করোনা পরিস্থিতির কারণে পুজোর কটাদিন মদ বিক্রি সেভাবে হবে না বলে ভেবেছিলেন অনেকেই। তবে সেই ভাবনা যে একেবারেই অমূলক, তার প্রমাণ পাওয়া গেল পরিসংখ্যানে। আবগারি দফতর থেকে পাওয়া তথ্যের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, চলতি মাসের পয়লা ১২ তারিখ পর্যন্ত ৭২০ কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়েছে বাংলায়। যা এক রেকর্ড। এত টাকার মদ বিক্রি রেকর্ড বলেই জানা যাচ্ছে।
সূত্রের খবর, ষষ্ঠী থেকে দশমী- এই ৫ দিনে মদ বেচে রাজ্য সরকারের আয় হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। যা আরও এক রেকর্ড। সব থেকে বেশি বিক্রি হয়েছে চতুর্থীর দিন। প্রায় ১০৯ কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়েছে। আর পুজোর ৪ দিনের মধ্যে নবমীর দিন মদ বিক্রি হয়েছে সবথেকে বেশি। প্রায় ৩০ কোটি টাকারও বেশি আয় হয়েছে রাজ্য সরকারের।
পরিসংখ্যান বলছে, অন্যবারও পুজোর সময় মদ বিক্রির পরিমাণ বাড়ে। তবে এবার সব রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। পুজোর কটাদিন রাজ্য সরকারের মদ বেচে আয় হয় মোটামুটি ৪০ কোটি টাকা মতো। এবার তা বেড়েছে অনেকখানিই। এর বড় কারণ হল, অন্যবার দশমীতে মদের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশিকা থাকে। এবার তা হয়নি। আবার বেশি রাত পর্যন্ত মদের দোকান খুলে রাখার অনুমতি দিয়েছিল সরকার।
সব থেকে বেশি মদ বিক্রি হয়েছে দুই মেদিনীপুরে। এই দুই জেলা থেকে পাঁচদিনে প্রায় ২৮ কোটি টাকা আয় করেছে রাজ্য সরকার।
মদ বিক্রি থেকে রাজ্য সরকারের রাজস্বের একটা বড় অংশ আসে। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যে মদ বিক্রি বাড়ানোর জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। একদিকে যেমন বাড়ানো হয়েছে মদের দোকান। তেমনই পুজোর মধ্যে মদ বিক্রির জন্য অতিরিক্ত সময় খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল মদের দোকান ও পানশালাগুলিকে। এমনকী দশমীতেও খোলা রাখার অনুমতি ছিল মদের দোকানগুলি। যার ফলে রাজ্যে মদের দেদার বিক্রি হয়েছে বলে অনুমান।
এতদিন রাজ্যে পুজোর ৫ দিনে সর্বোচ্চ ৪৫ কোটি টাকার মদ বিক্রির নজির ছিল। এক ধাক্কায় এবার তা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। উৎসবের মরশুমে মদের চাহিদা মেটাতে আগেই প্রস্তুতি নিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এমনকী মদের যাতে কোনও ঘাটতি না হয় সেজন্য আগাম প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছিল মদ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিকে।