প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে তৃণমূল বিধায়ক ড. মানিক ভট্টাচার্যকে অবিলম্বে সরাতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। প্রাথমিকে শিক্ষক-নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ছিল মানিকের বিরুদ্ধে। সোমবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, মানিককে তাঁর পদ থেকে অবিলম্বে সরাতে হবে। তাঁর স্থলে কে আসবেন তা সিদ্ধান্ত নেবে সংশ্লিষ্ট দফতর। তার আগে পর্যন্ত দায়িত্ব সামলাবেন পর্ষদের সচিব রত্না চক্রবর্তী বাগচি।
২০১৪ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু আসল নথি চেয়েছিল আদালত। অভিযোগ, সেই নথি পেশ করেনি পর্ষদ, উলটে আদালতকে ভুল পথে চালনা করেছে। যার সম্পূর্ণ দায় মানিক ভট্টাচার্যের, মন্তব্য আদালতের। বিচারপতি আরও বলেন, “আজকে ২৭৮৭ জন আবেদনকারীদের মধ্যে ১ জনেরও নম্বর পুণর্মূল্যায়নের জন্য দাখিল করা আবেদনপত্র আদালতে পেশ করা হয়নি। পর্ষদের এই আচরণ গ্রহনযোগ্য নয়।”
আরও পড়ুন: Nabanna: বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন, টিভি চ্যানেলগুলোকে নোটিস পাঠাল নবান্ন
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতিকে অপসারণের পাশাপাশি, আদালতে পেশ করা নথি দিল্লিতে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। আদালতের সামনে পেশ করা ২৭৮৭ জনের নাম এবং রোল নম্বরের তালিকা, নম্বর পুনর্মূল্যায়নের জন্য গঠিত বিশেষ কমিটির সদস্যদের নাম এবং গঠনের দিন সংক্রান্ত নথি, এই বিশেষ কমিটির রিপোর্ট, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সিদ্ধান্ত এবং বোর্ডের অনুমোদন সংক্রান্ত নথি গুলির প্রিন্ট আউট কবে নেওয়া হয়েছে এবং তাতে যে স্বাক্ষরগুলি রয়েছে সেগুলিই বা কবে করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখবে দিল্লি ফরেনসিক। এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “২০১৭ সালে স্বাক্ষরিত পর্ষদ এবং বিশেষ কমিটির বিভিন্ন নথি এখনও এত স্পষ্ট এবং উজ্জ্বল কীভাবে রয়েছে, সে বিষয়ে এই আদালত সন্দিহান। তাই ফরেনসিক পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।”
উল্লেখ্য, প্রাথিমক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা টেট-এর মেধা তালিকায় অনিয়ম হয়েছে জানিয়ে হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন রমেশ আলি নামে এক ব্যক্তি। ২০১৪ সালে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। সেই মতো টেটের পরীক্ষা হয় ২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর। ফলপ্রকাশ হয়েছিল ২০১৬-র সেপ্টেম্বরে। ওই বছরই প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। কিন্তু পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বরেও দ্বিতীয় বা অতিরিক্ত মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রায় ২৩ লক্ষ চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তার মধ্যে ৪২ হাজার প্রার্থীকে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। রমেশের অভিযোগ ছিল এই নিয়োগের ক্ষেত্রে যে দ্বিতীয় মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তা বেআইনি।
আরও পড়ুন: KK-র মৃত্যু নিয়ে রাজ্যের হলফনামা তলব Calcutta High Court-এর