হোক।
মেট্রো কর্তৃপক্ষ অবশ্য রেলের মতো চিঠি দিয়ে রাজ্যের কাছে পরিষেবা শুরু করার আগ্রহ দেখিয়ে এখনও আবেদন জানাননি। তবে পরিষেবা শুরু করার সব রকম প্রস্তুতি তাঁদের রয়েছে বলে জানিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সংক্রমণ এড়াতে তাঁদের কর্মীদের টিকাকরণের উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে বলে মেট্রো সূত্রের দাবি।
সাধারণের জন্য লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকলেও নিজেদের কর্মীদের জন্য পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেল সীমিত সংখ্যক ট্রেন চালাচ্ছে। তাতে স্বাস্থ্য, ব্যাঙ্ক, টেলিকমের মতো জরুরি পরিষেবায় যুক্ত কর্মীদের মাসিক টিকিট কেটে ওঠার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। রেলের খবর, পূর্ব রেলের হাওড়া, শিয়ালদহ, আসানসোল এবং মালদহ এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়গপুর ডিভিশনে অল্প সংখ্যায় কিছু লোকাল চলছে। কিন্তু এই পরিষেবায় সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে শিয়ালদহ ডিভিশনে। বিধিনিষেধ সত্ত্বেও ১২ কামরার লোকাল ট্রেন সেখানে ভিড়ে উপচে পড়ছে। ওই ট্রেনগুলিতে প্রথম ৬টি কামরা রেলকর্মীদের জন্য এবং পরের কামরাগুলি জরুরি পরিষেবায় যুক্ত কর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট।
আরও পড়ুন: তৃণমূলে ফিরেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রত্যাহার মুকুলের, পেলেন রাজ্য নিরাপত্তা
রেলকর্তাদের বক্তব্য, সারা দিনে প্রায় ৩০০ ট্রেন চালিয়েও শিয়ালদহ ডিভিশনে যাত্রীর ভিড় সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। তাই দূরত্বি-বিধি বজায় রাখার স্বার্থেই ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি উঠেছে। এ প্রসঙ্গে এক রেল কর্তা বলেন, ‘‘যাত্রীদের চাপ যে ভাবে বাড়ছে তাতে ভিড় এড়াতে বেশি ট্রেন চালানো জরুরি। তবে, সেই সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে রাজ্য সরকার কী ভাবে বিধিনিষেধে ছাড় দিচ্ছেন তার উপরে। রাজ্য চাইলে আমরা সব লোকাল ট্রেন চালাতে প্রস্তুত।’’
প্রসঙ্গত, গত বছর আনলক পর্বের শুরুতে লোকাল ট্রেন বা মেট্রো চলার অনুমতি দেয়নি সরকার। সরকারি বাসের উপর নির্ভর করেই গণপরিবহণ চালু করা হয়েছিল। প্রচুর সংখ্যায় বাস চালাতে গিয়ে জ্বালানির বিপুল খরচের ধাক্কা সইতে হয়েছিল সরকারি পরিবহণ নিগমগুলিকে। যা তাদের আর্থিক স্বাস্থ্যে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলেছে বলে জানাচ্ছেন পরিবহণ নিগমের একাধিক আধিকারিক। তাঁরা এ-ও বলছেন, এখনও পর্যন্ত লিটার প্রতি ডিজেলের দাম গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৬ টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপুল খরচ করার সামর্থ্য আরও কমেছে।
বস্তুত, বিধিনিষেধ পর্বেও স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াতের জন্য কলকাতা এবং শহরতলিতে রাজ্য পরিবহণ নিগমের ১৭০টি বাস চলছে। হাই কোর্ট এবং জেলার কিছু হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াতের জন্য আরও চল্লিশটি বাস চালাচ্ছে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম। সেই চাহিদা মিটিয়ে আরও কত সংখ্যক বাস রাস্তায় নামানো যেতে পারে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘সাঁইবাড়ি’ নিয়ে বিকাশ–মীনাক্ষীর পোস্ট ঘিরে সিপিএম–কংগ্রেস ‘নেটযুদ্ধ’ চরমে