গ্রেটার কোচবিহার আন্দোলনের নেতা বংশীবদন বর্মনের পৃথক রাজ্যের দাবিকে প্রকাশ্যে সমর্থন আদিবাসী সংগঠন ভারতীয় মূলনিবাসী আদিবাসী বিকাশ পরিষদের নেতা তথা তৃণমূলের এসসি এসটি সেলের সাধারণ সম্পাদক রাজেশ লাকড়া (Rajesh Lakra) ওরফে টাইগারের। পৃথক রাজ্যের দাবিতে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখাও করতে চলেছেন রাজেশ (Rajesh Lakra) ও বংশীবদন। ফলে, বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
তৃণমূলের এসটি-এসসি সেলের সাধারণ সম্পাদক রাজেশ লকরা বলেছেন, “২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর যখন তৃণমূলে যোগদান করি তখনও আমার দাবি ছিলো উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলাকে পঞ্চম তপশীলের আওতায় এনে স্বায়ত্তশাসন ঘোষণার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাগজে ৯০ শতাংশ কাজ করেই দিয়েছেন, সেটার সাংবিধানিক রূপ পেতে প্রয়োজন জেলার একটা এরিয়া ডিমারকেশনের। সেই সাংবিধানিক স্বীকৃতি না মেলায় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন আদিবাসীরা।”
আরও পড়ুন: রবি ঠাকুরের মূর্তির ঠিক উপরে জুতোর বিজ্ঞাপন, বিতর্ক দুর্গাপুরে
দলীয় নীতির উল্টো পথে হেঁটে কেন স্বায়ত্তশাসনের দাবি করছেন রাজেশ ওরফে টাইগার? নিজের বক্তব্যের সপক্ষে বলতে গিয়ে তৃণমূলের আদিবাসী নেতা বলেছেন, “১৮৩৪ সালে আদিবাসীদের স্বায়ত্তশাসন দিতে ইংরেজদের সঙ্গে আদিবাসীদের একটা চুক্তি হয়েছিল। ইংরেজদের এমন বহু চুক্তি রয়েছে যা দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও কার্যকর রয়েছে। সেই চুক্তি অনুসারে ইংরেজরা আদিবাসীদের স্বায়ত্তশাসন দিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গের চারটি জেলা, সাওতাল পরগনা, ছোটনাগপুর অঞ্চলকে। উত্তরবঙ্গের চারটি জেলার ৪৪৬ টি মৌজাকে নিয়ে সেই চুক্তিরই সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছি।”
বিশ্ব আদিবাসী দিবস উপলক্ষে পৃথক গ্রেটার কোচবিহার রাজ্যের দাবিতে সরব হয়েছেন বংশীবদন বর্মন। এই দাবির পক্ষেও মত দিয়েছেন রাজেশ লকরা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “বংশীবদন বাবুকে বলেছি আমরা দুজনেই ভূমিপূত্র। আমরা দুজনে একত্রিতভাবেই লড়াই করে নিজেদের দাবি আদায় করব। আমি পৃথক গ্রেটার কোচবিহার রাজ্যের দাবিকে সমর্থন করছি। সংবিধান গত ভাবে যেটুকু আমাদের প্রাপ্য সেটাই চাইছি। প্রাপ্য মিলছে না বলেই উত্তরবঙ্গে বঞ্চিত আদিবাসীরা”
তাহলে কী বিজেপি সাংসদ জন বার্লার পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবিকেও সমর্থন করেন তৃণমূল নেতা রাজেশ? তাঁর জবাব, “উত্তরবঙ্গ আলাদা রাজ্য। এটার কোনো অধিকার নেই। উনি রাজনীতি করার জন্য এবং ভোটের জন্য মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। উনি গ্রেটার কোচবিহার কেন বলছেন না? স্বায়ত্বশাসন কেন বলছেন না? আমরা কোনও রাজনীতি করতে নয়। সংবিধানগতভাবে যেটুকু আমাদের প্রাপ্য সেটাই চাইছি।”
আরও পড়ুন: মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কেন্দ্র গুরুত্ব দেয়নি: ঘাটালের জলে দাঁড়িয়ে বললেন মমতা