Site icon The News Nest

রক্তপাত চাই না, কাবুলে ঢুকেই জানাল তালিবান, মেয়েদের নিরাপদ স্থানে রাখার বার্তা

taliban kabul

ছন্নছাড়া সেনাবাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ করে ফের তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি৷ কিন্তু তালিবানের প্রতিঘাতের মুখে কোনও লড়াই টিকল না৷ শেষ পর্যন্ত রাজধানী কাবুলেও ঢুকে পড়ল তালিবানরা৷ পতনের মুখে আফগান সরকার৷

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে ঢুকতে শুরু করেছে তালিবান। কাবুলে প্রবেশ করে অবশ্য যোদ্ধাদের হিংসা এড়ানোর নির্দেশ দিল তালিবান। জোর করে নয়, বরং আলোচনার মাধ্যমে কাবুলের দখল নেওয়ার বার্তা দিয়েছে তালিবান।

রয়টার্স জানিয়েছে, তালিবান যোদ্ধাদের নির্দেশ দিয়েছে কাবুলে প্রবেশ করে সংঘর্ষ এড়াতে। যাঁরা কাবুল ছেড়ে বেরিয়ে যেতে চান তাঁদের যাতে নিরাপদে শহর ছাড়তে দেওয়া হয় সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মহিলাদের অনুরোধ করা হয়েছে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার জন্য। যদিও ইতিমধ্যেই কাবুলের কিছু জায়গায় গুলির শব্দ শোনা গিয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি।

আল জাজিরা সূত্রে খবর, একটি বিবৃতিতে তালিবানের তরফে জানানো হয়েছে, ‘আফগান সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। কারও প্রাণ ও সম্মানহানি ছাড়া যাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।’ আরও একটি বিবৃতিতে তালিবান জানিয়েছে, কারও সম্পত্তি দখল করা হবে না। কোনও প্রতিষ্ঠান ভাঙা হবে না বলেও জানিয়েছে তারা। এই বিবৃতির পরেও কাবুলের সব অফিস খালি করতে শুরু করেছেন কর্মচারীরা। সবাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন।

পতনের মুখে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল। চারিদিক থেকে পিলপিল করে তালিবান যোদ্ধারা ঢুকতে শুরু করেছে। আগে থেকেই সেখানে সমস্ত দফতর খালি করে দিয়েছে আশরফ গনি সরকার। হেলিকপ্টার পাঠিয়ে আমেরিকা-সহ অন্যান্য দেশও নিজেদের দূতাবাস খালি করে নিয়েছে। প্রাণভয়ে কাবুল ছেড়েছেন বহু মানুষ। জালালাবাদের মতো কাবুলও বিনাযুদ্ধে তালিবানের হাতে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কূটনীতিবিদরা।

রবিবারই মাজার-ই-শরিফ ও জালালাবাদের মতো দু’টি গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করে ফেলেছিল তালিবানরা। তখনই বোঝা গিয়েছিল সম্ভবত আজই কাবুলে ঢুকে পড়বে তালিবানরা। সেই আশঙ্কা সত্যি করেই কাবুলে প্রবেশ করল তালিবান।

গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ১৮টি তাদের হাতে ছিল। কিন্তু এর পর কার্যত ঝড়ের গতিতে এগোতে শুরু করে তালিবান। একে একে হেরাট, আয়বাক, গজনি, কন্দহর, তালিকান, কুন্দুজ দখল করে তারা। উত্তর দিক থেকে কাবুলের প্রবেশ পথ মাজার-ই-শরিফও একদিনেই দখল করে নেয় তালিবান। তার পর রবিবার সকালে দক্ষিণের জালালাবাদ দখল করে তারা। রবিবার সকাল পর্যন্ত মোট ২৬টি প্রদেশ তালিবানের দখলে ছিল।

আরও পড়ুন :  Independence Day: মাতঙ্গিনী হাজরা অসমের! লালকেল্লায় বেফাঁস Narendra Modi

গত কয়েকদিনেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল বিষয়টা। তালিবানের দখলদারির দাপটে শীঘ্রই যে কাবুলে উড়তে চলেছে জঙ্গিদের পতাকা তা এররকম নিশ্চিতই হয়ে গিয়েছিল। দেশের স্বার্থে তালিবানকে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল আফগান সরকার। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে কার্যত অসহায় আফগানিস্তানের (Afghanistan) প্রশাসন। কান্নাভেজা গলায় দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানি (Ashraf Ghani)।

গায়ের জোরে কাবুল দখল করা তাদের লক্ষ্য নয় বলে জানাল তালিবান। সংগঠনের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘‘দর কষাকষি চলছে, যাতে নিরাপদে এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর ঘটে। সাধারণ মানুষ যেন হিংসার বলি না হন, সে দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। কাবুলের মানুষের জীবন বিপন্ন হোক, তা একেবারেই চাই না আমরা।’’

সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক তালিবান মুখপাত্র জানিয়েছেন, যোদ্ধাদের কাবুলের বাইরে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। এখনই শহরে ঢুকতে বারণ করা হয়েছে সকলকে। যদিও স্থানীয়দের দাবি বিনা বাধায় যোদ্ধারা ঢুকে আসছেন রাজধানীতে।

হিংসা এড়াতে যোদ্ধাদের নিষেধ করল তালিবান। যে বা যাঁরা কাবুল ছেড়ে চলে যেতে ইচ্ছুক, তাঁদের নিরাপদে বেরিয়ে যেতে দেওয়ার নির্দেশ। মহিলাদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বলা হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন এক তালিবান নেতা।

আরও পড়ুন : Independence Day: ভারত ছাড়াও বিশ্বের পাঁচ দেশে ১৫ আগস্ট পালিত হয় স্বাধীনতা দিবস

Exit mobile version