Site icon The News Nest

আমেরিকা আল কায়দার বিরুদ্ধে লড়তে গিয়েছিল ,আফগানিস্তান গড়তে যায়নি, বললেন বাইডেন

biden

আফগান সঙ্কটের জন্য অনেকে দুষছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। তার উত্তরে সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন বাইডেন। সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের সমর্থনে যুক্তি সাজিয়ে বললেন, ‘‘আমি অনুতপ্ত নই।’’ তাঁর মতে, আমেরিকার সেনাবাহিনী প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে আফগানিস্তানের গৃহযুদ্ধ সামলানোর জন্য পড়ে থাকতে পারে না। আফগানিস্তানে যা ঘটল, সেটা আফগান সামরিক এবং রাজনৈতিক শক্তির ব্যর্থতা, বলেছেন বাইডেন।

বাইডেন দাবি করেন, আল কায়দার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়েছিল আমেরিকা। আফগান রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে দিতে নয়। মানবাধিকারই কূটনীতির স্তম্ভ হওয়া উচিত, যুদ্ধ নয়, মন্তব্য করেন তিনি। যদিও প্রয়োজনে ভবিষ্যতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়তে হতে পারে, সে কথা জানিয়ে রাখতে ভোলেননি। আমেরিকানদের ফেরাতে বাধা দেওয়া হলে যে ছেড়ে কথা বলা হবে না, জানিয়ে দিয়েছেন তা-ও।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন স্বীকার করেছেন, ঘটনা যে এত দ্রুত এ ভাবে মোড় নেবে, তা ভাবা যায়নি। সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি তালিবানের বিরুদ্ধে লড়বেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। তবু আফগান জনসাধারণের প্রতি পূর্ণ সহমর্মিতা এবং সাহায্যের আশ্বাস শুনিয়েও বাইডেন নিজের যুক্তিতে অনড় থেকে বললেন, সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর করতেই হত। তাঁর কথায়, আমেরিকা অতীতে অনেকগুলো ভুল করেছে। সেই ভুল টেনে চলারও সীমা আছে। ‘‘আমি জানি, আমি সমালোচিত হব। কিন্তু আমার মধ্য দিয়েই ব্যাপারটার ইতি হোক। পরের প্রেসিডেন্টকে যেন আর এই দায়ভার বইতে না হয়।’’

আরও পড়ুন : এক বছরে ধস মোদীর সমর্থনে, নামল ৬৬% থেকে ২৪%, জনপ্রিয়তায় উঠে এলেন মমতা

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীনই দোহায় তালিবান নেতৃত্বের সঙ্গে শান্তি আলোচনার সূচনা করেছিল তাঁর প্রশাসন। সেই ট্রাম্প আফগান পরিস্থিতির জন্য নিজের উত্তরসূরিকেই দুষেছেন। একের পর এক বিবৃতিতে বাইডেনের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেছেন, ‘‘বাইডেনের পদত্যাগ করার সময় এসে গিয়েছে। আফগানিস্তানে উনি যা করলেন, আমেরিকার ইতিহাসে তা সবচেয়ে লজ্জাজনক পরাজয় বলে বিবেচিত হবে।’’ তিনি প্রেসিডেন্ট থাকলে আফগানিস্তান তালিবানের হাতে চলে যেতে পারত না, দাবি ট্রাম্পের।

প্রেসিডেন্টের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিল সংবাদমাধ্যমও। তবে বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের দাবি ছিল, আপাতত আফগানিস্তান থেকে সব আমেরিকান নাগরিককে দেশে ফেরানোই প্রেসিডেন্টের অগ্রাধিকার। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভানও এক সাক্ষাৎকারে বলে ফেলেন, ‘‘আমরা যা ভেবেছিলাম তার চেয়ে অনেক দ্রুত তালিবান গোটা দেশকে কব্জা করে ফেলেছে।’’

চিন অবশ্য তালিবান নেতৃ্ত্বকে স্বাগতই জানিয়েছে। আজ বেজিংয়ে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছেন, ‘‘আমরা আশা করছি, শান্তি আর অহিংসার পথে আফগানিস্তানে ক্ষমতা হস্তান্তর হতে চলেছে। আশা করব তালিবান নেতৃত্ব সে দেশের মানুষের সুরক্ষা ও অধিকারের দিকটি বিবেচনা করে দেশ শাসন করবেন।’’ আফগানিস্তানের অন্যতম এই পড়শি আরও জানিয়েছে, অহিংস পথে হাঁটলে তারা তালিবানকে আর্থিক সাহায্য দেবে। কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্রে লেখা হয়েছে, ‘আমেরিকাকে বিশ্বাস করলে কী হয়, গোটা বিশ্ব তা জানে। তা-ও তারা সে দেশের উপরেই ভরসা করে আর ঠকে’।

আরও পড়ুন : Afghanistan Crisis: আফগানিস্তানে বসবাসকারী হিন্দু ও শিখদের আশ্রয় দেবে ভারত, ঘোষণা বিদেশমন্ত্রকের

Exit mobile version