আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্প। ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা ২০০০ ছাড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের সকল দেশের কাছে সাহায্যের আবেদন জানান তালেবান প্রশাসন। শনিবার পশ্চিম আফগানিস্তানে ৬.৩ মাত্রার একজোড়া ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল হেরাট শহরের ৪০ কিলোমিটার (২৪.৮ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে। এর পরে ৫.৫ মাত্রার একটি আফটারশক অনুভূত হয়েছে বলেই জানিয়েছে ইউএসজিএস।
হেরাট প্রদেশের অন্তত ১২টি গ্রাম ভূমিকম্পে পুরো মাটিতে মিশে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, এলাকাটি এতটাই দুর্গম যে, ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজ চালানোই অত্যন্ত কঠিন। ধ্বংসাবশেষের নীচে এখনও অনেক দেহ চাপা পড়ে আছে বলে মনে করছেন উদ্ধারকারীরা
রবিবার, তালিবান সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের মুখপাত্র আবদুল ওয়াহিদ রায়ান, এই ভূমিকম্পকে আফগানিস্তানে গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্প বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জরুরি সাহায্যের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিসের এক আপডেটে বলা হয়েছে, অন্তত ৪৬৫টি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আরও ১৩৫টি বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।এদিকে, এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম হওয়ায় সব জায়গায় সাহায্যও পৌঁছয়নি।
২০২২ সালের জুনে, এমনই এক শক্তিশালী ভূমিকম্পে পূর্ব আফগানিস্তানের একটি রুক্ষ, পার্বত্য অঞ্চলে, পাথর এবং কাদা-ইটের বাড়িগুলো ভেঙে পড়েছিল। ভূমিকম্পটি দুই দশকের মধ্যে আফগানিস্তানের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। সেই ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১,০০০ মানুষ মারা গিয়েছেন। আহত হয়েছেন ১,৫০০ জনেরও বেশি।
হেরাটে টেলিফোন সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি থেকে বিস্তারিত তথ্য পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, হেরাত শহরে শয়ে শয়ে মানুষ তাদের বাড়ি এবং অফিসের বাইরে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে, স্থানীয় সংস্থাগুলিকে যত দ্রুত সম্ভব ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে পৌঁছনোর নির্দেশ দিয়েছে তালিবান সরকার। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, গৃহহীনদের আশ্রয়ের বন্দোবস্ত করতে এবং তাদের খাবার ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে। ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে তাদের সমস্ত সম্পদ ও সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ধনী নাগরিকদের কাছ থেকে সহায়তা চেয়েছে তালিবানরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তালিবান সরকার বলেছে, “আমাদের ধনী নাগরিকদের বলছি, আমাদের দুর্দশাগ্রস্ত ভাইদের সম্ভাব্য যে কোনও সহযোগিতা করুন।”