সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গদি হারালেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি (KP Sharma Oli)। আস্থা ভোটে হেরেও ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। বিরোধীরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ব্যর্থ হওয়ায় কেপি শর্মা ওলিকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে ছিলেন নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারী। সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নেপাল কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট শের বাহাদুর দেউবাকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারীকে।
আস্থাভোটের পর ২২মে ওলির কথা শুনে ২৭৫ সদস্যের নিম্নকক্ষ ভেঙে দিয়েছিলেন বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারী। এরপর রাষ্ট্রপতির এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে একাধিক হলফনামা জমা পড়ে। নেপালের কংগ্রেস জোটের হলফনামা-সহ মোট ৩০টি হলফনামা জমা পড়ে শীর্ষ আদালতে। তার ভিত্তিতেই কেপি শর্মা ওলিকে সরিয়ে সেখানে নেপালের কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট শের বাহাদুর দেউবাকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
নেপালের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি চোলেন্দ্র সামসের রানার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ গত সপ্তাহেই বিরোধীদের আবেদনের শুনানি শেষ করেন। অবশেষে সোমবার রায় ঘোষণা করলেন বিচারপতিরা। রাষ্ট্রপতি বিদ্যাদেবী ভান্ডারিকে দু’দিনের মধ্যে নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই আদালতের এই নির্দেশে নাখুশ নেপালে প্রাক্তন ক্ষমতাসীন দল CPN-UML। নেপালের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী তথা CPN-UML-এর মুখপাত্র প্রদীপ গয়াওয়ালি বলেন, “ভ্রান্ত রায়। তবে এ রায় মানতে আমরা বাধ্য।”
আরও পড়ুন: মহাশূন্যে হাঁটলেন চীনের দুই মহাকাশচারী
গোড়া থেকেই চিনপন্থী হিসেবে পরিচিত নেপালের সদ্যপ্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। তাঁর আমলে ভারতের সঙ্গে নেপালের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল। সীমান্ত নিয়ে ভারতের সঙ্গে যেমন বিবাদে জড়িয়েছেন ওলি। একের পর এক ভিত্তিহীন মন্তব্য করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলেছেন তিনি। এককালের বন্ধু পুষ্পকমল দাহালের সঙ্গেও সম্পর্কে চিড় ধরে ওলির। ফলে দু’ভাগে ভাগ হয়ে যায় নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি। কিন্তু নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ঐতিহাসিক ভাবে ঘনিষ্ঠ। ফলে মসনদে শেরবাহাদুর দেউবা বসলে আপাতত অনেকটাই স্বস্তি পাবে নয়াদিল্লি।
দেউবাকে প্রধানমন্ত্রী করতে চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে ১৪৯ জন সাংসদের একটি পিটিশন পাঠানো হয়েছিল। সেখানে নেপাল কংগ্রেসের নেতা দেউবাকেই সমর্থন করেছিলেন অধিকাংশ সাংসদ। সেই পিটিশন খারিজ করে ওলিকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ চালাতে নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপতি। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সাংসদেরা। এদিন রাষ্ট্রপতির সেই নির্দেশ খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন: Dhaka Fire: ফলের রসের বহুতল কারখানায় আগুন, মৃত ৫২, নিখোঁজ বহু