ধস কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। রবিবার ধস নামে আসানসোলের কালীপাহাড়ি এলাকায়। সোমবার সেই এলাকা পরিদর্শনে যান অগ্নিমিত্রা পাল। সেখানে গিয়েই স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি।
অগ্নিমিত্রা পাল এলাকায় ঢুকতেই ঘিরে ধরেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এক যুবক অগ্নিমিত্রার সামনে বলতে থাকেন, “ক্ষতিটা আমার হয়েছে। আমি ছিলাম সেখানে। কিন্তু এতটা ক্ষতির পরও কোনও বিজেপি যুব নেতাকে আমাদের এলাকায় দেখা যায়নি।” অগ্নিমিত্রা পালকে প্রশ্ন করতে দেখা যায়, “যুব নেতা থাকার কথা নয় সেখানে। আমাদের অন্য কোনও নেতা ছিল কি?” ওই যুবকের পাল্টা উত্তর, “ঘটনার পর থেকে বিজেপির কোনও মেম্বারকেই দেখা যায়নি এলাকায়।” তাঁকে রীতিমতো সম্মতি দেখাতে দেখা যায় আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিবেশীদেরও।
রবিবার রাতে আচমকা কম্পন অনুভূত হয় আসানসোলের কালিপাহাড়ি এলাকায়। তারপর থেকেই একটু একটু করে ফাটল ধরে কালিপাহাড়ির ডামরা মাহালি পাড়ার ৩ নম্বর কলোনির সাত থেকে আটটি বাড়িতে। প্রত্যেকটি বাড়ির দেওয়াল ও বারান্দায় কম-বেশি ফাটল ধরে। কোথাও সরু মাকড়সার জালের মত ফাটলের দাগ, কোথাও আবার চওড়া ফাটল। কারও বাড়ির গোয়ালঘর সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। সোমবার সকালে ফাটল ক্রমশ ধসের আকার নেয়। আতঙ্কে বিপজ্জনক বাড়িগুলি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন স্থানীয়রা। আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির বাসিন্দাদের একটি ক্লাবে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেন।
আরও পড়ুন: রেশন কার্ড না থাকলেও প্রতি মাসে ফ্রিতে ৫ কেজি খাদ্য সামগ্রী,বিশেষ প্রকল্প রাজ্য সরকারের
সোমবার সকালেই ধস কবলিত এলাকায় যান আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল। তিনি এলাকায় পৌঁছানো মাত্রই ওঠে গো ব্যাক স্লোগান। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেন বিজেপি বিধায়ক। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। তিনি বলেন, “বামফ্রন্টের আমলে ধস পুনর্বাসনের ক্ষতিপূরণের টাকা এসেছে। গত এগারো বছরে সেই ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হয়নি? আমি মাত্র চার মাস এসেছি। এখানে রাজনীতি করার জন্য এই শ্লোগান দেওয়া হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, ধস কবলিত এলাকার পাশেই রয়েছে পরিত্যক্ত ডামরা তিন নম্বর খনি। বছর কুড়ি আগে এই খনিটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন আর কয়লা উত্তোলন হয় না। অভিযোগ, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার আশেপাশেই একসময় অবৈধ খনির রমরমা ছিল। তার জেরেই ধসের ঘটনা ঘটতে পারে। যদিও ডামরার বাসিন্দাদের দাবি, ইসিএল কর্তৃপক্ষ কয়লা উত্তোলনের পর ঠিক মত বালি ভরাট না করাতেই এই বিপত্তি। এদিকে ইসিএল কর্তৃপক্ষের, দাবি এলাকাটি আগে থেকেই ধস কবলিত। তবু ইসিএলের জমির ওপর স্থানীয়রা জবর দখল করে বাড়ি তৈরি করেছেন।
আরও পড়ুন: গভীর হচ্ছে নিম্নচাপ, উত্তাল দিঘার সমুদ্র, জারি কমলা সতর্কতা