Site icon The News Nest

সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের পর ‘অশালীন’ মন্তব্য রূপার, সমালোচনায় বিদ্ধ বিজেপি নেত্রী

roopa

কালীপুজোর রাতে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আকস্মিক প্রয়াণে চমকে উঠেছে বাংলার রাজনীতি। চিরকাল অ-বামপন্থী রাজনীতি করলেও তাঁর চলে যাওয়ার দিনে রাজনৈতিক ভাগাভাগি নেই। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে বিজেপি-র দিলীপ ঘোষ, সিপিএম-এর বিমান বসু থেকে পিডিএস-এর সমীর পুততুণ্ড বা কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী— সুব্রতর প্রয়াণে সকলেই শোকে মুহ্যমান। সেই আবহে যদিও ব্যতিক্রমী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। অভিনেত্রী তথা বিজেপি সাংসদ রূপার কটাক্ষ মিশ্রিত নেটমাধ্যম পোস্ট ইতিমধ্যে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে রাজনীতির আঙিনায়। বিজেপি নেত্রীর ‘রুচি’, পোস্টে ‘ভাষা’র ব্যবহার এবং ‘সময়’ জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সব মহলে।

সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের ২৪ ঘণ্টা কাটার আগে ফেসবুকে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন বিজেপি নেত্রী। ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন. ”ধ্যাৎ, সবাই যেন হঠাৎ বালিগঞ্জে একা হয়ে গেল। সরি বস!”   শুধু এখানেই থামেননি রূপা। বরং ওই পোস্টেই তাঁর একের পর এক মন্তব্য নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। মহিলা মোর্চার প্রাক্তন রাজ্য সভানেত্রী লিখেছেন,”তিস্তাকে নিয়েছ বস্। কিছু তো ফেরত নেবে মা কালী।” সদ্য দুর্ঘটনায় মৃত বিজেপি কাউন্সিলর তিস্তার কথাই তিনি বলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু তিস্তার মৃত্যুর সঙ্গে সুব্রতর কি যোগ তা স্পষ্ট করেননি রূপা।

একডালিয়া এভারগ্রিনের পুজোর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িয়েছিলেন রূপা। সেই প্রসঙ্গেই আর একটি জায়গায় রূপা লিখেছেন,”পুজো জাঁকজমক করা আর টাকা তোলা ছাড়া যার কোনও কন্ট্রিবিউশন ছিল না। তার জন্য আমার কোনও সম্মান নেই। সরি বস।”  এরপরই রূপার করা পোস্টের নিচে একের পর এক কমেন্ট পড়তে শুরু করে। যার জবাব দিতে গিয়েই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন এই বিজেপি নেত্রী। প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে মাত্রাছাড়া আক্রমণ করে বসেন। দাবি করেন, ‘এরাই (সুব্রত মুখোপাধ্যায়) পশ্চিমবঙ্গের অনেক ক্ষতির কারণ।’

মন্তব্য বাক্সে রূপা একটি বিস্ফোরক দাবিও করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘২০২১ ভোটের আগে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ‘ডিল’ পছন্দ হয়নি তাঁর।’ আবার এক জায়গায় তাঁর সঙ্গে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সম্পর্ক নিয়েও খোলসা করেছেন বিজেপি সাংসদ।

রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রীর প্রয়াণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় কেন এই ধরনের কুৎসিত মন্তব্য করতে গেলেন, তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন নেটিজেনদের একাংশও। শুধু তৃণমূল বা কংগ্রেসই নয়, সিপিএম থেকে বিজেপির প্রাক্তন, বর্তমান রাজ্য সভাপতি, মুখপাত্র, নেতা, সকলেই যখন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বর্ণময় রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণে মগ্ন, তখন কেন এমন ভাবে বিতর্কে জড়ালেন বিজেপি নেত্রী? তাঁর সমালোচকরা বলছেন, প্রচার পাওয়ার কী উদগ্র বাসনা! আর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, রাজ্যের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে রূপার ব্যক্তিগত ক্ষোভ বা আপত্তি থাকতেই পারে। কিন্তু তা সুব্রতর জীবদ্দশায় কখনও প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন কি রূপা? তা হলে তাঁর প্রয়াণের দিনে এমন পোস্ট কেন?

Exit mobile version