ফের ধাক্কা বিজেপি-তে৷ এবার দল ছাড়লেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী (Krishna Kalyani Leaves BJP)৷ রায়গঞ্জ রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চোধুরীর উপরে ক্ষুব্ধ হয়েই বিজেপি (BJP) ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন বিজেপি বিধায়ক।
দল বিরোধী কাজের অভিযোগে রায়গঞ্জের বিধায়ককে শো কজ করেছে বিজেপি শৃঙখলারক্ষা কমিটি। বিধায়কের অভিযোগ, রায়গঞ্জের সাংসদ তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানালেন, দেবশ্রী চৌধুরীর সঙ্গে একই দল করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। এই ঘটনায় আরও বাড়ল তাঁর তৃণমূলে যোগের সম্ভাবনা।
বেশ কিছুদিন ধরেই দলের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন রায়গঞ্জের (Raiganj) বিধায়ক। নাম না করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন দিলীপ ঘোষ, দেবশ্রী চৌধুরীর বিরুদ্ধে। বলেছিলেন, “এখানকার সাংসদ কখন আসেন, কখন যান আমরা কিছুই জানি না। এলাকার মানুষ প্রয়োজনে তাঁর দেখা পান না।” পরবর্তীতে দলের সমস্ত কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন কৃষ্ণ কল্যাণী। সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছিলেন, “জানানো প্রয়োজন তাই বলছি। যেখানে বিধায়কের সম্মান নেই, সেখান থেকে সরে যাওয়াই ভাল।”
রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী এবং বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর দ্বন্দ্ব বহু দিনের। এ ছাড়াও বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকারকে নিয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলায় বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছিল চরমে। মাস খানেক আগেই উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপি-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানী। নিজের বিধায়কের অফিস থেকে কয়েকদিন আগে বিজেপি-র রায়গঞ্জের সাংসদ এবং দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ছবিও সরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ফলে কৃষ্ণ কল্যাণী যে দল ছাড়ছেন, সেই ইঙ্গিতছিলই৷
রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর অভিযোগ, জেলা নেতৃত্ব যে তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখছে না তা বহুবার শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছেন৷ ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্য নেতৃত্ব কে সময় দিয়েছিলেন তিনি৷ কৃষ্ণ কল্যাণীর অভিযোগ, তাঁর অভিযোগকে কোনও গুরুত্ব না দিয়ে পাল্টা তাঁকেই শো কজ করেছেন দলের রাজ্য সহ সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। চরম অপমানিত হয়ে বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব এবং রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীকে ‘মীরজাফর’ আখ্যা দিয়ে রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী বিজেপি দল ছাড়ার কথা ঘোষনা করলেন।
রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর পাল্টা দাবি, অনেক দিন আগেই কৃষ্ণ কল্যাণী দল ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছিলেন। বিধায়ক আজ যা বলেছেন সেগুলি অজুহাত। বিধায়ক দল ছাড়লেও বিজেপি দলের কোনও ক্ষতি হবে না।
অন্যদিকে, শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, নিজের ব্যবসার কল্যাণে বিজেপি ছেড়েছেন কৃষ্ণ কল্যাণী। তিনি বলেন, ‘কৃষ্ণ কল্যাণীকে আমি বাজেট বিতর্কে ১৫ মিনিট বলার সুযোগ দিয়েছিলাম। বাজেট নিয়ে আলোচনা না করে পুরো সময়টাই উনি সয়াবিন নিয়ে কথা বলেন। মানে নিজের ব্যবসা নিয়ে। আমারই লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছিল।’ সঙ্গে কৃষ্ণ কল্যাণীকে শুভেন্দুবাবুর প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি, ‘শুধু একটাই কথা বলবো, ইস্তফাটা দিয়ে দিন। রায়গঞ্জের মানুষ আবার ভোট দিক। রায়গঞ্জের মানুষ ২০১৯ সাল থেকে বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন।’
বিধানসভা নির্বাচনের পর মুকুল রায় (Mukul Roy) সহ পাঁচ জন বিধায়ক বিজেপি ছাড়লেন৷ জগন্নাথ সরকার ও নিশীথ প্রামাণিক সাংসদ থাকার জন্য বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েছেন৷ ফলে বিজেপি-র বিধায়ক সংখ্যা কমে হল ৭০৷