বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা দাবি করেছিলেন, বাংলায় ‘ইসবার দোশো পার’। কিন্তু শাহ-নাড্ডাদের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি গেরুয়া শিবির। সত্তরেই থেমেছিল তাদের ‘জয়রথ’। এর পর দু’দফা উপনির্বাচন হয়ে গেল রাজ্যে। তাতেও দাঁত ফোটাতে ব্যর্থ তারা। উলটে ছ’ মাসের মধ্যে বিজেপির হাতছাড়া হল আরও দু’টি বিধানসভা আসন। শক্তিক্ষয় হল গেরুয়া গড়েও। তিন কেন্দ্রেই জামানত খোয়ালেন তিন বিজেপি প্রার্থী।
উপনির্বাচনে চার আসনেই জয় হয়েছে তৃণমূলের। চার বিধানসভা আসনের ভোটে কার্যত ধুয়ে মুছে সাফ বিজেপি (BJP)। চার কেন্দ্রেই বিপুল ব্যবধানে জিতেছে ঘাসফুল শিবির। কোথাও লক্ষাধিক ভোট তো কোথাও হাফ লাখ ভোটে বিজেপিকে দুরমুশ করেছে তৃণমূল। এমনকী, পদ্মশিবিরের শক্ত ঘাঁটি কোচবিহারের দিনহাটা আর নদিয়ার শান্তিপুর কেন্দ্রেও মুখ থুবড়ে পড়ল তারা। গোসাবায় ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ১৫১ ভোটে জয় তৃণমূলের। জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মণ্ডল। অন্যদিকে, দিনহাটায় ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৮৮ ভোটে জয়ী উদয়ন গুহ। খড়দহে তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা শোভনদেব চ্যাটার্জি জয়ী হয়েছেন ৯৩ হাজার ৮৩২ ভোটে। শান্তিপুরে ৬৩ হাজার ৮৯২ ভোটে জয়ী তৃণমূলের ব্রজকিশোর গোস্বামী।
জয়ের পরই প্রার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি। তিনি লেখেন, ‘এই জয় মানুষের জয়, বাংলা সর্বদা অপপ্রচার ও ঘৃণার রাজনীতির পরিবর্তে উন্নয়ন ও ঐক্যকে বেছে নেয় এটা তারই প্রমাণ। জনগণের আশীর্বাদে আমরা বাংলাকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’
My heartiest congratulations to all the four winning candidates!
This victory is people's victory, as it shows how Bengal will always choose development and unity over propaganda and hate politics. With people's blessings, we promise to continue taking Bengal to greater heights!
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) November 2, 2021
প্রসঙ্গত, একুশের ভোটে দিনহাটা ও শান্তিপুরে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থীরা। কিন্তু উপনির্বাচনে তার মধ্যে একটি আসনও ধরে রাখতে পারল না তারা। বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। গোসাবায় ২৩ হাজার ৭০৯ ভোটে হেরেছিল বিজেপি। কিন্তু এবার ভোট ছয়গুণ বাড়িয়ে রেকর্ড মার্জিনে জয়ী হয়েছেন সুব্রত মণ্ডল। খড়দহে একুশের ভোটে ২৮ হাজারের কিছু বেশি ভোটে জয়ী হয়েছিলেন কাজল সিনহা। সেই আসনে এবার শোভনদেব চ্যাটার্জির জয়ের পরিমাণ বাড়ল প্রায় ৩ গুণ। স্বাভাবিকভাবেই এই জয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল।
সবমিলিয়ে ভোটের ময়দানে বিজেপিকে ‘হোয়াইট ওয়াশ’ করল তৃণমূল। চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে এই হার থেকে কি শিক্ষা নেবে বিজেপি, সেটাই এখন দেখার। উলটোদিকে এই বিপুল জয় জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে যে তৃণমূলকে শক্তি জোগাবে তা বলাইবাহুল্য।