করোনা পরবর্তী শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। কলকাতা থেকে চেন্নাই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকদের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে মঙ্গলবার সকালে চেন্নাইয়ের হাসপাতালে প্রয়াত হলেন মুকুল রায়ের (Mukul Roy) স্ত্রী কৃষ্ণা রায়। ফুসফুসের সমস্যা চলছিল তাঁর। তা প্রতিস্থাপনের জন্য দক্ষিণের চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হয়েছিলেন মুকুল রায়, শুভ্রাংশু রায়রা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
আরও পড়ুন : পঞ্চায়েত অফিসে বিক্ষোভ, আরাবুলপুত্রর গাড়ি ভাঙচুর, নতুন করে রণক্ষেত্র ভাঙড়
তাঁর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন থেকে মমতার ওই শোকবার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘বিধায়ক মুকুল রায়ের স্ত্রী কৃষ্ণা রায়ের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। কৃষ্ণা দেবী বিভিন্ন জনহিতকর কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আমি তাঁকে ঘনিষ্ঠ ভাবে চিনতাম। তিনি মানুষের ভাল চাইতেন।’মমতা তাঁর শোক বার্তায় শুভ্রাংশুর এবং মুকুলের নাম উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘আমি কৃষ্ণা রায়ের স্বামী মুকুল রায় ও পুত্র শুভ্রাংশু রায় এবং পরিবার পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’
মায়ের মরদেহ নিয়ে কলকাতায় ফিরবেন শুভ্রাংশুই। বুধবার তাঁর শহরে ফেরার কথা। মুকুল অবশ্য কলকাতাতেই আছেন। তিনি চেন্নাইয়ে যাচ্ছেন না।
গত ১২ মে করোনায় আক্রান্ত হন মুকুল রায় ও তাঁর স্ত্রী। প্রথমে মুকুল রায় সল্টলেকের একটি গেস্ট হাউসে আইসোলেশনে ছিলেন। পরে তিনি বাড়িতেই ছিলেন। কিন্তু, মুকুলের স্ত্রীকে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু, তাঁর শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে শুরু করে। তাঁকে একমো সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। করোনামুক্ত হলেও কোভিড পরবর্তী জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। করোনার কারণে ফুসফুসের ক্ষতি হয়ে যায়। এরপরেই আরও ভালো চিকিত্সার জন্যে চেন্নাই থেকে চিকিৎসকের একটি দল কলকাতায় এসে তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করে ফুসফুস প্রতিস্থাপনের কথা বলেন। সেই মতো কৃষ্ণাকে চেন্নাইয়ে নিয়ে যাওয়া। সেখানেই একটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। কিন্তু, শেষ রক্ষা হল না। আজ ভোরে চেন্নাইয়ের হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।
কৃষ্ণাদেবীর অসুস্থতা যদিও রাজনৈতিক বিভেদ ভুলিয়ে কাছাকাছি এনেছিল মুকুল-শুভ্রাংশুদের একদা প্রাক্তন দল তৃণমূল নেতাদের। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় নিজে হাসপাতালে তাঁকে দেখতে গিয়ে শুভ্রাংশুকে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন। সৌজন্যের এক নয়া নজির তৈরি হয়েছিল। এরপর ঘটনা পরম্পরায় সপুত্র মুকুল রায়ের বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরা এবং তারপরপরই কৃষ্ণাদেবীর চিকিৎসায় চেন্নাই যাওয়ার উদ্যোগ। তাঁর ফুসফুসের অবস্থা ক্রমাগত জটিল হতে থাকায় প্রতিস্থাপনের জন্যই চেন্নাইয়ে যাওয়া। কিন্তু তাতেও লাভ হল না। জীবনে ফিরতে পারলেন না কৃষ্ণা রায়। খবর শোনার পর মুকুল রায় ও শুভ্রাংশুর প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন : আগে বিজেপি নেতাদের শেখান! ভাগবতকে তোপ ওয়েইসির, কটাক্ষ দিগ্বিজয়ের