Site icon The News Nest

হিংসে করে হিন্দু মহিলাকে বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে যেতে দিলে না, মোদী সরকারকে তোপ মমতার

didi modi e1651077912505

রোম সফরের অনুমতি না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বিদেশ গেলেন, অথচ আমাকে কেন যেতে যেওয়া হল না?’’ এর পরই তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাকে হিংসে করে বলেই আটকানো হল।’’ শনিবার এ ভাবেই নরেন্দ্র মোদীর সরকার ও বিজেপি-কে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

শিকাগোর পর এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) রোম সফরের (Rome Visit) অনুমতি দিল না কেন্দ্র। রোম সফরের অনুমতি না দিয়ে বিদেশমন্ত্রক এক লাইনের চিঠিতে জানিয়েছে, এই অনুষ্ঠানটি মুখ্যমন্ত্রী পদের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। বিদেশমন্ত্রকের (Ministry of External Affairs) এই চিঠিটি নবান্নে (Nabanna) এসেছে শুক্রবার মধ্যরাতে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ নবান্ন। এই ঘটনাকে রাজনৈতিক হিংসা হিসেবেই দেখছে রাজ্য সরকার। রোম সফর বাতিল হওয়া নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee on Rome Visit Cancellation)।

শনিবার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারসভায় এসে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা। সেখানে মমতা বলেন, ‘‘কোভ্যাক্সিন নিয়ে কেউ আমেরিকা, ব্রিটেনে যেতে পারবেন না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভ্যাক্সিনকে মান্যতা দেয়নি। কিন্তু বিশেষ অনুমতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী গিয়েছেন। অথচ অনেকেই নিজের কাজে যেতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রী গিয়েছেন, যেতে দাও। কিন্তু আমাকে কেন প্রতিনিধিত্ব করতে দেওয়া হল না?’’

তিনি আরও বলেন, “রোমে জার্মান চ্যান্সেলর ওখানে উপস্থিত থাকবেন, ওলি পোপও যাবেন, ইজিপ্টের ইমাম থাকবেন, ইটালির প্রধানমন্ত্রীও হাজির রইবেন। আর আমাকে যেতে বলা হয়েছিল। ইটালি সরকারও আমাদের বিশেষ অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু আজ কেন্দ্রীয় সরকার থেকে চিঠি এল, যাওয়ার অনুমতিই বাতিল করে দিল।”

মমতার সাফ প্রশ্ন, “শান্তির প্রশ্নে যখন এশিয়ার থেকে একমাত্র আমাকেই ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল, তখন আমাকে যেতে দেওয়া হল না কেন?” এরপরই অন্যান্য ধর্মের প্রতিনিধিদের উপস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে মমতা তোপ দেগে বলেন, যখন বাকি ধর্মের প্রতিনিধিরা ওই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন, তখন হিন্দু ধর্মের প্রতিনিধি কেন যাবেন না?

“কেউ কেউ ৩৬৫ দিনে ৩৯০ দিন যায় বিদেশে।রাজনৈতিক ভ্রাতৃত্বের জন্যে সবাই থাকবে। পোপ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, আমি থাকতাম। সেটা বাতিল করে দিল। বাংলায় এসে বলে, আমি দূর্গা পুজো করতে দিই না। তাহলে আমাকে কেন যেতে দিলে না এখন। আমি তো ওই মঞ্চে গান্ধিজি, নেতাজির কথা বলতে পারতাম। আমি বিশ্বাস করি মানবিকতাই আমার একমাত্র ধর্ম। আমার বিদেশ ঘোরার কোনও শখ নেই। কিন্তু এর সঙ্গে দেশের সম্মানও জড়িত। দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ এসেছিল। ওখানে সকল ধর্মের মানুষেরা থাকবেন। আপনারা শুধু মুখে হিন্দুত্বের কথা বলেন। কিন্তু একজন হিন্দু মহিলা হিসেবে আমাকে যেতে দিলেন না কেন? হিন্দু ধর্মের জন্য মুখে মুখে এত কথা”, খোঁচার সুরে বলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

এর আগে ২০১৮ সালে মুখ্যমন্ত্রী কুনমিং সফর কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি না পাওয়ায় বাতিল হয়ে গিয়েছিল। সেই প্রসঙ্গ টেনেই মমতা বলেন, ‘‘আমি যেখানে যেতে চাই, সেখানেই বারণ করে দেয়। আমাদের ছাড়া কারও যাতায়াতের ক্ষেত্রে তো এমনটা করা হয় না।’’

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর রোম সফর বাতিল নিয়ে চিঠির ঘটনাকে বেশ গুরুত্ব দিয়েই দেখছে রাজনৈতিক মহল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইউরোপ সফরে গিয়ে কী বলেন, তা শুনতে মুখিয়েই ছিলেন রাজ্যবাসী। কিন্তু সেই সফরই বাতিল করে দিল কেন্দ্র। যুক্তিতে যে অসামঞ্জস্যের কথা আছে, তাকে ব্যখ্যা করারও দায় কেন্দ্র নেয়নি। মমতার হুঁশিয়ারি, ‘বাংলায় খেলা দেখিয়েছে মানুষ। ভবানীপুরে খেলা হবে। তারপর গোয়া, অসম, ত্রিপুরা, পঞ্জাবে, ইউপিতে খেলা হবে। দেশটাকে বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে বিজেপি। বিজেপি না সরা অবধি খেলা হবে।’

 

Exit mobile version