রাজ্যে শিশুদের জ্বর এবং শ্বাসকষ্টের উপসর্গ সম্পর্কে গাইডলাইন (‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’) ঘোষণা করল স্বাস্থ্য ভবন। বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশে গঠিত ওই নির্দেশিকায় আক্রান্ত শিশুকে পর্যবেক্ষণের পদ্ধতি, তার ঘরোয়া চিকিৎসা এবং কী ভাবে বিপদের পূর্বাভাস বুঝে তাকে হাসাপাতালে ভর্তি করাতে হবে, তা বলা হয়েছে।
রাজ্যে শ্বাসকষ্ট এবং জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা বাড়ছে প্রতি দিন। কোভিড কালে শিশুদের এই জ্বর নিয়ে চিন্তিত এবং সতর্ক রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে স্বাস্থ্য ভবন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছিল। সেই কমিটির সদস্যেরা ভাইরাস ঘটিত জ্বরের কারণ খুঁজে তার চিকিৎসা পদ্ধতি সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রস্তত করছেন বলে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর।
নবজাতক থেকে ১৬ বছর বয়সি শিশুদের অভিভাবকদের বিশেষ সতর্কতা নিতে হবে। কী কী উপসর্গ দেখা দিলে সাবধান হবেন, সে বিষয়ে চলুন আগে জেনে নেওয়া যাক।
যে সমস্ত শিশু নির্ধারিত সময়ের আগেই জন্মেছে, যাদের হৃদযন্ত্রের সমস্যা রয়েছে, স্নায়ুরোগ এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তাদের অভিভাবকদের অতিরিক্ত সতর্কতা নিতে হবে।
অভিভাবকদের করণীয়:
- শিশুদের জ্বর আসলে তাপমাত্রা খেয়াল রাখতে হবে।
- বাড়িতে পালস অক্সিমিটার রাখুন।
- কমপক্ষে দিনে ৫ বার শিশুর রক্তে অক্সিজেন কতটা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখুন।
- শিশু দিনে ৫ বারের কম প্রস্রাব করছেন কিনা খেয়াল রাখুন।
- জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের অবশ্যই আলাদা রাখতে হবে। নইলে পরিবারের সকলের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে পারে।
রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কম হলে এবং জ্বর কমতে না চাইলে অবশ্যই শিশুদের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের হিমোগ্রাম, সিআরপি, কোভিড ১৯, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, স্ক্রাব টাইফাস, চেষ্ট এক্স রে, রেসপিরেটরি ভাইরাল প্যানেলের মতো পরীক্ষা করাতে হবে। পরীক্ষার রিপোর্ট সন্তোষমূলক না হলে হাসপাতালে ভরতি রেখে চিকিৎসা করতে হবে তাদের।
ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের মালদহ ও জলপাইগুড়ি জেলায় জ্বরে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে খবর। পাশাপাশি, দক্ষিণবঙ্গেও প্রচুর শিশু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে হাওড়া, হুগলি থেকে আসা শিশুরাও জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছে বলে রাজ্য স্বাস্থ্য় দফতর সূত্রের খবর।
অসুস্থ শিশুদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে ‘স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন’ এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষা করা হয়েছিল। সেই পরীক্ষায় জ্বরের ‘কারণ’ হিসেবে ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি এবং রেসপিরেটরি সিনসেটিয়াল ভাইরাস (আরএস ভাইরাস)-কে চিহ্নিত করা হয়েছে।