দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ তিন দেশ ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ব্রুনেই। এই তিনটি দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনে উদ্যোগ গ্রহণের আগ্রহের কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। আজ বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত সাগি কারনি এক সাক্ষাৎকারে এই আগ্রহের কথা জানান।
উক্ত তিনটি দেশই মে মাসে গাজায় চালানো ইসরায়েলি হামলার কড়া সমালোচনা করেছিল। হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার ১১ দিনের সংঘর্ষে গাজায় ২৫০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন যাদের মধ্যে বেশ কিছু শিশুও রয়েছে। আর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হন ১৩ জন।
আরও পড়ুন : ভারতে হাজির গ্রিন ফাঙ্গাস! সংক্রমণ থেকে সতর্ক থাকতে জানুন…
গত মাসে ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডে ১১ দিনের ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই তিনটি মুসলিম দেশ। ওই হামলায় ফিলিস্তিনি পক্ষে শিশুসহ আড়াই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছিলেন। আর হামাসের পাল্টা রকেট হামলায় ইসরায়েলের প্রাণ গেছে ১৩ জনের। এই হামলার ঘটনাকে ‘ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর আগ্রাসন’ উল্লেখ করে তা বন্ধে জাতিসংঘের আশু হস্তক্ষেপ দাবি করেছিল ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ব্রুনেই।
ইসরায়েলের সঙ্গে এই তিন দেশের আনুষ্ঠানিক কোনো সম্পর্ক নেই। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল বিরোধ নিরসনে ঐতিহাসিকভাবে ‘দুই রাষ্ট্রভিত্তিক’ সমাধানের ধারণা সমর্থন করে এসব দেশ। এই তিন দেশের সমালোচনার জবাবে সাগি কারনি বলেন, মুসলিমপ্রধান এই তিন দেশের নেতারা সংঘাতের প্রকৃত ধরন উপলব্ধি করতে পারেননি। এটা ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার সংঘাত। ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে নয়।
ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ব্রুনেই কারোর সঙ্গেই ইসরায়েলের কোনো আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক নেই। এরা প্রত্যেকেই ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে।
সিঙ্গাপুরে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত সাগি কার্নি বলেছেন, এই তিনটি দেশের নেতাদের সমালোচনা ‘সৎ ছিল না’ এবং তারা ‘সংঘর্ষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য’ এড়িয়ে গেছেন। তিনি বলেন, এই সংঘর্ষ ছিল ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে নয়।
তিনি বলেন, ‘হামাস একটি ইহুদিবিদ্বেষী একটি সংগঠন। আমি নিশ্চিত না যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যারা তর্কে অংশ নিচ্ছেন তারা আসলেই হামাসের চরমপন্থী ও ফ্যাসিস্ট আচরণ সম্পর্কে বোঝেন কিনা।’হামাস অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে ইহুদিবিদ্বেষের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
তিন মুসলিম দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনের আগ্রহের কথা জানিয়ে সাগি কারনি আরও বলেন, ‘আমরা (ইসরায়েল) আলোচনার জন্য সব সময় প্রস্তুত। দরজা উন্মুক্ত আছে। আমি মনে করি না, সুসম্পর্ক স্থাপনের পথ খুব একটা কঠিন হবে।’
আরও পড়ুন : নতুন পাসপোর্টে জেরুজালেমকে ‘অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চল’ লিখল যুক্তরাজ্য