Site icon The News Nest

কটাক্ষ করেন ‘সনাতন’ শুভেন্দু, আর কাঁথি পুরনির্বাচনের আগে মাজারে শিশির অধিকারী

sisir1 scaled

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (যিনি বিজেপিতে যোগের পর সনাতন ধর্মের হয়ে সওয়াল করেন) রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘বেগম ‘ বা ‘বাংলাদেশের ফুফু’ বলে প্রায়ই কটাক্ষ করে থাকেন। এবার তাঁর পিতা অর্থাৎ কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর মাজারে যাওয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হল রাজনৈতিক তরজা।

বিরোধীদের দাবি, কাঁথি পুরসভার নির্বাচন আসন্ন। তাই তার আগেই প্রচারে নেমে পড়েছেন কাঁথির তৃণমূল (TMC) সাংসদ শিশির অধিকারী। যদিও তিনি ঠিক কোন দলে, তা নিয়ে রয়েছে জল্পনা।

তিনি কোন দলের প্রচারে নামলেন তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। খাতায় কলমে তিনি এখনও তৃনমূল কংগ্রেসের সাংসদ। তবে, গত বিধানসভা নির্বাচনে আগে পূর্ব মেদিনীপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় ছিলেন শিশির অধিকারী। কোন দলে তা জানানোর জন্য লোকসভার সাংসদকে চিঠি দিয়ে সময়ও চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এখনও মেলেনি উত্তর।

শুক্রবার কাঁথি শহরের দারুয়া আস্তানা মাজারে যান শিশির। সেখানে চাদর চড়ান তিনি। সেই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। স্থানীয় তৃণমূল শিবিরের প্রশ্ন, এত দিন শুভেন্দু নানা সভা-সমিতিতে সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে ‘কটূক্তির বন্যা’ বইয়ে দিয়েছেন, সেখানে মাজারের মতো জায়গায় শুভেন্দু-পিতা হাজির হলেন কেন? কাঁথি এক নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রদীপ গায়েন বলছেন, ‘‘সামনেই কাঁথি পুরসভার নির্বাচন। তাই ভোট প্রচার করতে বেরিয়ে পড়েছেন উনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলকে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে থাকার জন্যই বার্তা দিয়েছেন বার বার। কিন্তু ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রীকে যে ভাবে শুভেন্দু আক্রমণ করেছিলেন, সেটা কি শিশিরবাবু ভুলে গিয়েছেন? মুখ্যমন্ত্রীকে কখনও ‘বেগম’, ‘বাংলাদেশের ফুফু’ বলেছেন। আবার কখন ওনার ছেলে মুসলমানদের জেহাদি বলছেন। তাঁর বাবা হয়ে তিনি এই ধর্মীয় স্থানে যাচ্ছেন, এটা কেমন কথা? ভোট চমক ছাড়া আর কিছু না। ভোট মিটলেই আবার কেটে পড়বেন।’’

তৃণমূলের আক্রমণে ক্ষুব্ধ শিশির। খাতায়কলমে তিনি এখনও তৃণমূলের সাংসদ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি ৬০-৬২ বছর রাজনীতি করছি। আমি কখন মাজারে যাব বা কখন মন্দিরে যাব তা নিয়ে কাউকে কোনও উত্তর দেব না। আমি যখন মাজারে যাই তখন যাঁরা ছিলেন তাঁরা সকলে দেখেছেন। এ নিয়ে কারও কোনও সমীকরণ থাকতে পারে। তবে আমার কোনও মাথাব্যথা নেই। বয়স্ক লোককে নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা বন্ধ হোক।’’

শিশিরের মাজার-দর্শন নিয়ে বিজেপি-র কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অনুপকুমার চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘কাঁথির সব ধর্মের মানুষকেই সমৃদ্ধ করেছেন শিশির। সনাতন ধর্মের সংস্কৃতিকে বজায় রেখেই যদি অন্যদের সংস্কৃতি এগিয়ে চলে তা হলে কোনও সমস্যা নেই। তাই মাজারে যাওয়ার মধ্যে অযথা রাজনীতি খোঁজার চেষ্টা বৃথা।’’

শুক্রবার রাতে কাঁথির সাংসদ যে মাজারে গিয়েছিলেন তার সভাপতি শেখ ওমর ফারুক যদিও বলছেন, ‘‘মাজার একটি ধর্মীয় স্থান। এখানকার দরজা সকলের জন্য খোলা। তবে শিশিরবাবুকে সামনে পেয়ে কয়েক জন অনুরোধ করেছেন, ‘দয়া করে ছেলে শুভেন্দুকে বোঝান। উনি যে ভাষায় ক্রমাগত সংখ্যালঘুদের কটূক্তি করেন তা খুবই বেদনাদায়ক। এর ফলে সম্প্রীতির ভাবমূর্তি ক্রমাগত নষ্ট হচ্ছে। আপনি বাড়ির অভিভাবক, আপনি বোঝালে নিশ্চয়ই ছেলে শুনবে।’ এ কথাই আমরা ওঁকে জানিয়েছি।’’

Exit mobile version