ওয়াশিংটন:সোশ্যাল মিডিয়ার সুরক্ষাকবচ সরাতে প্রশাসনিক নির্দেশে সই স্বাক্ষর করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই নির্দেশের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রকের উপর ফেসবুক ও ট্যুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ‘আপত্তিজনক’ কনটেন্টের জন্য তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার অধিকার দেওয়া হয়েছে।
এর আগে নিজের অ্যাজেন্ডাকে সমর্থন করে না এমন সামাজিক যোগাযোগ মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিতর্কের শুরু গত মঙ্গলবার। ওই দিন ট্রাম্পের বিভিন্ন টুইটের ফ্যাক্ট চেক লিঙ্ক দেওয়া শুরু করে টুইটার। এর মানে হলো প্রেসিডেন্ট যে টুইট করেছেন, তা কতটুকু সত্য সেটি যাচাই করার জন্য বার্তার নিচে ‘আসল খবর যাচাই করে দেখুন’ এমন ফ্যাক্ট চেকিং ট্যাগ ব্যবহার করেছে টুইটার। আর এতে ব্যাপক চটেছেন প্রেসিডেন্ট। তিনি টুইটার ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনেন।
আরও পড়ুন: করোনাক্রান্ত ১০৩ বছরের জেনি সুস্থ হয়েই বললেন, ‘এক বোতল ঠাণ্ডা বিয়ার খাবো।’
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির ক্ষমতাকে তদারকির কোনও ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ করেছেন ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার ওভাল অফিসে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ট্যুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্টরা নিরপেক্ষ প্ল্যাটফর্মের তত্ত্বের জোরে সাংঘাতিক বর্মের আড়ালে রয়েছে। যদিও সেই সুরক্ষাকবচ পাওয়ার কথা নয়। আমরা এতে বিরক্ত। এটা অনৈতিক। খুবই অনৈতিক।’ ট্রাম্পের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত বুধবার ট্যুইটারের বিরুদ্ধে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ এনেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। নিজের দুটি ট্যুইটের ফ্যাক্ট চেকও পোস্ট করেন তিনি।বৃহস্পতিবার ট্যুইটার চিনা সরকারের মুখপাত্রের দুটি ট্যুইটে “get the facts about Covid-19” ট্যাগ ব্যবহার করে। সেই ট্যুইটে চিনের মুখাপাত্রের দাবি ছিল, করোনাভাইরাসের উত্পত্তি আমেরিকাতে।
টুইটারে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ধরনের তথ্য পোস্ট করেন, তার অনেকগুলির সত্যতা ‘অপ্রমাণিত’ বলে বিশ্বাস সংস্থা কর্তৃপক্ষের। সেরকম দু’টি টুইট তুলে তার নীচেই সম্প্রতি সতর্কবার্তা পোস্ট করেন তাঁরা। প্রত্যাশিত ভাবে এখন বেজায় ক্ষিপ্ত প্রেসিডেন্ট। টুইটারকে আক্রমণ করতে তাঁর পাল্টা টুইট, ‘২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে ওরা। মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করতে চাইছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটা হতে দেব না।’
বিতর্কের শুরু মঙ্গলবার। ‘মেল-ইন’ ব্যালট যে ভুয়ো এবং মাঝপথে ব্যালট-বাক্স যে ডাকাতি হতে পারে, এ মর্মে দু’টি টুইট করেছিলেন ট্রাম্প। সে দু’টিকেই পাখির চোখ করে সংস্থাটি। দু’টিরই নীচে একটি লিঙ্ক পোস্ট করে তারা। তাতে লেখা, ‘গেট দ্য ফ্যাক্টস অ্যাবাউট মেল-ইন ব্যালটস।’ মজার কথা, ওই লিঙ্কে ক্লিক করলেই ‘মোমেন্টস’ বলে একটি পেজ খুলছে যেখানে ট্রাম্পের এমনই একাধিক যাচাই না করা পোস্ট ও খবর রয়েছে।
সব মিলিয়ে শুরু হয়ে যায় হইচই। এর আরও একটি কারণ রয়েছে। বহু দিন ধরেই তাদের নিয়ম প্রেসিডেন্টের উপর বলবৎ করতে চাপ দেওয়া হচ্ছিল টুইটারকে। কিন্তু তারা তা মানতে রাজি হয়নি। মঙ্গলবারের পর তাই সকলেরই মনে নানা প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: চিন নিয়ে মেজাজ খারাপ মোদীর, দাবি ট্রাম্পের, এপ্রিলের পর কথাই হয়নি দু’জনের, বলল ভারত