Site icon The News Nest

Solar Storm: আসছে ভয়ঙ্কর সৌরঝড়, ভেঙে পড়তে পারে বিশ্বের ইন্টারনেট যোগাযোগ

solar storm

ভয়ঙ্কর সৌরঝড় (‘সোলার স্টর্ম’) আসছে। যার ফলে ভেঙে পড়তে পারে গোটা বিশ্বের যাবতীয় ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা। আর তা বেশ কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসও স্থায়ী হতে পারে। এই ধরনের সৌরঝড়কে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়, ‘করোনাল মাস ইজেকশান (সিএমই)’। যা গোটা সৌরমণ্ডলের পক্ষেই হয়ে ওঠে অত্যন্ত বিপজ্জনক। আমেরিকার আরভিনে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই অশনিসঙ্কেত দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি পিয়ার রিভিউ পর্যায় পেরিয়ে একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকায় প্রকাশের অপেক্ষায়। মঙ্গলবার অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি।

সৌর ঝড় কী?

NASA-র রিপোর্ট অনুযায়ী, সূর্যপৃষ্ঠ থেকে নানা ধরণের অগ্ন্যুৎপাত ও শক্তি অহরহ নির্গত হয়। এই অগ্ন্যুৎপাত ও শক্তির সমন্বয়ে সৌর ঝড় তৈরি হয়। এর মধ্যে থাকে ফ্লেয়ার (Flares), প্রমিনেন্স (Prominence), সানস্পট (Sunspots) এবং করোনাল মাস ইজেকশন (Coronal Mass Ejections) বা সিএমই (CME)। এগুলির মধ্যে সঞ্চিত চৌম্বকশক্তি সূর্যের গরম গ্যাসকে সক্রিয় করে। কখনও কখনও সৌর ঝড় পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রর দিকে চলে আসে এবং ধাক্কা খায়। সেই সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঘর্ষণের ফলে আকাশে অদ্ভুত আলোর সৃষ্টি করে।

সৌর ঝড় কতটা বিপজ্জনক?

সৌর ঝড়ের মধ্যে অবস্থিত শক্তি নিজের একটি চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে। যা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করতে পারে। একটি সৌর ঝড় স্যাটেলাইট, টেলি-যোগাযোগ এবং নেভিগেশন সিস্টেমকে ব্যাহত করতে পারে। পাওয়ার গ্রিড ধংস করতে পারে, নির্দিষ্ট কোনও অঞ্চলে অন্ধকার বা ব্ল্যাকআউটের কারণ হতে পারে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of California) ভারতীয় বিজ্ঞানী সঙ্গীতা আবদু জ্যোতি (Sangeetha Abdu Jyothi), সৌর ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বলেছেন, স্যাটেলাইট ও ফাইবার-অপটিক কেবল সিস্টেমের ক্ষতি হতে পারে। এর ফলে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ হতে পারে। এমনকী, বিশ্বের উন্নত দেশগুলির একে অপরের সঙ্গে যোগাযাগ বিছিন্ন হতে পারে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, এ বার যে সৌরঝড় আসছে তেমন ভয়ঙ্কর সৌরঝড়ের ঝাপ্‌টা আধুনিক পৃথিবীকে এর আগে সইতে হয়েছিল ১৮৫৯ আর ১৯২১ সালে। সে ক্ষেত্রে বলা যায়, ১০০ বছর পর ফের ভয়ঙ্কর সৌরঝড়ের মুখোমুখি হতে চলেছে পৃথিবী। ১৯২১ সালে ভয়ঙ্কর সৌরঝড় আছড়ে পড়ায় পৃথিবীর যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল তা অভূতপূর্ব। বিজ্ঞানের পরিভাষায় তার নাম ‘ক্যারিংটন এফেক্ট’। সেই সৌরঝড়ের ঝাপ্‌টায় পৃথিবীকে ঘিরে থাকা বিশাল চৌম্বক ক্ষেত্রে বড় বড় ফাটল ধরেছিল। আর তার ফাঁক গলে ঢুকেছিল অত্যন্ত বিষাক্ত সৌরকণা আর মহাজাগতিক রশ্মি। টেলিগ্রাফের তার সশব্দে ফেটে গিয়ে দাউদাউ করে জ্বলেছিল দীর্ঘ সময় ধরে। যে মেরুজ্যোতি (‘অরোরা’) শুধু পৃথিবীর দুই মেরুতেই দেখা যায় সাধারণত, সৌরঝড়ের প্রবল ঝাপ্‌টায় সে বার তা বিষুবরেখার নীচে থাকা কলাম্বিয়াতেও দেখা গিয়েছিল। খুব উজ্জ্বল ভাবে।

গবেষকরা লিখেছেন, “এমন ভয়ঙ্কর সৌরঝড় বা সিএমই-র পৃথিবীর উপর আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রতি দশকে থাকে ১.৬ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ। এ বার তেমনই একটি সিএমই-র ঝাপ্‌টা সইতে হতে পারে পৃথিবীকে। যার সম্ভাবনা খুব বেশি।” ১৮৫৯ এবং ১৯২১ সালের মতো তীব্রতায় অতটা না হলেও ১৯৮৯ সালের মার্চে যে সিএমই ধেয়ে এসেছিল পৃথিবীর দিকে তার ঝাপ্‌টায় কানাডার গোটা কুইবেক প্রদেশে টানা ন’ঘণ্টা ‘ব্ল্যাক আউট’ হয়ে গিয়েছিল।

সৌর ঝড় মানুষের জন্য কতটা বিপজ্জনক?

সৌভাগ্যবশত, সৌর ঝড় মানুষের প্রাণের জন্য ততটা বিপজ্জনক নয়, তবে সেটা পৃথিবীতে বাস করলে। কারণ, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল মানুষের জন্য নিরাপদ। সূর্য থেকে আসা ক্ষতিকারক রশ্মি শোষণ করতে সক্ষম পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল। মহাকাশে এর বড় প্রভাব পড়তে পারে, যদি মহাকাশচারীরা সৌর ঝড়ে পড়েন তাহলে মারাত্মক কিছুর সম্ভাবনা থাকে।

Exit mobile version