parambrata chatterjee opened up about bangladesh violence

‘বাংলাদেশে হিন্দুরা বিপন্ন আর ভারতে মুসলিমরা’, দুদেশের ধর্মীয় উগ্রবাদীদের একহাত নিলেন পরমব্রত

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

দুর্গাপুজোকে (Durga Puja 2021) কেন্দ্র করে উত্তপ্ত বাংলাদেশ (Bangladesh)। কুমিল্লা থেকে হাজিগঞ্জ, চট্টগ্রাম, বাঁশখালি, কক্সবাজারের একাধিক মন্দিরে দুর্গামূর্তি ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটে। সাম্প্রদায়িক এই হানাহানিতে এখনও পর্যন্ত মোট তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এদিকে শেখ হাসিনা সরকার কঠোর পদক্ষেপ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও থামতে নারাজ এদেশের হিন্দুত্ববাদীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক মুসলিম-বিরোধী পোস্ট। সেই প্রেক্ষিতেই এবার মুখ খুললেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় (Parambrata Chatterjee)।

ফেসবুকে একটি বড়সড় পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে কয়েক জায়গায় দূর্গা পুজোর মন্ডপে ইসলামি মৌলবাদীদের তান্ডব নিয়ে কিছু পোস্ট নবমীর দিন সকাল থেকে চোখ পড়লো | সেই প্রসঙ্গে দু চার কথা … আমাকে যে ছেলেটি শুটে এটেন্ড করে , আমার স্পট বয় , তার নাম নাসির গাজী | পুজোর পাঁচটা দিন নিয়ম করে আমাকে শোক থেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে গেছে | শুভ ষষ্ঠী থেকে বিজয়া ! প্রতি বারই জানায় | সরস্বতী পুজোর দিন ক্ষণ আমার না থাকলেও ওর মনে থাকে এবং মনে করিয়েও দেয় | বাইরে শুট করতে গিয়ে কোনো দর্শনীয় মন্দিরের সন্ধান পেলে সেটাও নাসির ই আমাকে এনে দেয় | নবমীর দিনই সকালে আমার কাঠের মিস্তিরি সানোয়ার আলী ফোন করেছিলেন একটা কাজের কথা বলতে | ফোনালাপ শুরুই করলেন “শুভ নবমী দাদা ” বলে …

আমার কিছু না হোক দশ জন বাংলাদেশি বন্ধু দের দেখলাম পুজো মণ্ডপে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়া তে দিয়েছন | এরা সবাই ধর্মে মুসলমান | বাংলাদেশে এবং এই বাংলায় এরকম অজস্র পুজো আছে যেগুলির কমিটি তে গুরুত্বপূর্ণ পদে মুসলমান রা আছেন | কথা গুলো বলছি কারণ বাংলাদেশে কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা তুলে ধরে , বিদ্বেষ সর্বত্র ছড়িয়ে গেছে এটা বলতে থাকাটা উস্কানি দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয় | এই ঘটনা গুলি থেকে যদি প্রমান হয় যে বাংলাদেশে হিন্দুরা বিপন্ন , তাহলে ভারতে গত সাত বছরে এরকম অগুনতি ঘটনা ঘটেছে এবং ঘটে চলেছে (এবং যেগুলি নিয়ে দেশনেতারা অভূতপূর্ব ভাবে চুপ থেকেছেন !) যেগুলি থেকে আরও সহজে প্রমান হয় যে ভারতে মুসলমান রা বিপন্ন !

আমি বরং বলবো, বড়ো পরিসরে, এতো সত্ত্বেও মানুষের ভিতরে সদ্ভাব সম্প্রীতি আছে | কিন্তু কিছু কম মিষ্টি কথাও এই সুযোগে বলে রাখা দরকার । গোঁড়ামি , মৌলবাদ , ইংরিজি তে যাকে বলে ফানাটিসিজম , সেটা সব ধর্মেই থাকে , থেকে এসেছে হাজার বছর ধরে | যখন যে ধর্মের মৌলবাদী জিগির সামনে আসে , তখন সেগুলোর থেকে বেরোনোর , সেগুলির সমালোচনা করার বা সেই বিস্বাসে বিশ্বাসী শক্তি গুলি কে পরাস্ত করার দায়িত্ত্ব কিন্তু সেই ধর্মের শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকেই আরো বেশি করে নিতে হবে !

বাংলাদেশে আমার সমস্ত বন্ধুদের কাছে তাই আমার একান্ত অনুরোধ , কুমিল্লা বা নোয়াখালীতে ঘটে যাওয়া ঘটনার তীব্র নিন্দা করুন কোনো দ্বিধা না রেখে , দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করুন | আপনাদের মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে তার বক্তব্যের মাধ্যমে সুবার্তা দিয়েছেন , আপনারাও সেই মৌলবাদ বিরোধী সুর বজায় রাখুন |

প্রতি বছরই প্রায় এরকম কিছু না কিছু ঘটে , সত্যি বলছি ভালো লাগে না | প্রাণের উৎসবের উপর আক্রমণ বলে ভালো লাগে না তো বটেই , তাছাড়াও আরো বড়ো একটা কারণ হলো, এই ঘটনা গুলি সীমানার এই পারে গোঁড়া হিন্দুত্ত্ববাদীদের বড়ো সুবিধে করে দেয় | তাদের আস্ফালন বাড়ে , ধর্মের জিগির তুলে , এই উদাহরণ টেনে , মানুষের মনে অন্য সম্প্রদায় সম্বন্ধে ঘেন্না জন্মিয়ে রাজনৈতিক মুনাফা তোলার পথ মসৃন হয় |

আমরা প্রত্যেকে নিজের নিজের ধর্মের অতিরিক্ততার বিরুদ্ধে কথা বলা আরম্ভ করি | ধর্ম মানে বিশ্বাস , কিছু মানুষের এক সঙ্গে হওয়া , অনেক বছর ধরে চলে আসা কিছু আচার, কিংবা সমাজ কে এক রকম ভাবে সংঘবদ্ধ রাখার জন্যে তৈরী করা কিছু নিয়ম , বা হয়তো নানান উৎসব ! যেটাই হোক , বিশ্বাস আর অতি বা অন্ধ বিশ্বাস (যা অন্য মানুষ কে জোর করে, বা ক্ষতি করে ) এর মধ্যে সূক্ষ্ম লাইন টা কোথায় সেটা আমাদেরই বুঝে নিতে হবে !’

অভিনেতা-পরিচালকের সপাট মন্তব্য, “আমার কথায় গর্বিত তলোয়ারধারী হিন্দুরা নিশ্চিত কু-কথা বলবেন, আবার কিছু শরীয়ত আইন কায়েম ও রক্ষার দায়িত্বে থাকা মুসলমানও এসে গাল পাড়বেন! তবে বলে রাখি, আমি বা আমরা কিন্তু জানি, আপনারা দু’জনেই আসলে একই দলের লোক। শুধু নামগুলো আলাদা। আর তাই সেই সুযোগে আমাদের টুপি পরাবার তালে থাকেন।”

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest