করোনার কোপে মাটি হয়েছিল ২০২০ সালের দুর্গাপুজো (Durga Puja)। করোনার নিয়মের কড়াকড়ির জেরে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসবেও মন খুলে আনন্দ করতে পারেনি রাজ্যবাসী। তথৈবচ অবস্থা ছিল ইদ কিংবা মহরমে। এ বছর আর সেই পরিস্থিতি থাকবে না বলেই মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু কেন্দ্রের নয়া নির্দেশের চিঠিতে ফের আশঙ্কার মেঘ দেখা দিয়েছে আকাশে। কী রয়েছে কেন্দ্রের চিঠিতে?
কোভিড বিধি শিকেয় তুলে যখনই জমায়েত বেড়েছে, তখনই নতুন করে প্রাণশক্তি পেয়েছে করোনাভাইরাস। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার উৎসবের মরসুমে ভিড়ে রাশ টানতে রাজ্যগুলিকে পদক্ষেপের নির্দেশ দিল কেন্দ্র। ফলে গত বছরের মতো এ বছরেও পুজোয় বেরোনো যাবে না বাড়ির বাইরে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ রাজ্যগুলিকে আজ চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, আগত উৎসবগুলিতে (মহরম, ওনাম, জন্মাষ্টমী, গণেশ চতুর্থী ও দুর্গাপুজো) রাস্তায় যেন মানুষের ঢল না-নামে। তা নিশ্চিত করতে সব রাজ্যকে স্থানীয় স্তরে বিধিনিষেধ জারি করতে হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, স্বাস্থ্য মন্ত্রক আজ যে ভাবে অক্টোবর পর্যন্ত স্থানীয় স্তরে বিধিনিষেধের পক্ষে সওয়াল করেছে, তাতে নভেম্বরের মধ্যে রাজ্যে উপনির্বাচনগুলি সেরে ফেলা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন উঠে গেল।
আরও পড়ুন: যানজটে জেরবার নিত্যযাত্রীরা, Purulia’র রাস্তায় লাওয়ারিশ ‘গরু হটাও’ অভিযানে পুলিশ
কেন্দ্র গত কালই জানিয়েছিল, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এখনও শেষ হয়নি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নতুন করে বাড়ছে সংক্রমণের হার। এই পরিস্থিতিতে উৎসবের মতো ‘সুপার স্প্রেডার ইভেন্ট’ যাতে সংক্রমণে ইন্ধন না-জোগায়, তা নিশ্চিত করতে রাজ্যগুলিকে আজ নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যসচিবকে লেখা চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, সামনেই রয়েছে মহরম (১৯ অগস্ট), ওনাম (২১ অগস্ট), জন্মাষ্টমী (৩০ অগস্ট), গণেশ চতুর্থী (১০ সেপ্টেম্বর), দুর্গাপুজো (৫-১৫ অক্টোবর)।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ এবং ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল সংস্থার মতে, এ ধরনের উৎসবগুলি পুরোমাত্রায় ‘সুপার স্প্রেডার’ হয়ে উঠতে পারে। সে ক্ষেত্রে ফের করোনা সংক্রমণ দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকবে। রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবের পরামর্শ, উৎসবের দিনগুলিতে যেন জমায়েত না-হয়, বিশেষ করে ভিড় যেন রাস্তায় নেমে না-আসে তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় স্তরে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে হবে।
পুজোয় বিধিনিষেধ জারির পরামর্শের পাশাপাশি, রাজ্যগুলিকে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান সংক্ষেপে করতে এবং সেই অনুষ্ঠানেও যাতে বিশেষ ভিড় না-হয়, সেই দিকে নজর দিতে বলেছে কেন্দ্র। ওই দিনের অনুষ্ঠানে চিকিৎসাকর্মী, সাফাইকর্মীদের মতো করোনা-যোদ্ধাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁদের কাজে উৎসাহিত করতে পরামর্শ দিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: ‘Mamata প্রধানমন্ত্রী হলে বাস্তবায়িত হবে Ghatal Master Plan’, কেন্দ্রকে খোঁচা দিয়ে দাবি দেবের