Three Bengali Trekkers are returning alive from the devastated Devbhumi due to the help of the guide

গাইডের তৎপরতায় বিধস্ত দেবভূমি থেকে প্রাণে বেঁচে ফিরছেন তিন বঙ্গ সন্তান

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

দুর্গমকে জয় করার নেশা মানুষের চিরন্তন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে প্রাণভরে উপভোগ করার নেশা রয়েছে মানুষের রক্তে। তাই মানুষ সাধারণ সংসারী জীবন থেকে বের হয়ে মাঝে মাঝেই বেড়িয়ে পরে পাহাড়, নদী, সমুদ্র, জঙ্গল দেখতে। প্রাকৃতিক দুর্গমতাকে সে জয় করতে চায়। আর তা করতে গিয়েই প্রাণ বাজি রাখে মানুষ। এবার দেবভূমিতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় কেড়ে নিয়ে বহু মানুষের প্রাণ। ট্রেকিং করতে গিয়ে কেবল এই বঙ্গের ৫ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন কয়েকজন।

সাত সদস্যের একটি দল ট্রেকিংয়ের একটি দল রওনা দিয়েছিল, যার মধ্যে এ বঙ্গের ছিল তিনজন । এই তিন জন হলেন- সনৎ দাস, শুভজিৎ ঘোষ এবং বিপ্লব ধলে । সনৎ চুচুঁড়ার বাসিন্দা। শুভজিৎ চন্দননগরের এবং বিপ্লবের বাড়ি আমতায়। কেদারনাথ ওয়াল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারির অধীন গাঙ্গি গ্রাম থেকে রওনা হয় দলটি। দু’দিনের মধ্যে শুরু হয় মারাত্মক তুষারপাত। ঢেকে যায় ট্রেকিংয়ের পথ।

১৩ অক্টোবর বিপেন্দ্রর এই ট্রেকিং দলটি গাঙ্গি থেকে খাটলিং গ্লেসিয়ার হয়ে অউটপোস্টে পৌঁছায়। ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত দলটি সেখানেই ছিল। ১৭ অক্টোবর সকালে তারা মাসারতাল রওনা হয়। কিন্তু বেলা ১১ টা নাগাদ ফের শুরু হয় তুষারপাত। পরিস্থিতি বিবেচনা করে গাইড সেখানেই আপৎকালীন ক্যাম্প করে যাত্রা বিরতির সিদ্ধান্ত নেন। বরফ গলিয়ে জলের ব্যবস্থা করা হয়। প্রতি দুঘন্টা অন্তর ক্যাম্পের জমা তুষার পরিষ্কার করতে হত।

তখন চারিদিকে কেবল বরফ আর বরফ। ক্যাম্পে দুরুদুরু বুকে দিন কাটছিল প্রত্যেকের। বেশিভাগ সময় কানে আসছিল ভূমিধসের শব্দ। ক্যাম্পে রাতে দুচোখের পাতা এক করতে পারছিলেন না তারা। এই বুঝি ধস নামে। কিন্তু তখনও কারও কাছে খবর ছিল না যে প্রায় তছনছ হয়ে গিয়েছে উত্তরাখন্ড। খবর পাওয়ার যে নিয়ে। ফোনে নেটওয়ার্ক নেই। একদিকে প্রবল ঠান্ডা। ক্রমশ বাড়ছিল তুষারপাত। বৃষ্টির জল ঢুকে পড়ছিল ক্যাম্পে।

১৭ এবং ১৮ অক্টোবর রাত পর্যন্ত এই ভয়াবহ অবস্থা ছিল। ১৯ অক্টোবর আবহাওয়া খানিকটা ভালো হয়। তবে তখন চারিদিক বরফে সাদা। ভালোভাবে পথ চলা যে নেই। কেবল বরফ। পা দিলেই হড়কে যাওয়ার ভয়। উত্তরকাশির বাসিন্দা গাইড বিপেন্দ্র রানা আঁচ করেছিলেন পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হবে। তিনি যাত্রীদের বলেন, এ যাত্রা ফিরে যাওয়ায় হবে বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু ফিরব বললেই তো আর ফেরা নয়। ফেরা পথ রুদ্ধ। পায়ে চলা ট্রেকিংয়ের পথখানিও সম্পূর্ণ ঢেকে গিয়েছিল।

পরিস্থিতির ভয়াবহতা দেখে ও মাথা ঠান্ডা রাখতে পেরেছিলেন গাইড। তিনি বলেন, এক দশক ধরে এই একই কাজ করে চলেছেন তিনি । উচ্চ হিমালয়ের এই অঞ্চলে ট্রেকিংয়ের জন্য সবথেকে আগে আবহাওয়া সঠিক থাকা জরুরি। এই আবহাওয়া বিবেচনা করে তবে নিতে হয় উচ্চতর ট্রেকিংয়ের সিদ্ধান্ত। আবহাওয়া জানিয়ে দেয়, কখনও ট্রেকিং করা যাবে আর কখন থামতে হবে। তার পাঠানো সংকেতকে অবহেলা করলেই বিপদ। তখন মৃত্যুর হিমশীতল স্পর্শ এড়িয়ে যাওয়া সত্যিই কঠিন হয়ে পড়ে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest