Site icon The News Nest

জিয়া খান মৃত্যু-রহস্য! আত্মহত্যা নাকি হত্যা- সন্দেহের ১০ কারণ

The News Nest: ২০১৩-র পর ২০২০। জিয়া খান আর সুশান্ত সিংহ রাজপুত। দু’জনের একই সমাপতন। ঘটনায় সামান্য হেরফের রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ এক, মানসিক চাপ, স্বজনপোষণ এবং কোণঠাসা করে আত্মহননের পথে ঠেলে দেওয়া। সুশান্তের শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে মেয়ে হারানোর সেই স্মৃতি ফের সামনে আনলেন জিয়া খানের মা রাবিয়া আমিন।

২০১৩-য় জিয়া খানের আত্মহত্যা আদিত্য পাঞ্চোলির ছেলে সুরজ পাঞ্চোলিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল। সেই সময়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, সুরজের সন্তান এসেছিল জিয়ার গর্ভে। তাই নিয়ে নিত্য অশান্তি। সুরজ ক্রমাগত গর্ভপাতের জন্য চাপ দিতেন জিয়াকে। যা অভিনেত্রীর না পসন্দ্ ছিল। এ ছাড়াও, ফি-দিন মারধর, অত্যাচার, অকথ্য গালিগালাজ তো ছিলই। এমনও রটেছিল, অপটু ধাত্রী দিয়ে নাকি জোর করে গর্ভপাত করিয়ে ভ্রূণ ওয়াশরুমের কমোডে ফেলে দিয়েছিলেন সূরজ। যার থেকে তীব্র রক্তক্ষরণ হয়েছিল জিয়ার। শেষে বন্ধ ঘরে নিজেকে শেষ করে দেন অভিনেত্রী।

যদিও জিয়ার মায়ের দাবি তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করেনি, বরং তাঁকে মেরে ফেলা হয়েছে। নিজের দাবির স্বপক্ষে ১০ টি যুক্তি দিয়েছিলেন তিনি – প্রথমত, কেউ গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করলে সাধারণত তার জিহ্বা বের হয়ে আসে। কিন্তু জিয়ার ক্ষেত্রে তেমনটা ঘটেনি। দ্বিতীয়ত, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করলে মৃত ব্যক্তির গলায় যে ধরনের দাগ দেখা যায়, জিয়ার গলায় সে ধরনের দাগ দেখা যায়নি। তৃতীয়ত, জিয়ার গলায় যে দাগ দেখা গেছে তা কোনোভাবেই ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যাকারীর গলার দাগের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।

আরও পড়ুন: Nepotism বিতর্ক: করণ জোহরের সমর্থনে এগিয়ে এলেন রাম গোপাল বর্মা

চতুর্থ কারণ হিসেবে রাবেয়া উল্লেখ করেছেন, মৃত্যুর পর জিয়ার ঠোঁটের ডান পাশে এবং বাম হাতের কবজিতে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এটা দেখে মনে হয়েছে, কেউ তাঁকে শক্ত করে জাপটে ধরেছিল। পরের কারণটি আরও ভয়াবহ। যে ঘর থেকে জিয়ার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তার পাশের ঘরে জমাট বাঁধা রক্ত খুঁজে পেয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন রাবেয়া। ওই জমাট বাঁধা রক্ত সংরক্ষণ করে রেখেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ষষ্ঠ কারণ হিসেবে রাবেয়া উল্লেখ করেছেন, গলায় পাতলা মসলিন কাপড়ের ওড়না পেঁচিয়ে জিয়া আত্মহত্যা করেছেন বলা হলেও, তাঁর গলার দাগের গভীরতা অনেক বেশি। মসলিন কাপড়ের মতো পাতলা কোনো বস্তু কোনোভাবেই এমন গভীর দাগ সৃষ্টি করতে পারে না। রাবেয়া আরও দাবি করেছেন, টুল বা চৌকির ওপর না দাঁড়িয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস লাগানো সম্ভব নয়। কিন্তু সিলিং ফ্যান ছোঁয়ার জন্য দাঁড়ানোর মতো উঁচু কোনো বস্তুই নেই তাঁদের বাসায়।

অষ্টম কারণ হিসেবে রাবেয়া জানান, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, মৃত্যুর কয়েক মিনিট আগে বাসায় ঢোকার সময় জিয়ার পরনে ছিল ট্র্যাকস্যুট। কিন্তু রাতের পোশাক পরা অবস্থায় তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আত্মহত্যা করার আগ মুহূর্তে কেউ পোশাক পরিবর্তন করবে, এটা কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। সব শেষে রাবেয়া উল্লেখ করেছেন, অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের দ্বিতীয় তলায় তাঁদের ফ্ল্যাট। হত্যাকারীরা বেডরুমের জানালা দিয়ে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে থাকতে পারে। কারণ, অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের প্রবেশপথের ওপরই একটি কার্নিশ আছে। সেই কার্নিশ বেয়ে খুব সহজেই জানালা দিয়ে ঘরের ভেতর প্রবেশ করা সম্ভব।

রাবেয়া আরও দাবি করেছেন, তিনি জিয়ার মৃত্যুর সব তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। কিন্তু সেসব প্রমান যাচাইয়ে কোনো রকম গুরুত্বই দেওয়া হয়নি। জিয়া খানের মৃত্যুর পর সুরজ পাঞ্চোলির বিরুদ্ধে কেস করা হয়েছিল। সিবিআই তদন্ত হয়েছিল। জিয়ার আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় সুরজকে গ্রেপ্তার করে মুম্বাই পুলিশ। কিছুদিন জেলের চার দেয়ালে বন্দী থাকার পর জামিনে মুক্তি পান বলিউডের প্রভাবশালী ও বিতর্কিত অভিনেতা আদিত্য পাঞ্চোলির ছেলে সুরজ।

আরও পড়ুন: ‘কথা বলুন, সাহায্য চান,অন্ধকারের শেষে আলো আছে….’, সুশান্ত সিং রাজপুতের স্মরণে লিখলেন দীপিকা

Exit mobile version