ভবানীপুরের উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করে দিল নির্বাচন কমিশন। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর হবে ভোটগ্রহণ। ফল ঘোষণা অক্টোবরের ৩ তারিখ । রাজ্যে বিগত বিধানসভা নির্বাচনের ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীন মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে প্রার্থী মারা গিয়েছিলেন। এই দুই আসনেও একই দিনে নির্বাচন হবে। ফল ঘোষণাও হবে একই দিনে। কমিশন জানিয়েছে উপনির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হবে ৬ সেপ্টেম্বর। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৩ সেপ্টেম্বর। মনোনয়ন যাচাই করা হবে ১৪ সেপ্টেম্বর। মনোনয়ন প্রত্যাহার করার শেষ দিন ১৬ সেপ্টেম্বর বলে জানিয়েছে কমিশন।
উপনির্বাচন নিয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে মতামত জানতে চেয়েছিল কমিশন (Election Commission)। সেই মতো বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজেদের মতামত জানিয়েছে। ইতিমধ্যেই ভোট নিয়ে রাজ্য প্রশাসন এবং রাজ্যের নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে কমিশন। রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে কেন্দ্র ধরে ধরে করোনার (Coronavirus) পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন। সেই সঙ্গে কমিশনকে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাদা করে চিঠি লিখে জানিয়ে দেন, রাজ্য প্রশাসন পুজোর ছুটির আগেই উপনির্বাচনের পক্ষে। রাজ্যের প্রস্তাব এবং করোনা পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখেই আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের সময় মুর্শিদাবাদের যে দুটি কেন্দ্রে ভোট করানো যায়নি, সেই কেন্দ্রগুলিতেও ভোটগ্রহণ হবে ৩০ সেপ্টেম্বরই।
পাশাপাশি উপনির্বাচন হওয়ার কথা উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় গোসাবায়। ভোটের ফল ঘোষণার আগেই করোনা সংক্রমণে মারা যান খড়দহের তৃণমূল প্রার্থী কাজল সিংহ। সেখানে জিতেছিল তৃণমূল। বিধায়ক পদে শপথ নেওয়ার পরে মারা গিয়েছেন গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। এ ছাড়া বিধানসভায় জিতেও সাংসদ পদে থেকে যাবেন বলে দিনহাটা ও শান্তিপুরের বিধায়ক-পদ ছেড়েছেন বিজেপি-র দুই সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার। কিন্তু সেই চার কেন্দ্রে এখনও উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করেনি কমিশন। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিশেষ অনুরোধেই ভবানীপুরে উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয়েছে।
অন্যান্য কেন্দ্রের তুলনায় ভবানীপুর নিয়েই মানুষের আগ্রহ বেশি। কারণ, সেখানে প্রার্থী হওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। গত বিধানসভা ভোটে ভবানীপুরে প্রার্থী হয়েছিলেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি ২১ মে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। আর তার পরেই তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, এই আসনে প্রার্থী হবেন মমতাই। তাই উপনির্বাচন ঘোষণার অনেক আগে মে মাস থেকেই ওই আসনের উপনির্বাচনের প্রস্তুতিতে নেমে পড়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা।
নিয়ম অনুযায়ী, কোনও কেন্দ্রে বিধায়কের মৃত্যু হলে বা ইস্তফা দিলে ছয় মাসের মধ্যে উপনির্বাচন হওয়া বাঞ্ছনীয়। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে তার অন্যথাও হয়েছে অনেক সময়। ৫ মে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন মমতা। সাংবিধানিক নিয়ম মেনে ৫ নভেম্বরের মধ্যে তাঁকে বিধায়ক হয়ে আসতে হবে।