বৃষ্টির হাত থেকে এখনই রেহাই পাচ্ছে না বঙ্গবাসী। শোনা গিয়েছে, আরও তিনটি নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে। যার ফলে আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে পারে বৃষ্টি। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, সোমবারের ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। যার অবস্থান গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের ওপর। এছাড়া মৌসুমী অক্ষরেখা গয়া থেকে কলকাতার ওপর দিয়ে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। এর ফলে বৃষ্টি চলবে।
এই জোড়া ফলায় দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলাতে মঙ্গলবারও বৃষ্টি চলবে। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। সঙ্গে রয়েছে বজ্রপাতেরও সতর্কতা। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার বৃষ্টি হতে পারে হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে। আজ বৃষ্টি বাড়বে পশ্চিমের জেলাগুলিতে। অর্থাত্ বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরে বৃষ্টি বাড়বে। বৃষ্টি বাড়বে দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও।
আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে দুই মেদিনীরপুরে। আর এতেই ঘুম উড়েছে উপকূলবাসীর। ইতিমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর ও পটাশপুর এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নদী বাঁধ ভেঙে বিপাকে পড়েছে প্রায় কুড়ি হাজার পরিবার। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় সত্তর হাজার পরিবার। ফের বৃষ্টির পূর্বাভাসে কপালে চিন্তার ভাঁজ প্রশাসনের। ইতিমধ্যে সরকারি নির্দেশ মেনে উদ্ধারকার্যে নেমেছে এনডিআরঅফ টিম। চলছে জলমগ্ন এলাকা থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারের কাজ। কয়েকটি এলাকায় ত্রাণ-ও পৌঁছে গিয়েছে। বিপদগ্রস্থ মানুষকে শুকনো খাওয়ার বিতরণ বিভিন্ন জায়গায়।
হঠাৎ করে তৈরি হওয়া এই পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে নবান্নও (Nabanna)। কন্ট্রোল রুম থেকে জেলাগুলির সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। এদিন সন্ধে পর্যন্ত নবান্ন সূত্রে খবর, প্রত্যেক জেলাশাসককে বিপর্যয় মোকাবিলার খরচ দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ৪৭টি ব্লক এবং আটটি পুরসভা জলমগ্ন রয়েছে। প্রায় ১৩ লক্ষ ১৪ হাজার ৩২৮ জন মানুষ জলবন্দি রয়েছেন। এক লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষতি হয়েছে শস্য ও গবাদি পশুর।
জলমগ্ন জেলাগুলিতে ৫৭৭টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। সেখানে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। ১ লক্ষ ৪১ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৬০ হাজারের বেশি ত্রিপল বিলি করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার জন্য নবান্নে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যে কোনও সমস্যায় টোল ফ্রি নম্বর ১০৭০ তে যোগাযোগ করা যাবে বলে জানানো হয়েছে।