রবিবার আগরতলায় জনসভা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর এই সভাতেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajib Banerejee) তৃণমূলে (TMC) প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা। ডোমজুড়ে হারের পর থেকেই বিজেপিতে ‘মোহভঙ্গ’ হয়েছিল। তখন থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসে প্রত্যাবর্তনের কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল। অবশেষে রবিবার সত্যি হতে চলেছে সেই জল্পনা। ত্রিপুরায় গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা থেকে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনটাই জানিয়েছে সংবাদসংস্থা এএনআই।
ত্রিপুরায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের উপর ধারাবাহিক আক্রমণের প্রতিবাদে আগরতলায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন সংলগ্ন রাস্তায় দুপুর একটায় জনসভা। সেখানে বক্তৃতা করবেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক। ইতিমধ্যে সভার প্রস্তুতির জন্য ত্রিপুরায় রয়েছেন রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব ও তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। যেহেতু রাজীবকে এই সভায় আসতে বলা হয়েছে, তাই তৃণমূল নেতারা ধরেই নিচ্ছেন, তাঁকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে দলে। তবে প্রকাশ্যে দলের পক্ষ থেকে কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না রাজীবও। কারণ, তাঁকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে হাওড়া জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব তো বটেই, শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের আপত্তি রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী বিজেপি-তে থেকেও নিষ্ক্রিয়। ভোটে পরাজয়ের পর আর তাঁকে দেখা যায়নি গেরুয়া শিবিরের কোনও কর্মসূচিতে। বিধানসভা ভোটের আগে চার্টার্ড ফ্লাইটে দিল্লি নিয়ে গিয়ে অমিত শাহের বাসভবনে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে দলে যোগদান করিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু নিজের কেন্দ্র ডোমজুড়ে জিততে পারেননি রাজীব। যে আসনে পাঁচ বছর আগে হাসতে-হাসতে জিতেছিলেন, সেই আসনেই স্রেফ উড়ে যান। তারপর থেকেই বিজেপির প্রতি মোহভঙ্গ শুরু হয় রাজীবের। বিজেপির অবস্থানের বিরোধিতা করেন। রাজ্য সরকারের ‘পাশে’ থাকার বার্তাও দেন রাজীব। বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন নিয়ে বিজেপি যখন সুর চড়াচ্ছে, সেই সময় ফেসবুক পোস্টে রাজীব লেখেন, ‘সমালোচনা তো অনেক হল। মানুষের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা কতে গিয়ে কথায় কথায় দিল্লি, আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভালোভাবে নেবেন না। আমাদের সকলের উচিত, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কোভিড ও ইয়াস – এই দুই দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাংলার মানুষের পাশে থাকা।’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করেন রাজীব। ভোটের আগে যে মমতার সঙ্গে কথার যুদ্ধ চলছিল প্রাক্তন মন্ত্রীর।
পাশাপাশি তৃণমূলে ফেরার চেষ্টা চালিয়েছেন নিরন্তর। কিন্তু, এত দিন সবুজ সঙ্কেত না মেলায় মৌনী রয়েছেন ডোমজুড়ের প্রাক্তন বিধায়ক। সূত্রের খবর, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের থেকে ইতিবাচক ইঙ্গিত পেয়েই শনিবার ত্রিপুরা এসেছেন রাজীব। তাঁকে নাকি ত্রিপুরায় অভিষেকের সভায় আসতে বলা হয়েছে। যদিও, রবিবার ত্রিপুরায় হাজির থাকা প্রসঙ্গে ঘনিষ্ঠ মহলে রাজীব জানিয়েছেন, আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আগরতলায় আসা তাঁর।