আচমকা বদলে গেল দিঘার সমুদ্র। নীলাভ রঙের বদলে সমুদ্রের জলের রং কালচে ঘোলাটে হয়ে গিয়েছে। শনিবার সকালে বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয়দের। জলের রঙের এই পরিবর্তন দেখে চাঞ্চল্য ছড়ায় পর্যটকদের মধ্যেও। ঘোলাটে জলে স্নান করা কতটা নিরাপদ হবে, তা ভেবে দোলাচলে পড়েন অধিকাংশ পর্যটক। দিঘায় ঘুরতে এসে স্নান না করেই ফিরে যান অনেকে। দিঘায় সমুদ্রের জলের এমন চেহারা সাম্প্রতিক কালে কখনও হয়নি বলে দাবি স্থানীয়দের।
এদিকে সমুদ্রের জল সম্পূর্ণ ভাবে ঘোলাটে এবং কালো হয়ে যাওয়ায় প্রশাসনের তরফ থেকে পর্যটকদের সমুদ্রে না নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে বহু পর্যটক ঘোলাটে জলের মধ্যে সমুদ্রে নেমে শারীরিকভাবে অস্বস্তি বোধ করছেন। তাই ইতিমধ্যে সমুদ্র চত্বরে সিভিল ডিফেন্স বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে যাতে পর্যটকরা সমুদ্রে না নামতে পারেন সে ব্যাপারটা খতিয়ে দেখছে দিঘা ও মোহনা থানার পুলিশ।
কিন্তু হঠাৎ কেন বদলে গেল জলের রং? এ নিয়ে সমুদ্রবিজ্ঞানী প্রসাদ টুডু বলেছেন, “গোটা বছর জলের চেহারা অন্য রকম হলেও এই মুহূর্তে বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্যার জল সমুদ্রে মিশে যাওয়ার ফলেই দিঘার সমুদ্রের জলের এমন পরিবর্তন ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। তবে সমুদ্রের জলের দূষণ থেকেও এমনটা হতে পারে।’’ তবে শীঘ্রই এই পরিস্থিতির বদল ঘটবে বলেই আশাবাদী তিনি।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টে ৩ মাস পিছিয়ে গেল নন্দীগ্রামের ভোটের ফল মামলার শুনানি
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক সমুদ্র বিজ্ঞানী গৌতম সেন বলেন, “দিঘা উপকূলে সমুদ্রের গভীরে দিঘা থেকে ওড়িশার ধামরা পর্যন্ত একটা মোটা কাদা বা সেরিমেন্টের স্তর রয়েছে। প্রায় ২৪কিমি দৈর্ঘ্য-প্রস্থ হবে এর। যা খুব ধীর গতিতে ধামরা থেকে মন্দারমণির দিকে আবার মন্দারমণির দিক থেকে ধামরার দিকে বাহিত হয়।”
তবে জলের ভেতরের স্রোত ও ওপরের দিকের স্রোত দুটি আলাদা। কোনও কারণে জলের ভেতরের স্রোতের টানে এই পলি জলের সঙ্গে মিশে ওপরের দিকে উঠে আসার ফলে জলে কাদার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। তবে এটা সমুদ্রের স্বাভাবিক বিষয় বলে জানান তিনি। আশ্বস্ত করেন, এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণই নেই।
আরও পড়ুন: ৫০০০ টাকায় সদ্যোজাত কন্যাকে বেচে দিলেন বিধবা মা, চাঞ্চল্য মেদিনীপুরে