সমাজকর্মী স্ট্যান স্বামীর মৃত্যু নিয়ে এ বার ভারতকে নিশানা করল আমেরিকান সরকারের দু’টি বিভাগ। এলগার পরিষদ মামলায় জেল হেফাজতে থাকার সময়েই সম্প্রতি মুম্বইয়ের হাসপাতালে মৃত্যু হয় স্বামীর। দেশের বিভিন্ন শিবিরের পাশাপাশি এ নিয়ে আগেই আন্তর্জাতিক স্তরেও সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারত।
আমেরিকার বিদেশ দফতরের অন্তর্গত আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত বিভাগের তরফে টুইটারে বলা হয়েছে, “বেআইনী কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের অধীনে গ্রেফতার ও পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন জেসুইট পুরোহিত ও উপজাতির অধিকার কর্মী ফাদার স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুতে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত। এই ঘটনা কখনওই কাম্য ছিল না। আমরা সমস্ত দেশের সরকারকেই সুস্থ গণতান্ত্রিক কাঠামো বজায় রাখতে মানবাধিকার কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা মাথায় রেখে তাদের সম্মান জানানোর জন্য আহ্বান জানাই।” নয়া দিল্লির সঙ্গে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের’ আবহে ওয়াশিংটনের এই কাজ দিল্লির কূটনীতিকদের যে নতুন করে মাথা ব্যাথার কারণ হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের টুইটের কিছু আগেই স্বামীর মৃত্যুতে কড়া প্রকিক্রিয়া জানিয়ে আরও একটি টুইট করা হয় আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্পর্কিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কমিশনের (ইউএসসিআইআরএফ) তরফে। চাঁচাছোলা ভাষায় ওই টুইটে লেখা হয়, ভারত সরকারের ইচ্ছাকৃত অবহেলা ও সমাজসবক-মানবাধিকার কর্মীদের বারবার নিশানা করার যে ঘটনা ঘটছে তার তীব্র তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এসসিআইআরএফ।”
আরও পড়ুন: কুচকাওয়াজে হাই হিল পরবেন ইউক্রেনের নারী সেনারা
পাশাপাশি এই গোটা ঘটনার মার্কিন সরকারের কাছে ভারত সরকারকে সরাসরি জবাবদিহি করার দাবিও জানায় কমিশন। জারি করা হয় বিবৃতিও। পাশাপাশি ইন্দো-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মাঝে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় কমিশনের তরফে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইউএসসিআইআরএফ হ’ল মূলত একটি দ্বিদলীয় স্বতন্ত্র কংগ্রেসীয় ম্যান্ডেটেড কমিশন। যারা ধর্মীয় স্বাধীনতার মূল্যায়ন অনুসারে দেশগুলির শ্রেণিবিন্যাস করে মার্কিন মুলুকের সঙ্গে সম্পর্কের রসায়ন ঠিক করতে কাজ করে থাকে।
ওই কমিশনের চেয়ারপার্সন নাদিন মায়েনজ়ার বক্তব্য, ‘‘ফাদার স্ট্যান স্বামীর মৃত্যু ফের মনে করিয়ে দিচ্ছে ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কী ভাবে নিশানা করা হয়।’’ ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে ভারত সরকারকে কড়া বার্তা দিতে আমেরিকান সরকারকে অনুরোধ করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুর একদিন পরেই এক আমেরিকান ফরেন্সিক এজেন্সির রিপোর্টে তার মৃত্যুর পিছনে বড়সড় ষড়যন্ত্রের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। বস্টনের আর্সেনাল কনসাল্টিং ফার্মের দাবি এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া আর এক সমাজকর্মী সুরেন্দ্র গাডেলিংয়ের কম্পিউটার থেকে পাওয়া প্রমাণ নকল ছিল। মাও যোগ প্রমাণ করতে তাঁর কম্পিউটার হ্যাক করে তাতে নকল প্রমাণাদি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। আর্সেনাল কনসাল্টিং ফার্মের সন্দেহ একই ঘটনার শিকার হয়ে থাকতে পারেন স্ট্যান স্বামীও।
আরও পড়ুন: ব্রিটেনের তেল সংস্থার সঙ্গে কর বিবাদ, প্যারিসে বাজেয়াপ্ত ভারত সরকারের সম্পত্তি